তামিম ৯৫, বাংলাদেশ ১৮২
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রথম ম্যাচে দারুণ এক শতরানের ইনিংস খেলেছিলেন তামিম ইকবাল। আজ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও হেসেছে তামিমের ব্যাট। বেশ চাপের মুখে ব্যাটিং করে পৌঁছে গিয়েছিলেন আরেকটি শতকের দ্বারপ্রান্তে। কিন্তু শেষপর্যন্ত মাত্র ৫ রানের আক্ষেপ নিয়ে সাজঘরে ফিরতে হয়েছে বাঁহাতি এই ওপেনারকে। ৯৫ রানের লড়াকু এক ইনিংস এসেছ তামিমের ব্যাট থেকে। তামিম ছাড়া আর কেউই অবশ্য আলো ছড়াতে পারেননি ব্যাট হাতে। ৪৪.৩ ওভার ব্যাটিং করেই বাংলাদেশ অলআউট হয়ে গেছে ১৮২ রানে।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাঁচামরার লড়াইয়ে প্রায় একাই লড়তে হয়েছে তামিমকে। বড় জুটি গড়ার জন্য সঙ্গী হিসেবে পাননি কাউকেই। তামিমের পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংসটি খেলেছেন সাকিব আল হাসান। করেছেন ২৯ রান। চতুর্থ উইকেটে তামিম ও সাকিব গড়েছিলেন ৬৯ রানের জুটি। এটিই আজ বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের জুটি। শেষপর্যায়ে ১৪ রান করেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এই তিনজন ছাড়া আর কেউই পেরোতে পারেননি দুই অঙ্কের কোটা।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ১৭ ওভারের মধ্যে মাত্র ৫৩ রান সংগ্রহ করতেই টাইগাররা হারিয়েছে তিনটি উইকেট। একে একে সাজঘরে ফিরেছেন সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েস ও মুশফিকুর রহিম। চতুর্থ উইকেটে ৬৯ রানের জুটি গড়ে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তামিম ও সাকিব। কিন্তু সাকিব খুব বেশি লম্বা করতে পারেননি ইনিংসটা। সাজঘরে ফিরে গেছেন ২৯ রান করে। সাকিবের পর সাব্বিরও বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি উইকেটে। অ্যাডাম জামপার শিকার হয়ে আউট হয়েছেন মাত্র ৮ রান করে।
শুরুটা বেশ সতর্কতার সঙ্গে করলেও ষষ্ঠ ওভারে প্রথম উইকেট হারাতে হয়েছে বাংলাদেশকে। জশ হ্যাজেলউডের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেছেন সৌম্য সরকার। একাদশ ওভারে ইমরুল কায়েসও প্যাট কামিন্সের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরেছেন মাত্র ৬ রান করে। ১৭তম ওভারে বাংলাদেশ হারিয়েছে তৃতীয় উইকেট। মইসেস হেনরিকের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েছেন মুশফিকুর রহিম। টেলিভিশন রিপ্লেতে অবশ্য দেখা গেছে যে, বল প্যাডে লাগার আগে হালকা ছুঁয়ে গিয়েছিল মুশফিকের ব্যাট। কিন্তু আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে সাজঘরে ফিরতে হয়েছে ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানকে।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মহাগুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে টস ভাগ্য গেছে মাশরাফির পক্ষে। ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন টাইগার অধিনায়ক। একাদশে আনা হয়েছে একটি পরিবর্তন। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের পরিবর্তে দলে এসেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। অস্ট্রেলিয়া দলে এনেছে লেগস্পিনার অ্যাডাম জামপাকে।
ক্রিকেট বিশ্বে এখন পর্যন্ত এই একটি দেশের বিপক্ষেই টাইগারদের পরিসংখ্যানটা একদম যুতসই নয়। ক্রিকেটের সবচেয়ে সফল দলটির বিপক্ষে ২০টি ওয়ানডে খেলে কেবল একটিতে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। সেটিও আবার প্রায় এক যুগ আগে। এরপর ক্যাঙ্গারুদের বিপক্ষে ১৩ ম্যাচ খেলে ১২টিই পরাজয় বরণ করতে হয়েছে টাইগারদের। একটি ম্যাচ ভেসে যায় বৃষ্টিতে।
অসিদের বিপক্ষে ২০০৫ সালে সবেধন নীলমনি একটি জয় পাওয়ার পর এখন পর্যন্ত জিম্বাবুয়েকে ৩৯ বার হারিয়েছে বাংলাদেশ। টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই বাংলাদেশের পরিসংখ্যানটা সবচেয়ে সমৃদ্ধ। এ ছাড়া নিউজিল্যান্ডকে নয়বার, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সাত, ভারতকে পাঁচ ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে তিনবার হারালেও এখনো অজেয় থেকে গেছে অস্ট্রেলিয়া।
বাংলাদেশ একাদশ : তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, মাশরাফি বিন মুর্তজা, মুস্তাফিজুর রহমান ও রুবেল হোসেন।
অস্ট্রেলিয়া একাদশ : অ্যারন ফিঞ্চ, ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভেন স্মিথ, ম্যাথু ওয়েড, প্যাট কামিন্স, জন হেস্টিংস, মইসেস হেনরিকস, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, জেমস প্যাটিনসন, মিচেল স্টার্ক, জশ হ্যাজলউড ও অ্যাডাম জামপা।