রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ : এরশাদের মামলার বিচারক
রাডার ক্রয়সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের খালাস পাওয়ার পেছনে প্রসিকিউশনকে (রাষ্ট্রপক্ষ) দায়ী করেছেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা ।
বিচারক রায় ঘোষণার সময় বলেন, ‘প্রসিকিউশন পক্ষ অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছেন। এ ছাড়া, এ মামলায় কে, কীভাবে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন, কীভাবে সহযোগিতা করেছেন, রাষ্ট্রপক্ষ তা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।’
বিচারক বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী সাবেক প্রতিরক্ষা সচিব আনিসুজ্জামান এবং স্বীকারোক্তি রেকর্ডকারী ম্যাজিস্ট্রেটকে আদালতে সাক্ষী হিসেবে উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছে। এ ছাড়া এরশাদ জাতীয় স্বার্থে রাডার ক্রয় করেছেন, যাতে কোনো ধরনের অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ঘটেনি।
আজ বুধবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদসহ তিন আসামির সবাইকে খালাস দেন।
বেলা সোয়া ৩টার দিকে এরশাদ ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লার আদালতে হাজির হন। দুপুর আড়াইটায় এ মামলায় এরশাদ আইনজীবীর মাধ্যমে হাজিরা দাখিল করেন।
গত ১২ এপ্রিল রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে এ রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা।
এ রায়কে কেন্দ্র দুপুরের পর থেকেই জাতীয় পার্টির (জাপা) নেতাকর্মীরা আদালত চত্বরে জড়ো হতে থাকেন।
এরশাদের মামলাটি আগে ঢাকার বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন ছিল। ২০১৩ সালের ১১ জুন মামলাটিতে যুক্তিতর্কের শুনানি পর্যায়ে ওই আদালতের বিচারক বিব্রত বোধ করে মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠিয়ে দেন। এর পর এ আদালতে মামলাটির বিচার অনুষ্ঠিত হয়।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণ সমাপ্ত হয়।
খালাস পাওয়া মামলার অপর দুই আসামি হলেন সুলতান মাহমুদ ও মমতাজ উদ্দিন আহমদ। মামলার অপর আসামি এ কে এম মুসা রায়ের আগেই মারা গেছেন।
নথি থেকে জানা যায়, ১৯৯৪ সালের ২৭ অক্টোবর এরশাদসহ চারজনের বিরুদ্ধে তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরো (বর্তমানে দুদক) অভিযোগপত্র দাখিল করে।
পরবর্তী সময়ে ১৯৯৫ সালের ১২ আগস্ট এরশাদসহ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। এর পর ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত মামলাটি সুপ্রিম কোর্টের আদেশে স্থগিত ছিল। ২০১০ সালের ১৯ আগস্ট মামলায় বাদীর সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়।
এজাহারে বলা হয়, আসামিরা অবৈধ আর্থিক সুবিধা নিয়ে ফ্রান্সের থমসন সিএসএফ কোম্পানির অত্যাধুনিক রাডার না কিনে বেশি দামে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্টিং কোম্পানির রাডার কিনে সরকারের ৬৪ কোটি চার লাখ ৪২ হাজার ৯১৮ টাকা ক্ষতি করেন।