চিকুনগুনিয়ার জন্য সিটি করপোরেশনকে দায়ী করলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী
চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব দূর করতে সিটি করপোরেশনগুলো সঠিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করেনি বলে অভিযোগ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এমন অভিযোগ করেন।
চিকুনগুনিয়া ছড়ানোর একমাত্র কারণ মশা- এ কথা উল্লেখ করে নাসিম বলেন, যাদের ওপর মশা নিধনের দায়িত্ব ছিল তাদের দোষারোপ না করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে দোষ দেওয়া হচ্ছে- যা খুবই দুঃখজনক।
চিকুনগুনিয়া সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করার জন্য তাঁর মন্ত্রণালয় কাজ করছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী তিন মাসের মধ্যে চিকুনগুনিয়া দূর হয়ে যাবে। পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচি বাস্তবায়নে বিশেষ অবদান রাখায় পরিবার কল্যাণকর্মীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন তিনি। একই সঙ্গে জনসংখ্যা বিষয়ক সেরা প্রতিবেদন তৈরির জন্য শ্রেষ্ঠ সাংবাদিকদের হাতেও পুরস্কার তুলে দেন তিনি।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘আমি কাউকে দোষারোপ করতে চাই না। কিন্তু এটা সত্যি কথা, সত্যি কথা, এটা সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব ছিল, মশা নিধন করার জন্য। যে দায়িত্ব পালন করার কথা ছিল অন্যের, সে দায়িত্ব পালন করছে না। সেটা আমি তাদের অনুরোধ করেছি, আমি নিজে অনুরোধ করেছি। মেয়রকে আমি বলেছি। জরুরি ভিত্তিতে ঢাকা শহরের যেসব জায়গায় মশক উৎপন্ন হয়, সেগুলো নিধন করো, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করো, সেখানে আবর্জনামুক্ত করো, যেন এই মশা উৎপন্ন না হয়। এটা আমার কাজ নয়। আমার যে কাজ আমরা সেই কাজগুলো করছি। করছি কি না সেটা জিজ্ঞাসা করতে হবে। অনেকে চাপিয়ে দিচ্ছে ইচ্ছে করে আর কি। কাউকে বাঁচানোর জন্য চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে, এটা ঠিক নয়।’
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যপ্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সমালোচনা করে বলেন, চিকুনগুনিয়া ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার দায়দায়িত্ব তাদেরকেই নিতে হবে। তিনি বলেন, রাজধানীবাসী কয়েক সপ্তাহ ধরে চিকুনগুনিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। দুটি সিটি করপোরেশন মশার বংশ বিস্তার রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা নগরীর জলাশয়গুলো সময় মতো পরিষ্কার করতে ব্যর্থ হয়েছে। মশার প্রজনন মৌসুমের আগেই এসব জলাশয় পরিষ্কার করতে হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, চিকুনগুনিয়া কোনো ঘাতক রোগ নয়। মশাবাহিত জীবাণুর মাধ্যমে এ রোগ ছড়ায়। তিনি বলেন, যথাযথ চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করা এবং সব মন্ত্রণালয়, সরকারি মেডিকেল কলেজের ১০ হাজার ছাত্র ও কর্মচারীদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সভা সমাবেশ করে জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে চিকুনগুনিয়া রোগ প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই রোগ প্রতিরোধে আমরা গত তিন মাস ধরে গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।’
স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সচিব এম সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব সিরাজুল হক খান এবং স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদও বক্তব্য দেন।