সেনাবাহিনীর সঙ্গে কাজ করতে চান মাশরাফি
তিনি খেলার মাঠের একজন লড়াকু সৈনিক। বাংলাদেশের ক্রিকেটকে বদলে দেওয়ার নায়কও বলা হয়ে থাকে মাশরাফি বিন মুর্তজাকে। শুধু মাঠেই নয়, এর বাইরে অনেক জনগুরুত্বপূর্ণ কাজে অংশ নিয়ে বেশ প্রশংসা কুঁড়িয়েছেন তিনি। কয়েকদিন আগে বৈশাখের ছুটিতে রাঙামাটিতে ঘুরতে গিয়েছিলেন, সেই সুযোগে ঘুরে এলেন সেখানকার আর্মি ক্যাম্পও।
তাই মাশরাফির উপলব্ধি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে যদি কাজ করার সুযোগ পান, তাহলে নিজেকে গর্বিত মনে করবেন তিনি। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের সে অভিজ্ঞতাগুলো তুলে ধরেছেন তিনি :
‘প্রথমে আমার অন্তরের অন্তঃস্তল থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই আপনাদের সবাইকে যারা দেশ ও দেশের মানুষের জন্য সেবা করে যাচ্ছেন। আমার এবারের খাগড়াছড়ি সেনানিবাস ভ্রমণ থেকে আমি বুঝতে পেরেছি একজন সৈনিক তাঁর মাতৃভূমির জন্য কী পরিমাণ আত্মত্যাগ করেন। আপনারা হলেন সেই সব মানুষ যাঁরা দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন সব প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে, কিন্তু আপনাদের বীরত্ব গাঁথা হয়তো কখনো কোনো জাতীয় দৈনিক বা সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি। আমার সঙ্গে এমন একজন সৈনিকের দেখা হয়েছে, যিনি খুব শিগগিরই বাবা হবেন। অথচ দেশের জন্য দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি আজ তাঁর পরিবার থেকে বহুদূরের এই সেনা ক্যাম্পে অবস্থান করছেন। নিজের কাজ দিয়ে জাতীয় সঙ্গীতকে সমুন্নত রাখার প্রচেষ্টা কিংবা গ্যালারিতে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ দলকে সমর্থন দেওয়াকেই আমরা হয়তো দেশাত্মবোধের পরিচায়ক হিসেবে মনে করি। কিন্তু মনে রাখবেন, এর কোনোকিছুই আপনাদের আত্মত্যাগের সমতুল্য নয়। আজ বাংলাদেশ আর্মি এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের প্রত্যেক সদস্য দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করতে প্রস্তুত আছেন। আমার এই ভেবে খুব কষ্ট হয় যে, আপনারা এবং আপনাদের আপনজনরা অত্যন্ত কষ্ট সহ্য করেন যেন আমরা নিরাপদে ঘুম থেকে উঠতে পারি। যেদিন আমাদের দেশের সব নাগরিক একই ভাবে দেশের জন্য আত্মনিয়োগ করতে প্রস্তুত হবে সেদিন আমরা পাব সমৃদ্ধির বাংলাদেশ। মনে রাখবেন, সমরে আমরা শান্তিতে আমরা সর্বত্র আমরা দেশের তরে।
সর্বশেষ এই বলতে চাই, যদি কখনো বাংলাদেশ আর্মির সঙ্গে একদিনও কাজ করার সুযোগ পাই, আমি চিরকৃতজ্ঞ থাকব। এত সময় ধরে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাদের অশেষ ধন্যবাদ।’
মাশরাফি তাঁর লেখাটি শেষ করেন এই লিখে- ‘আপনাদের মাশরাফি (একজন ব্যক্তি যে শুধু ক্রিকেট খেলে)’।