প্রমাণ হয়েছে আমি ষড়যন্ত্রের শিকার : আবুল হোসেন
সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেন বলেছেন, পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংক যে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিল, কানাডার আদালত এ ধরনের কোনো প্রমাণ না পাওয়ার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে, এটা শুধু ‘মিথ্যা নয়, ষড়যন্ত্রমূলক’ ছিল।
আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশস্থ তৎকালীন বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি গোল্ড স্টেইন এবং বাংলাদেশের কতিপয় পত্রিকার অসত্য রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে, বিশ্বব্যাংক যে কাল্পনিক অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে দাঁড় করেছিল- তা ছিল শুধু মিথ্যা নয়, ষড়যন্ত্রমূলক। আমি বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশি কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি।’
স্থানীয় সময় শুক্রবার কানাডার অন্টারিও প্রদেশের একটি আদালতের বিচারক ইয়ান নর্ডহেইমার দেশটির নির্মাণ প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিন গ্রুপের তিন কর্মকর্তাকে পদ্মা সেতু দুর্নীতি মামলা থেকে খালাস দিয়েছেন।
এরপরই আজ শনিবার সাবেক যোগাযোগমন্ত্রীর আবুল হোসেনের পক্ষ থেকে এই বিবৃতি এলো। পদ্মা সেতু ‘কেলেঙ্কারির’ জের ধরে ২০১১ সালের ২৯ নভেম্বর তাঁকে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সে সময় তাঁকে পাঠানো হয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে। পরে আট মাসের মাথায় ২০১২ সালের ২৩ জুলাই মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।
দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করা আবুল হোসেন দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেরও টিকেট পাননি। মাদারীপুর-৩ আসনের সাবেক এ সংসদ সদস্য দলেরও পদ হারান।
এ মামলার রায়ের পর আবুল হোসেন বলেন, ‘আমার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সাঁকোকে মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে জড়ানো হয়েছে, পরামর্শক নিয়োগে ৩৭ মিলিয়ন ডলার দর প্রস্তাবের ৩৫ মিলিয়ন ডলার ঘুষ লেন-দেনের অভিযোগ করা হয়েছে- টক শোতে এই বিষয় নিয়ে বিশিষ্টজনরা রাতের ঘুম হারাম করে আলোচনায় অংশ নেন- তা ছিল মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যমূলক।
‘বাংলাদেশে এসে বিশ্বব্যাংকের আইন উপদেষ্টা ওকাম্পো যে আইনবিরোধি লম্প-জম্প দেখালেন, সরকার, পদ্মা সেতু এবং আমার বিরুদ্ধে যে মিথ্যাচার করলেন- তা ষড়যন্ত্রের ইতিহাসে কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত থাকবে।’
আবুল হোসেন সেই সময়ের একটি ঘটনার উল্লেখ করে বলেন, “বিশ্বব্যাংকের তৎকালীন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আমার চীনের এক আন্তর্জাতিক ফোরামে সাক্ষাৎ হয়। তিনি তখন বলেছিলেন, ‘আমি বুঝতে পারছি- পদ্মা সেতু ও আপনি ষড়যন্ত্রের শিকার। বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তারা বাংলাদেশের গণমাধ্যম ও বিশিষ্ট কতিপয় লোকের কথায় প্রভাবিত হয়েছেন। এ জন্য আমি অনুতপ্ত।’”
‘আজ কানাডার আদালতের মাধ্যমে আমার সততা উচ্চকিত হলো। আমি নির্দোষ প্রমাণিত হলাম’ উল্লেখ করে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী আরো বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগে আমাকে অভিযুক্ত করা হলো, আমার মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হলো- তাদের আজকের জবাব কী? পদত্যাগের পরও বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন না করা প্রমাণ করে বিশ্বব্যাংক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে কাজ করেছে।’