প্রতিক্রিয়া
‘বদরুল উচিত শিক্ষাই পেয়েছে’
‘বদরুল উচিত শিক্ষাই পেয়েছে। তার প্রাপ্য সে পেয়েছে। অনেকেই বলেছিল বদরুলের সাজা হবে না, কেননা সে ছাত্রলীগ করে, কিন্তু তা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। প্রমাণিত হয়েছে বাংলাদেশের আইন সবার জন্য সমান।’ কথাগুলো বলছিলেন ইমরান কবির। এই ইমরানই ক্ষতবিক্ষত আহত খাদিজা আক্তার নার্গিসকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
আজ বুধবার সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আকবর হোসেন মৃধা সিলেটে কলেজছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিস হত্যাচেষ্টার মামলায় একমাত্র আসামি বদরুল আলমের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে তাঁকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সাজা ঘোষণার পর উদ্ধারকারী ইমরান বলেন, ‘আমি আশা করি খাদিজা আপু আবার কলেজে ফিরে যাক। পড়াশোনা করুক। ভবিষ্যৎ গড়ুক। বদরুলের শাস্তি একটি দৃষ্টান্ত। এর মাধ্যমে বদরুলের মতো অনেকে এটা ভেবে ভয় পাবে এবং এ ধরনের ন্যক্কারজনক কর্মকাণ্ড থেকে দূরে থাকবে।’
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র ইমরান। তাঁর মতো বাংলাদেশের সবাই চান খাদিজা আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুক। গত বছরের ৩ অক্টোবর এমসি কলেজের পুকুরপাড়ে সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিসকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক বদরুল আলম। ঘটনার পর পরই শিক্ষার্থীরা বদরুলকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
হামলার ঘটনায় খাদিজার চাচা আবদুল কুদ্দুস বাদী হয়ে বদরুলকে একমাত্র আসামি করে মামলা করেন। এ মামলায় গত বছরের ৫ অক্টোবর বদরুল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠান আদালত।
ঘটনার পর শাবি ও ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয় বদরুলকে। আর তাঁর কোপে আহত খাদিজা ঢাকার স্কয়ার হাসপাতাল এবং সাভারে অবস্থিত পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে (সিআরপি) দীর্ঘদিন চিকিৎসা নেন। সম্প্রতি সেখান থেকে বাড়ি ফেরেন তিনি।
আজ নারী দিবস। এমন একটি দিনে একজন নারী সুবিচার পেয়েছেন, এটাই অনেক আনন্দের।
লেখক : সাংবাদিক