বিকেলে ‘গণধর্ষণের’ শিকার, সকালে মিলল ঝুলন্ত লাশ
নওগাঁর মান্দা উপজেলার মহানগর গ্রামের বাড়ি থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকালে কোহিলী খাতুন (২১) নামের এক বাকপ্রতিবন্ধী তরুণীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আগের দিন বিকেলে গণধর্ষণের শিকার হয়ে কোহিলী অপমানে লজ্জায় আত্মহত্যা করেন বলে অভিযোগ করেছে তাঁর স্বজন ও গ্রামের লোকজন।
কোহিলী উপজেলার ভারশোঁ ইউনিয়নের মহানগর গ্রামের আবদুল মান্নানের মেয়ে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
মৃত্যুর আগে কোহিলীর ইশারা-ইঙ্গিতের বরাত দিয়ে স্থানীয়রা জানায়, বুধবার বিকেলে বাড়িতে একা অবস্থান করছিলেন কোহিলী। এ সময় গামছা দিয়ে মুখ ঢেকে তিন যুবক ওই বাড়িতে প্রবেশ করে। যুবকরা তাকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। এলাকা নির্জন হওয়ায় ঘটনার বিষয়ে তারা কিছুই জানত না। পরে কোহিলী বাড়ি থেকে পালিয়ে পূর্বদিকে ইব্রাহীমের বাড়ির খলিয়ানে পৌঁছে অচেতন হয়ে পড়ে।
স্থানীয়রা আরো জানায়, চেতনা ফিরে পাওয়ার পর কোহিলী আকার ইঙ্গিতে জানান, তিন যুবক মুখ ঢেকে বাড়িতে প্রবেশ করেছিল। হাতের ইশারায় জানানো হয়, পাশবিক নির্যাতনের বিষয়টিও।
কোহিলীর চাচা মতিউর রহমান জানান, নখের একাধিক আঁচড়ের চিহ্ন পাওয়া গেছে কোহিলীর গলায়। ক্ষত স্থান দিয়ে রক্ত ঝরতে দেখেছেন তিনি।
বাবা আবদুল মান্নান জানান, বুধবার বিকেল ৩টার দিকে কোহিলীকে বাড়িতে একা রেখে ছোট মেয়েকে নেওয়ার জন্য মহানগর বালিকা বিদ্যালয়ে যান। পরে ছোট মেয়েকে নিয়ে দেলুয়াবাড়ি বাজারে কোহিনুর মার্কেটে প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে রেখে কিছু কেনাকাটা করেন। বিকেল ৫টার দিকে বাড়ি ফেরার পথে মহানগর বাঁশতলার মোড়ে পৌঁছে ঘটনার বিষয়ে তিনি জানতে পারেন। জিজ্ঞাসাবাদে মেয়ে কোহিলী হাতের তিন আঙ্গুল দেখিয়ে বাড়িতে তিন যুবকের প্রবেশের বিষয়টি আকার-ইঙ্গিতে নিশ্চিত করেন।
আবদুল মান্নান জানান, আগের দিন বিকেলে গণধর্ষণের শিকার হওয়ার পর কোহিলী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। অপমানে লজ্জায় আজ সকালে ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করে তাঁর মেয়ে।
মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিছুর রহমান ধর্ষণের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তিনি বলেন, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলেই সব বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে। এই ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে।