আ. লীগের উপকমিটির ঘোষণা এই মাসেই?
আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দলের উপকমিটির চূড়ান্ত তালিকা রয়েছে। চলতি মাসের শেষের দিকে এই কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে।
দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে এমন আভাস পাওয়া গেছে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একক নির্দেশনা অনুযায়ী এবারের উপকমিটি হচ্ছে। গতবারের মতো নিয়ন্ত্রণহীন নয়, অনেক বিবেচনা করে এই কমিটির সদস্যের সংখ্যা একশোর মধ্যে রাখা হয়েছে।
কমিটির বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আওয়ামী অঙ্গ-সংগঠন ও বন্ধুপ্রতিম সংগঠনের বেশ কয়েকটির ইতোমধ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি হয়েছে। বাকিগুলোও অচিরেই হয়ে যাবে। আওয়ামী লীগের উপকমিটির ঘোষণা হবে।’
তবে কবে, কখন কমিটির ঘোষণা হবে, সে বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু বলেননি ওবায়দুল কাদের।
উপকমিটি এই মাসেই হওয়ার আভাসের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, ‘আমি আসলে এ বিষয়ে আপডেট কিছু জানি না।’
একটু ভিন্ন ভাষায় বলেন আওয়ামী লীগের আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমি সরকারি কাজে কিছু দিন দেশের বাইরে ছিলাম। সে কারণে আপাতত কিছু জানি না। তবে যাচাই-বাচাই যে হচ্ছে, সেটা তো সবারই জানা।’
উপকমিটি এই মাসের শেষ দিকেই হচ্ছে বলে দৃঢ়তার সঙ্গে এনটিভি অনলাইনকে জানান আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘উপকমিটি যাচাই-বাচাইয়ের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। এ মাসের শেষে কমিটি ঘোষণা হবে।’
দলীয় কার্যালয়ে পদপ্রত্যাশীদের ভিড়
রাজনৈতিক আলাপচারিতায় এমন খবর বেশ জোরেসোরে থাকায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, দলের সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয় প্রাঙ্গণসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের ব্যক্তিগত কার্যালয় ও বাসভবনে পদপ্রত্যাশীদের সরব উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা এনটিভি অনলাইনকে জানান, এর আগে দেখা হলে কিংবা ফোনালাপে এ বিষয়ে পদপ্রত্যাশীরা তাঁদের প্রত্যাশার কথা জানাতেন। কিন্তু ইদানীং সকাল-সন্ধ্যা দলীয় কার্যালয় আর বাসায় ঘুরঘুর করছেন বিভিন্ন নেতা।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কেন্দ্রীয় নেতারা না এলে কিংবা কোনো কর্মসূচি না থাকলে সারা দিনই কার্যালয় ফাঁকা থাকে। কিন্তু ইদানীং কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি ছাড়াও নেতাকর্মীরা কার্যালয়ে আসছেন, যাচ্ছেন। কার্যালয়ে কোনো নেতা আছেন কি না, জানতে চাচ্ছেন। কেউ কেউ চিঠি বা চিরকুট দিয়ে যাচ্ছেন নেতাদের উদ্দেশে পৌঁছে দেওয়ার জন্য।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এক নেতা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, গেল সম্মেলনের পর কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার ওপর স্বাধীনতা থাকায় যে যারমতো করে উপকমিটির সহসম্পাদক করেছেন। এতে করে কমিটির সদস্যের সংখ্যা ৫০০ অতিক্রম করে, যা ছিল নিয়ন্ত্রণহীন। কিন্তু দলের ২০তম সম্মেলনের পর থেকেই নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলে আসছেন, উপকমিটির সহসম্পাদক ১০০ জনের বেশি হবে না। সে অনুযায়ী উপকমিটি হচ্ছে।
আরেক নেতা জানান, বর্তমান গঠনতন্ত্রে আছে একজন সম্পাদকের সঙ্গে পাঁচজন সহসম্পাদক থাকবে। সে অনুযায়ী ১৯ জন সম্পাদকের সঙ্গে পাঁচজন করে মোট ৯৫ জন উপসম্পাদক থাকবে। উপকমিটির চূড়ান্ত তালিকা দলের সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে রয়েছে। তিনি নির্দেশ দিলেই ঘোষণা দেওয়া হবে।
এর আগে বুধবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামকে চেয়ারম্যান ও দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদকে সদস্য সচিব করে ৩২ সদস্যবিশিষ্ট আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা কমিটি গঠন করা হয়।