‘সানির ফোন নম্বর দিয়ে নাসরিনের নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়’
ক্রিকেটার সানি তাঁর ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন নম্বর ব্যবহার করে নাসরিন সুলতানার নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আজ বুধবার সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ও নাসরিনের আইনজীবী মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম শামীম এ বিষয়ে আদালতকে বলেন।
পিপি জানান, এরপর সেই অ্যাকাউন্ট থেকে নাসরিনের নিজস্ব ফেসবুক অ্যাকাউন্টে আপত্তিকর ছবি দেওয়া হয়।
সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাইফুল ইসলামের আদালতে পিপি শামীম বলেন, ‘নাসরিন তাঁর (সানি) স্ত্রী হলেও ফেসবুকে এভাবে আপত্তিকর ছবি পাঠিয়ে তথ্য ও প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় অপরাধ করেছেন। এ ছাড়া সানির আইফোনটি পুলিশ জব্দ করেছে, যা এখন সিআইডির (অপরাধ তদন্ত বিভাগ) ফরেনসিক বিভাগে যাচাই-বাছাই চলছে।’
শামীম আরো বলেন, ‘যেহেতু প্রতিবেদনটি এখনো আমাদের হাতে আসেনি, তাই সানির জামিনের ঘোর বিরোধিতা করছি।’
এদিকে আজ জামিন শুনানির সময় নাসরিন বিচারকের উদ্দেশে কিছু বলতে চান। তবে আইনজীবীরা তাঁকে কথা বলতে নিষেধ করেন।
অপরদিকে, ক্রিকেটার সানির পক্ষে ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি কাজী নজিবুল্লাহ হিরু ও এম জুয়েল আহম্মেদ শুনানি করে বলেন, সানি কোনো ধরনের ছবি পোস্ট করেননি। তাঁকে মিথ্যা ঘটনা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে।
এদিকে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইয়াহহিয়া খান এনটিভি অনলাইনকে জানান, সানির মোবাইল ফোন নম্বর থেকে নাসরিনের ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট করা হয়েছে কি না তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য সানির মোবাইল জব্দ করা হয়েছে। এটা সিআইডির ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে। তিনি জানান, ওই প্রতিবেদন পেলেই জানা যাবে সানি আসলে জড়িত কি না। তবে খুব দ্রুত সময়ে ওই প্রতিবেদন হাতে পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
গত ২২ জানুয়ারি ঢাকার আমিনবাজার এলাকা থেকে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে নাসরিন সুলতানার প্রথম মামলায় আরাফাত সানিকে গ্রেপ্তার করে মোহাম্মদপুর থানার পুলিশ। পরে ঢাকার মহানগর হাকিম প্রণব কুমার হুই তাঁকে একদিনের রিমান্ডে পাঠান। এর পর থেকেই সানি কারাগারে রয়েছেন।
মামলার নথিতে দাবি করা হয়, ২০১৪ সালের ১২ ডিসেম্বর ক্রিকেটার আরাফাত সানির সঙ্গে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে নাসরিন সুলতানার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তাঁরা দুজন ভাড়া বাসায় সংসার শুরু করেন। সংসার চলার সময় ছয় মাস পর ক্রিকেটার আরাফাত সানি তাঁর মায়ের পরামর্শে নাসরিনের কাছে ২০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। যৌতুকের টাকার জন্য সানি তাঁর স্ত্রীকে মারধর ও গালিগালাজ করে ভাড়া বাসায় ফেলে যান।
নথিতে আরো উল্লেখ করা যায়, ২০১৬ সালের ১২ জুন বাদী নাসরিন সুলতানা বাসা ভাড়াসহ যাবতীয় ভরণপোষণ না পেয়ে নিরুপায় হয়ে সংসার করতে স্বামী সানির সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় সানি যৌতুকের ২০ লাখ টাকা দাবি করে নাসরিনকে বলেন, ‘যৌতুকের টাকা না দিলে আমার মা তোমার সঙ্গে সংসার করতে দেবেন না এবং এ নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোমার পরিণতি অনেক খারাপ হবে। কারণ তোমার কিছু অশ্লীল ছবি আমার মোবাইল ফোনে রয়েছে।’ এরপর বাদীকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে সানির মা তাঁদের বাড়ি থেকে বের করে দেন। তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, ‘তোর সঙ্গে আমার ছেলে সংসার করবে না। তাই সম্পর্ক ছিন্ন করার ব্যবস্থা কর।’ এরপর বাদী তাঁর বাসায় চলে যান।