সিএমপিতে বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে এসআই হত্যার অভিযোগ বোনের
অব্যাহতি পাওয়া পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে উপপরিদর্শক (এসআই) আকরাম হোসেন হত্যার অভিযোগ করেছেন তাঁর বোন জান্নাত আরা পারভিন।
আজ বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. কামরুজ্জামানের কাছে এ অভিযোগ তুলে ধরেন জান্নাত আরা।
বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলা তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এডিসি কামরুজ্জামান। প্রয়াত এসআইয়ের বোন জিন্নাত আরা ঝিনাইদহ থেকে সিএমপি কার্যালয়ে এসে বাবুলের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ করেন। এজন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তদন্ত কর্মকর্তার কাছে জমা দেন তিনি।
প্রয়াত আকরামের স্ত্রীর সঙ্গে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততার অভিযোগ করেন জিন্নাত আরা।
এডিসি কামরুজ্জামান বলেন, আকরামের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ত আছে কি না তদন্তে বের হয়ে আসবে।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি এসআই আকরামকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ করেন তাঁর পাঁচ বোন। হত্যার সঙ্গে বাবুল আক্তার ও তাঁর কথিত প্রেমিকা বনানী বিনতে বশির বন্নি জড়িত বলেও তাঁরা অভিযোগ করেন। ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পাঁচ বোন। তাঁরা হলেন- জান্নাত আরা পারভীন, রেহেনা খাতুন, ফেরদেৌস আরা, সাহানাজ পারভীন রিপা ও শামীমা নাসরিন মুক্তি।
লিখিত বক্তব্যে জিন্নাত আরা বলেন, তাঁদের একমাত্র ভাই আকরাম ২০০১ সালে এসআই পদে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন। ২০০৬ সালের ১৩ জানুয়ারি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ভগবাননগর গ্রামের বনানী বিনতে বশির বন্নির সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। বিয়ের দেড় বছর পর তাদের ঘরে একটি মেয়েসন্তান জন্ম হয়। তিনি আরো অভিযোগ করেন, বিয়ের আগে থেকেই সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তার ও বন্নির মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিয়ের পরও সেই সম্পর্ক চলতে থাকে। এ নিয়ে আকরাম-বন্নির মধ্যে ঝগড়া হতো। ঘটনার কয়েক দিন আগে বন্নি ঢাকার বাসা ছেড়ে ঝিনাইদহের একটি ভাড়া বাসায় ওঠেন। ঘটনার দিন ২০১৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর ঢাকা থেকে যমুনা সেতু হয়ে এসআই আকরাম মোটরসাইকেল চড়ে ঝিনাইদহে আসার পথে বড়দা নামক স্থানে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন। তাঁর মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে ঝিনাইদহে ও পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত হওয়ার ১৭ দিন পর ২০১৫ সালের ১৩ জানুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর।
২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারি ঝিনাইদহের আদালতে রিনি বাদী হয়ে একটি পিটিশন মামলা করেন।
২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি মাগুরা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বন্নি দাবি করেছিলেন, এসআই আকরাম হোসেন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। এ সময় বাবুল আক্তারের বাবা সাবেক ওসি আবদুল ওয়াদুদ উপস্থিত ছিলেন।
গত বছরের ৫ জুন চট্টগ্রামে এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু নিহত হন। মোটরসাইকেলে করে আসা তিন দুর্বৃত্ত মাহমুদা খানম মিতুকে প্রথমে ছুরিকাঘাত ও পরে মাথায় গুলি করে হত্যা করে। সেদিন সকালে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ের দিকে যাওয়ার পর এ ঘটনা ঘটে। এ হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পুলিশ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বলেছেন, তাঁর মেয়ে হত্যার সঙ্গে বাবুল আক্তারের হাত থাকতে পারে।