আনন্দ দিতে সেজেছে বিনোদন কেন্দ্রগুলো
রাজধানীবাসীর জন্য ঈদ আনন্দের অন্যতম অনুষঙ্গ হলো শিশুদের নিয়ে বিনোদন কেন্দ্র পরিদর্শন। ফাঁকা ঢাকায় পরিবার-স্বজনদের নিয়ে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ঘুরে নির্মল আনন্দ খুঁজে পান নগরবাসী।
ঢাকার মানুষের এই চাহিদার কথা বিবেচনা করে প্রতিবছরের মতো এবারও রাজধানীর বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্র খোলা রাখা হবে। এর মধ্যে রয়েছে শিশুপার্ক, চিড়িয়াখানা, জাতীয় জাদুঘর (ঈদের দিন বন্ধ থাকবে), ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ওয়ান্ডারল্যান্ড পার্ক, ফ্যান্টাসি কিংডম, নন্দন পার্ক, দিয়াবাড়ি থিম পার্ক।
এরই মধ্যে ঈদের সব রকমের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে এসব বিনোদন কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ। নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থাও। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানের বিনোদন কেন্দ্রগুলোর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদ উপলক্ষে তাদের নির্ধারিত সময়ের বাইরেও দর্শনার্থীরা যতক্ষণ থাকবেন, ততক্ষণ খোলা রাখা হবে।
শিশুপার্ক
রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত শিশুপার্ক ঈদের দিন খোলা থাকবে। পার্কের সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নুরুজ্জামান এনটিভি অনলাইনকে জানান, ঈদ উপলক্ষে সব রাইড পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। যেখানে সমস্যা, ঠিক করা হয়েছে। রং নষ্ট হয়ে যাওয়া কোনো কোনো রাইডে নতুন রং করা হয়েছে। আলোকসজ্জারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। শিশু পার্কে বর্তমানে ১১টি রাইড রয়েছে। ঈদের প্রথম চার দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত খোলা থাকবে পার্ক। প্রবেশমূল্য ১৫ টাকা। প্রতিটি রাইড চড়ার জন্য দিতে হবে ১০ টাকা করে। এ ছাড়া ঈদে সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা বুধবার বিনা টিকেটে প্রবেশ ও রাইডে চড়া সুযোগ পাবে।
চিড়িয়াখানা
ঈদের দিন সকাল ৮টায় চিড়িয়াখানার প্রবেশদ্বার খুলে দেওয়া হবে। যতক্ষণ দর্শক থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত খোলা থাকবে চিড়িয়াখানা। প্রবেশমূল্য ৩০ টাকা।
চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. এস এম নজরুল ইসলাম জানান, সব ধরনের সেবা নিশ্চিত করতে কাজ করছে কয়েকটি কমিটি। চিড়িয়াখানার অভ্যন্তরীণ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের পাশাপাশি থাকবে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) টহল।
জাতীয় জাদুঘর
প্রতিষ্ঠানটির সমকালীন ও জাতিসত্তা বিভাগের উপকিপার ড. শিহাব শাহরিয়ার জানান, জাতীয় জাদুঘর ঈদের দিন খোলা না থাকলেও পরদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। অন্য দিনগুলোতে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত গ্যালারি ঘুরে দেখা যাবে। ঈদে শিশু-কিশোর ও প্রতিবন্ধীদের জন্য বিনা টিকেটে জাদুঘর পরিদর্শনের সুযোগ থাকবে বলেও জানান তিনি। জাদুঘরের অন্য প্রতিষ্ঠান আহসান মঞ্জিল ও স্বাধীনতা জাদুঘর একই সময়সূচিতে খোলা থাকবে। থাকছে বিনামূল্যে চলচ্চিত্র দেখার ব্যবস্থাও।
ফ্যান্টাসি কিংডম
ঈদে খোলা থাকবে ফ্যান্টাসি কিংডম। কনকর্ড এন্টারটেইনমেন্টের হেড অব মিডিয়া অ্যান্ড পিআর মাহফুজুর রহমান টুটুল জানান, ঈদের প্রথম সাত দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে ফ্যান্টাসি কিংডম ও ওয়াটার কিংডম। ফ্যান্টাসি পার্কে বড়দের প্রবেশমূল্য ৪০০ টাকা, ছোটদের ৩৫০ টাকা।
ফ্যান্টাসি কিংডমে প্রবেশসহ ৮০০ টাকার টিকেট কেটে সাঁতার কাটা যাবে ওয়াটার কিংডমে। একই সঙ্গে ওয়েভপুল, লেজি রিভার, টিউব স্লাইড, ওয়াটারপুলসহ বিভিন্ন রাইডে চড়া যাবে।
নন্দন পার্ক
সাভারে নবীনগরে বারুইপাড়া অবস্থিত বিনোদন কেন্দ্র নন্দন পার্কও ঈদে খোলা থাকবে। পার্কের হেড অব মার্কেটিং মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন প্রিন্স জানান, ঈদের দিন সকাল থেকেই খোলা থাকবে পার্ক। সাধারণ প্রবেশমূল্য ২৯৫ টাকা। সব রাইড উপভোগ করতে লাগবে জনপ্রতি (খাবারসহ) ৮৯৫ টাকার মতো। খাবার ছাড়া জনপ্রতি ৬৯৫ টাকা। ঈদের বিশেষ প্যাকেজ ৬১০ টাকা।
ওয়াটার ওয়ার্ল্ড ও ড্রাই পার্কের সব রাইডও উপভোগ করা যাবে এই প্যাকেজের আওতায়। ঈদের পরবর্তী দিনগুলোতে পার্কে লাইভ মিউজিক, ডিজে, ড্যান্স শো ইত্যাদির আয়োজন থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা। ঈদ উপহার হিসেবে পার্কে প্রবেশের সময় একটি বিশেষ ডিসকাউন্ট কার্ড দেওয়া হয় বলেও জানালেন তিনি।
ডিএনসিসি ওয়ান্ডারল্যান্ড
শ্যামলীর ডিএনসিসি ওয়ান্ডারল্যান্ড (সাবেক শিশুমেলা) ঈদে খোলা থাকবে। এখানে আছে ৪০টির মতো রাইড। পরিবারের সবার চড়ার মতো আছে ১৫টি রাইড। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন জানিয়েছে, ঈদের প্রথম সাত দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে ওয়ান্ডারল্যান্ড। এই পার্কে প্রবেশমূল্য ৫০টাকা।