‘মহাভারত’ করতে চান শাহরুখ খান
বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খান অভিনয় দক্ষতার মাধ্যমে নিজেকে নিয়ে গেছেন অন্য উচ্চতায়। তবে তিনি শুধু অভিনেতা নন, প্রযোজকও বটে। সম্প্রতি এই অভিনেতা স্বপ্ন দেখছেন ‘মহাভারত’ নির্মাণ করার। অনেকখানি এগিয়েছেন স্বপ্ন পূরণের দিকে। সম্প্রতি তিনি ‘মহাভারত’ নির্মাণসহ নিজের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এবং চলচ্চিত্রের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন ভারতীয় গণমাধ্যম ডিএনএর সঙ্গে।
আপনি বলেছিলেন ‘মহাভারত’কে বড় পর্দায় আনবেন। সেটা কি হচ্ছে?
শাহরুখ খান : ‘মহাভারত’কে পর্দায় আনা আমার স্বপ্ন। এই স্বপ্ন বছরের পর বছর ধরে আছে। আমি এটি করার জন্য বাজেট নিয়ে ভাবছি না। আমি এটি ভালোবেসে করতে চাই। আমি যদি সহযোগিতা না পাই, তবুও আমি মনে করি না এটি আমার সাধ্যের বাইরে। কিন্তু কোনো ভারতীয় প্রযোজকের সঙ্গে নয়, এটি হবে আন্তর্জাতিক কোনো প্রযোজকের সঙ্গে। কারণ, ভারতীয় প্রযোজক এবং ছবির সীমিত বাজার। সুতরাং আপনাকে আন্তর্জাতিক কারো সাহায্য নিতে হবে। ‘মহাভারত’-এর মতো একটি বিষয় তুলে ধরা কম কিছু না। এটি ‘বাহুবলি’ কিংবা এর থেকে বড় মাত্রার হওয়া উচিত।
আপনি যে আন্তর্জাতিক প্রযোজকের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার পরিকল্পনা করছেন, সেটি কি শিগগিরই হতে পারে?
শাহরুখ খান : আমি খুবই ব্যস্ত আছি। আমি যদি আন্তর্জাতিক প্রযোজক পাই, তাহলে ছবিটির নির্মাণ দারুণ হবে। আমি কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রত্যেকে মহাভারত নির্মাণ করতে চান। তবে এখনো কোনো কিছু চূড়ান্ত হয়নি।
চারদিকে স্টুডিওগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, এ অবস্থায় আপনার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘রেড চিলিস’কে ভারতের পরবর্তী বড় স্টুডিওতে পরিণত করার পরিকল্পনা আছে?
শাহরুখ খান : ভারতের স্টুডিও কাঠামো সত্যিকারের স্টুডিও কাঠামো নয়। স্টুডিও কাঠামো হলো যশরাজ অথবা ধর্মা। এগুলো প্রকৃত স্টুডিও। যশরাজ নিজেদের ছবি পরিবেশন করে। ধর্মা এখন পর্যন্ত করে না।
তাই স্টুডিও দাবি করা সব স্টুডিওর জন্য শ্রদ্ধা। তাঁরা সবাই অসাধারণ মানুষ এবং আমাকে সাহায্য করেছে। ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’ কিংবা অন্য ছবি হোক না কেন, তারা কেবল নির্মাতার কাছ থেকে ইজারা নিচ্ছে। কিন্তু তারা সৃজনশীলতার অংশ নয়।
আপনি কি এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলবেন?
শাহরুখ খান : ওয়াল্ট ডিজনি সবকিছুর অংশ ছিলেন এবং সে কারণে তিনি স্টুডিও মডেল তৈরি করতে পেরেছেন। তিনি ছবি তৈরি করেছেন, বিক্রি করেছেন। যখন তিনি টাকা ধার অথবা টাকা হারিয়েছেন, তখন পুরো স্টুডিও তাঁকে পৃষ্ঠপোষকতা করেছে। একইভাবে ওয়ার্নার ব্রাদার্স ও কলাম্বিয়া পিকচার্স আছে। আমি মনে করি, তাঁরা এখানে, ভারতে পরিবেশক হিসেবে এসে যাঁরা টাকা দিচ্ছেন, তাঁদের ছবি নিচ্ছেন এবং মুক্তি দিচ্ছেন। তাঁরা কিন্তু মৌলিক বিষয়ে কোনো অবদান রাখছেন না। তাঁরা শুধু অভিনেতা ভাড়া করছেন। আমি স্টুডিও তৈরির চেষ্টা করছি না। আমি চলচ্চিত্র নির্মাতাদের জন্য এটি সহজতর করতে চাই। নিজেদের লোক দিয়েই ছবি বাজারজাত করা সম্ভব, এই কাজে অন্যরাও রাজি হবে। আর শেষ পর্যন্ত তো এটা আমাদেরই ছবি। চেষ্টা করছি, এখন দেখা যাক। আমি হয়তো পুরোপুরি ব্যর্থ হতে পারি অথবা যদি ভালো কিছু করতে পারি, তবে এটি স্টুডিও মডেল অথবা ওয়ার্নার ব্রাদার্স, যশরাজ অথবা ধর্মার মতো নয়। আমি মনে করি না, আমি তাদের মতো ভালো আছি। ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট আমার প্রধান বিষয়। সুতরাং আমি এর মধ্যে প্রায় আরো অনেক ছবি তৈরির চেষ্টা করছি।
সালমান খান ও করণ জোহর প্রধান চরিত্রে অক্ষয় কুমারকে রেখে একটি ছবি প্রযোজনা করছে। আপনি কি মনে করেন, এটি একটি নতুন ধারা আনবে?
শাহরুখ খান : এটি যৌথ হওয়া উচিত। এবং এটি অনেক আগে হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু এটি খুব ভালো যে করণ ও সালমান অক্ষয়ের সঙ্গে ছবি করছে। আমি এটা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু গল্প এবং অন্য কিছু নিয়ে কাজ করা হয়নি। আমি নিশ্চিত, সবাই মন খুলেই কাজ করবে। আমার মনে হয়, প্রযোজক হিসেবে যখন সুযোগ আসবে, তখন আমাদের এমনটা করা উচিত। এমন কাজে তাদের ব্যক্তি হিসেবে নেওয়া উচিত নয়, মানে সালমান, করণ বা অক্ষয়ের কাজ, এমন নয়। এটি ধর্মা এবং এসকেএফের কাজ। তাদের পরিচয় ভিন্ন। তারা চলচ্চিত্র প্রযোজক। এটি সম্পূর্ণ কোম্পানিকেন্দ্রিক, ব্যক্তি পর্যায়ের নয়। তাই তারা একসঙ্গে বড় তারকার ছবি নির্মাণ করছে। একইভাবে রেড চিলিসও এটি করছে। সম্ভবত ধর্মা ও রেড চিলিস অথবা যশরাজ ফিল্মস। ছবি নির্মাণ যৌথভাবে হওয়া উচিত। গল্প বলার ধরন ভালো হলে আপনি ভালো ছবি তৈরি করতে পারবেন। ‘টিনটিন’ নির্মাণ করেছিলেন স্টিফেন স্পিলবার্গ। তিনি এটি পছন্দ করেছিলেন, তিনি আর পিটার জ্যাকসন প্রযোজনা করেছিলেন। স্পিলবার্গ সব সময় সরাসরি কিছু করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি পিটার জ্যাকসনকে পেয়ে যান। তিনি বলেন, ‘চলো এটি একসঙ্গে যৌথভাবে করা যাক।’