চিকুনগুনিয়া নিয়ে অহেতুক আতঙ্কিত হওয়ার ভিত্তি নাই : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
চিকুনগুনিয়া সম্পর্কে ভয় কাটাতে জনসচেতনতা কার্যক্রম জোরদারে চিকিৎসকদের আরো তৎপর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
স্বাস্থ্য মন্ত্রী বলেছেন, চিকুনগুনিয়া নিয়ে অহেতুক আতঙ্কিত হওয়ার কোনো ভিত্তি নাই। মানুষের মনের ভয় কাটাতে ও রোগের চিকিৎসা বিষয়ক পরামর্শ প্রদানে চিকিৎসকরাই বড় ভূমিকা রাখতে পারেন। এজন্য পথসভাসহ জনসচেতনতা কার্যক্রম গ্রহণে বাংলাদেশি মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনকে (বিএমএ) এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি চিকুনগুনিয়ার উৎস এডিস মশক নিধনে সিটি করপোরেশনগুলোর কার্যক্রমে আরো গতি বাড়াতে তাঁদের উদ্ধুদ্ধকরণেও ভূমিকা রাখতে হবে চিকিৎসকদের জাতীয় সংগঠন বিএমএকে।
আজ বুধবার সচিবালয়ে বিএমএ নেতাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
সভায় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সিরাজুল হক খান, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম, বিএমএর সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জনসংখ্যা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া আহমেদ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান, বিএমএর মহাসচিব অধ্যাপক ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরীসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিএমএর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
দেশের বন্যা উপদ্রুত এলাকায় চিকিৎসক দল পাঠানোর জন্য বিএমএর প্রতি আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, জনগণের সরকার হিসেবে বিভিন্ন দুর্যোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার সব সময় অসহায় মানুষের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছে। বিএমএ নেতাদেরও বন্যা বা পাহাড়ি ঢলসহ যেকোনো দুর্যোগে দুর্গত মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে এগিয়ে আসতে হবে।
সভায় বিএমএর মহাসচিব হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন প্রণয়নসহ চিকিৎসক সমাজের উন্নয়নে বেশ কয়েকটি প্রস্তাব উত্থাপন করেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ সময় বিএমএ নেতাদের প্রস্তাবগুলো মনোযোগ সহকারে শুনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাস্তবায়নযোগ্য মতামতগুলো দ্রুত আলোচনা করে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন।
বিএমএ উত্থাপিত কয়েকটি প্রস্তাব আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের মাধ্যমে সমাধানযোগ্য হওয়ায় সেগুলো নিয়েও বৈঠক করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান মন্ত্রী।
হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পদক্ষেপ নিতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীর সঙ্গে দ্রুত বৈঠকে বসবেন বলে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, চিকিৎসকদের কর্মস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন প্রণয়নের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে নিয়ে এসেছে সরকার। এক্ষেত্রে এক সপ্তাহের মধ্যে সুনির্দিষ্ট মতামত পাঠানোর জন্য বিএমএর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বিএমএর মতামত পাওয়ার পর দ্রুত আইনের খসড়া চূড়ান্ত করে মন্ত্রিসভা বৈঠকে উত্থাপনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি রোগীদের স্বার্থের কথা ভেবে তাদের প্রতি সহানুভূতিমূলক আচরণে উৎসাহ জোগাতে বিএমএর পক্ষ থেকে প্রতি মাসে তরুণ চিকিৎসকদের নিয়ে বিশেষ কাউন্সেলিং কোর্স চালু করার পরামর্শ দেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, চিকিৎসা দিতে আসা চিকিৎসক ও নিতে আসা রোগীর কেউ যেন হয়রানি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে সবাইকে কাজ করতে হবে।