বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি নষ্টের সরকারি চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে : মওদুদ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ থাকবে। বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি নষ্টের সরকারি চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
আজ সোমবার রায়ের পর সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে মওদুদ আহমদ এসব কথা বলেন।
ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, ‘বিচারকদের অপসারণে সংসদে আইন পাস করাটা ছিল বিচার বিভাগের প্রতি আঘাত। এটি ছিল সরকারের দুরভিসন্ধিমূলক চিন্তা। আমি মনে করি এই রায়ের ফলে সরকারের পরাজয় ঘটেছে।’
বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ আরো বলেন, ‘বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে সরকারি চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। সরকার যেভাবে বিচার বিভাগের ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ করতে চেয়েছিল তা করতে ব্যর্থ হয়েছে।’
‘আমি মনে করি দলমত নির্বিশেষে সবাই এবং আইনজীবীরা এই রায়কে স্বাগত জানাবে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ থাকবে। বিএনপি দলীয়ভাবেও এটি মনে করে’-বলেন মওদুদ আহমদ।
এর আগে আজ সোমবার সকালে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণ-সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। এতে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে থাকছে না; বরং তা আগের মতোই সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে ন্যস্ত থাকবে।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
গত ১ জুন আপিলের শুনানি শেষ হয়। সেদিন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ শুনানি শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছিলেন। গতকাল রোববার আপিল বিভাগের ওয়েবসাইটে আজকের কার্যতালিকার শুরুতেই ষোড়শ সংশোধনীর আপিলের রায় ঘোষণার জন্য রাখা হয়েছিল।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধানটি তুলে দিয়ে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাস হয়। ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ৯৬ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন এনে বিচারকের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়, যেটি ১৯৭২ সালের সংবিধানেও ছিল।
সংবিধানে এই সংশোধনী হওয়ায় মৌল কাঠামোতে পরিবর্তন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ করবে—এমন যুক্তিতে ওই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একই বছরের ৫ নভেম্বর হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়। ওই রিটের ওপর প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট ২০১৪ সালের ৯ নভেম্বর রুল জারি করেন। গত বছরের ১০ মার্চ মামলাটির চূড়ান্ত শুনানি শেষে ৫ মে রায় দেন আদালত।