শিববাড়িতে সেনাবাহিনীর প্যারাকমান্ডো দল
সিলেটের শিববাড়িতে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে সেনাবাহিনীর আট সদস্যের একটি প্যারাকমান্ডো দল ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছেছে।
আজ শুক্রবার বিকেলে দলটি ঘটনাস্থলে যায়। এর আগে অভিযানে অংশ নিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশের বিশেষ বাহিনী সোয়াট। সোয়াট এরই মধ্যে পুরো বাড়ি পর্যবেক্ষণ করে কিছুটা ধীরে ধীরে এগোচ্ছে।
এদিকে, ভেতরে জঙ্গিদের মধ্যে মর্জিনা নামের এক নারী রয়েছেন। আর তাঁর সঙ্গে আরো একাধিক পুরুষ জঙ্গি রয়েছেন বলে ধারণা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। আর ফ্রিজের কম্প্রেসার ব্যবহার করে শক্তিশালী বোমা তৈরি করে রাখতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এ অভিযানে অংশ নেওয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
আজ বিকেল ৪টার দিকে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকায় জঙ্গি আস্তানায় পৌঁছান সোয়াট বাহিনীর সদস্যরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটা থেকে ‘আতিয়া মহল’ নামের পাঁচতলা বাড়িটি ঘিরে রাখে পুলিশ। বাড়ির নিচতলার ফ্ল্যাটে সন্দেহভাজন জঙ্গিরা অবস্থান করছে বলে ধারণা পুলিশের।
মহানগর পুলিশের জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার হোসেন জানান, বেলা ১টা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত হ্যান্ডমাইকে জঙ্গিদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হয়েছে। এর মধ্যে ১টা ৪৮ মিনিট থেকে ২টা ১৬ মিনিট পর্যন্ত জঙ্গিরা সাড়া দিয়েছিল। এর পর থেকে আর কোনো উত্তর নেই।
সোয়াট টিম আসায় এখন অভিযান শুরু করার একটি পরিকল্পনা করছে পুলিশ। বেলা আড়াইটা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ১০ বারের বেশি পুলিশের ফাঁকা গুলির শব্দ শোনা গেছে।
স্থানীয় লোকজন জানায়, বাড়িটির দোতলা থেকে পাঁচতলা পর্যন্ত ২৯টি ইউনিটে ২৯টি পরিবার রয়েছে।
ঢাকা-চট্টগ্রামের ওই অভিযানের পর আটক জঙ্গিদের দেওয়া তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার রাত থেকে শিববাড়ি এলাকার পাঁচতলা বাড়িটি ঘিরে রাখেন সিলেটের স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ ঢাকা থেকে আসা কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যরা।
এরপর ওই বাড়ির মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দেন তাঁরা। আজ ভোরে ভেতরে থাকা জঙ্গিরা গ্রেনেড চার্জ করে বলে স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়। পুলিশও কয়েক দফা গুলি ছোড়ে।
সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার পাঠানপাড়া সড়কের পাশে অবস্থিত পাঁচতলা ও চারতলাবিশিষ্ট দুটি ভবনের নাম আতিয়া মহল। সিলেট নগরীর আতিয়া ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ির বান্দরঘাটের (বন্দরঘাট) বাসিন্দা উস্তার মিয়া।
গত জানুয়ারি মাসে প্রাণ কোম্পানির অডিট অফিসার পরিচয়ে কাওসার আহমদ ও মর্জিনা বেগম ওই বাড়ি ভাড়া নেন বলে জানিয়েছেন বাড়ির মালিক।
এর আগে সিলেটের পুলিশ কমিশনার গোলাম কিবরিয়া বিকেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে সর্বশেষ ব্রিফিং-এ জানান, আশপাশের ২৮টি ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের কথা বিবেচনায় তাড়াহুড়া না করে ধীরে পরিকল্পিতভাবে এগোতে হচ্ছে।