শাহবাগে ম্যাটস শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ
রাজধানীর শাহবাগে আজ বৃহস্পতিবার মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের (ম্যাটস) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অর্ধশত শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। পুলিশ শতাধিক শিক্ষার্থীকে আটক করেছে বলে আন্দোলনকারীরা দাবি করেছে।
সংঘর্ষের ফলে শাহবাগ দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শাহবাগসহ আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
ম্যাটস শিক্ষার্থীদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন কয়েকদিন ধরে চার দফা দাবি আদায়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করছে। বগুড়া, বাগেরহাটসহ বিভিন্ন স্থানে তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে পুলিশ।
শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি হলো : বঙ্গবন্ধুর প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা মোতাবেক ম্যাটস শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে; মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড অব বাংলাদেশ নামে স্বতন্ত্র বোর্ড গঠন করতে হবে; কমিউনিটি ক্লিনিকে সরকারিভাবে দশম গ্রেডে নিয়োগ ও বেসরকারি ক্লিনিক অথবা হাসপাতালে ম্যাটস থেকে পাস করা ডিপ্লোমা চিকিৎসকদের পদ সৃষ্টি ও বাস্তবায়ন করতে হবে এবং ইন্টার্নশিপে ভাতা দিতে হবে।
দাবি আদায়ে শিক্ষার্থীরা আজ সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হয়। সেখানে তারা সমাবেশ করে। সমাবেশ শেষে বেলা ১১টার দিকে তারা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে যাত্রা শুরু করে। শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। শিক্ষার্থীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়লে পুলিশ লাঠিপেটা করে এবং কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী এবং বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম সদস্য প্রভাকর সাহা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা আমাদের চার দফা দাবি নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করি। এতে পুলিশ আমাদের ওপর লাঠিপেটা করে এবং কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। এতে আমাদের অর্ধশত শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। পুলিশ শতাধিক শিক্ষার্থীকে আটক করেছে।’
প্রভাকর সাহা বলেন, ‘সরকার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের দাবি না মানলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।’
পুলিশ আন্দোলনকারীদের ওপর লাঠিপেটা করেনি বলে দাবি করেছেন রমনা বিভাগের উপকমিশনার মারুফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘ম্যাটস শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সহিংসতার পর্যায়ে চলে যায়। তারা কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে। তাই আমরা তাদের ওপর পানি এবং কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ি। তাতে তাদের আহত হওয়ার কথা না। তাদের ছোড়া ইটপাটকেলের আঘাতে আমাদের এক নারী কনস্টেবল আহত হয়।’
মারুফ হোসেন শিক্ষার্থীদের আটকের কথা শুনেছেন বলে জানান। কিন্তু আটকের সংখ্যা জানাতে পারেননি। রাতে জানা যাবে বলে জানান তিনি।
এদিকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ এম আমজাদ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘তারা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাতে আন্দোলন করলেও এ রাস্তাটি সিটি করপোরেশনের অধীনে। তাই আমাদের কিছু করার নেই।’