সাক্ষাৎকারে অপু উকিল
‘ছোট ছেলেটা মা মা করে কাঁদত’
যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন অপু উকিল। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব আছেন স্বামী অসীম কুমার উকিল। এনটিভি অনলাইনকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে অপু উকিল জানালেন, স্বামী-স্ত্রী দুজনই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হলে পারিবারিক জীবনে এর কেমন প্রভাব পড়ে সেই কথা।
অপু উকিল বলেন, ‘আমার দুই সন্তান। বড় ছেলে এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। ছোট ছেলে এইচএসসিতে পড়ে। তারা যখন ছোট ছিলে, তাদের আমি তেমন সুযোগ দিতে পারি নাই। তারা এখন বড় হয়ে গেছে। কিন্তু যখন যুব মহিলা লীগের দায়িত্ব গ্রহণ করি, তখন বড় ছেলের বয়স ছিল সাড়ে সাত বছর, আর ছোট ছেলের বয়স ছিল দেড় বছর। সে সময় তাদের আমি দিতে পারি নাই। সাংগঠনিক কারণে বিভিন্ন এলাকা সফর করতে হয়েছে। বড় ছেলের পড়াশোনার দেখাশোনা এবং ছোট ছেলের খেয়াল রাখতে পারি নাই। ছোট ছেলেকে আমি কারো কাছে রেখে যেতাম। সে মা মা করে কাঁদত। তাকে আমি মোবাইলে কথা বলে ঘুম পাড়াতাম।’
সন্তানের যে বয়সে মায়ের পাশে থাকা দরকার, সেই সময়টা অপু উকিল তাঁর ছোট ছেলেকে দিতে পারেননি বলে দুঃখ প্রকাশ করেন। বলেন, ‘তারপরও তারা নিজের প্রচেষ্টায় অনেক ভালো করেছে। তবে আমি মনে করি আমি যদি সময় দিতে পারতাম, তাহলে তারা আরো ভালো করত। এ কারণে আমি নিজেকে অপরাধী মনে করি।’
স্বামী-স্ত্রী দুজন রাজনীতি করলে অনেক সুবিধা হয় বলে মনে করেন এই নেত্রী। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘এর ফলে বিভিন্ন স্থানে তাঁরা একসঙ্গে চলতে পারেন।’ অপু উকিল বলেন, ‘আমি তাঁর বিষয়টা বুঝি। আমারটাও সে (স্বামী) বোঝে। রাঙামাটিতে যখন পাহাড়ধস হলো, সেই সময় আমি অসুস্থ ছিলাম, কিন্তু আমার স্বামী দলের প্রয়োজনে সেখানে ছুটে গেছেন। আমার জায়গায় অন্য কেউ হলে বলত, আমি অসুস্থ হলাম কিন্তু সে আমাকে রেখে চলে গেল। এ চিন্তাটা আমার ক্ষেত্রে আসে নাই।’
এ সময় এই দম্পতির সন্তানরা অনেক কষ্ট করেছে জানিয়ে অপু উকিল বলেন, ‘আমার স্বামীও অনেক ছাড় দিয়েছে। এখন আমাদের সন্তানরা বড় হয়ে গেছে। তাই রাজনীতি করার সুবিধাও বেশি। এলাকায় দুজন একসঙ্গে যাই। দুজনকে পাশে পেয়ে এলাকাবাসীও আনন্দ পান। রাজনীতিই আমাদের একটা পরিবার হয়ে গেছে।’
রাজনীতি করার জন্য নিজের পরিবারের পাশাপাশি শ্বশুরবাড়িরও সমর্থন পান বলে জানালেন অপু উকিল। রাজনীতির জন্য তাঁর শাশুড়ি তাঁকে অনেক উৎসাহ দিয়েছেন বলেও জানালেন।