রামপালের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন
বাগেরহাটের রামপাল থেকে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পটি সাতক্ষীরার অর্পণগাছিয়ায় সরিয়ে নেওয়ার বিক্ল্প প্রস্তাব দিয়েছেন সুন্দরবন রক্ষা কমিটির নেতারা। আর রামপালে করতে হলে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প করার প্রস্তাব দিয়েছেন তাঁরা।
আজ বুধবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ‘বিশ্ব পানি দিবস’ নিয়ে আয়োজিত আলোচনায় এ মত দেন কমিটির নেতারা। ‘পশুর নদী ও সুন্দরবনকে কয়লাদূষণের হাত থেকে রক্ষা করুন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি অবিলম্বে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিন’ শীর্ষক এ সভায় বিশেষজ্ঞরাও বক্তব্য দেন।
বাগেরহাটের রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে প্রকল্পের শুরু থেকেই। সেখানে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করায় ক্ষয়ক্ষতি খুবই কম হবে বলে দাবি করা হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে। কিন্তু দেশি-বিদেশি বিজ্ঞানীর মতামত ও নানা তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে তা সঠিক নয় বলে দাবি সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির নেতাদের।
তারপরও সরকার এই প্রকল্প বাস্তবায়নে অনড় আছে, যা নির্মাণ হলে সুন্দরবন মারাত্মক হুমকিতে পড়বে বলেই মনে করেন তাঁরা। তাই প্রকল্পটি রামপাল থেকে অন্তত ৩০ কিলোমিটার দূরে সরিয়ে নেওয়ার বিকল্প প্রস্তাব দিলেন নেতারা।
কমিটির সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক বদরুল ইমাম বলেন, ‘রামপাল কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল করা, তার পরিবর্তে সেখানে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র স্থাপন করা। রামপালের পরিবর্তে এ রকম একটি স্থান প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করা যায়, যা রামপাল থেকে ৩০ কিলোমিটার পূর্বে অর্পণগাছিয়া, যা বুড়িশ্বর নদীর পাশে অবস্থিত।’
‘সুন্দরবনের বাইরে দিয়ে অবস্থিত এই বুড়িশ্বর নদীটি কয়লা পরিবহনের পথ হতে পারে। ইআইএ সম্পাদনের মাধ্যমে এই স্থানটির সম্ভাব্যতা যাচাই করা যেতে পারে’ বলে মনে করেন বদরুল ইমাম।
রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে কী ক্ষতি হবে, তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সুন্দরবন রক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে তা বারবারই বলা হয়েছে কিন্তু সরকার তা আমলে নিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন নেতারা।
কমিটির আহ্বায়ক সুলতানা কামাল বলেন, ‘বিজ্ঞানভিত্তিক কোনো ব্যবস্থাপনা পাকাপোক্ত না করেই, আমরা বলব প্রায় জিদের বশেই সরকার এই কাজটা করে যাচ্ছে- এই রকম একটা অবস্থা।’
বিশিষ্ট কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ‘যতদিন পর্যন্ত এই প্রকল্প বাতিল না হয়, ততদিন পর্যন্ত আমরা সুন্দরবন রক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে বলব, সরকারের কানে কতটুকু গেল না গেল… আমরা অব্যাহতভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
সুন্দরবন রক্ষার স্বার্থে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প বাতিল করে, তাদের দেওয়া বিকল্প প্রস্তাব ভেবে দেখতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বানও জানান কমিটির নেতারা।