পটুয়াখালী-১ আসনে অন্য দলকে দেখতে চায় না মানুষ
আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন। পটুয়াখালী সরকারি কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তিনি ছাত্রলীগে যোগদান করেন। পরবর্তীকালে যুবলীগে। আশির দশকের শুরুতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে বিচরণ শুরু। পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। করেছেন সাংবাদিকতা। বর্তমানে তিনি পটুয়াখালী-১ আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী। তাঁর রাজনৈতিক জীবন এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নানা দিক নিয়ে এনটিভি অনলাইনের একান্ত আলাপচারিতায় অংশ নেন তিনি। সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন এনটিভি অনলাইনের স্টাফ করেসপনডেন্ট মুহম্মদ আকবর।
এনটিভি অনলাইন : আপনি রাজনীতিতে কখন জড়িয়ে পড়েন?
আফজাল হোসেন : ঐতিহ্যগতভাবে পটুয়াখালী বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একটি বিচরণ ক্ষেত্র। সে কারণে এলাকায় স্লোগান মিছিল এবং এলাকার নেতৃত্বের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে কখন যে রাজনীতিতে জাড়িয়ে পড়লাম, তা ঠিক মনে নেই। অর্থাৎ এটা কবে থেকে সেই দিনকাল শুরু তা বলা যাবে না। বলা যেতে পারে শৈশব থেকেই রাজনীতির প্রক্রিয়ার সঙ্গে বেড়ে উঠেছি। পরবর্তীতে পটুয়াখালী সরকারি কলেজে পড়াকালীন আমি দলের প্রার্থীদের পক্ষে ভোট চেয়েছি এবং জাতির জনক হত্যার বিচার চাওয়ার মধ্য দিয়ে নিজেকে রাজনীতির মাঠে-ময়দানে সম্পৃক্ত রেখেছি।
এনটিভি অনলাইন : পরিবারে কেউ রাজনীতি করতেন কি না...
আফজাল হোসেন : না, সরাসরি আওয়ামী লীগের রাজনীতি বাবা করেননি। তিনি একজন শিক্ষক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সুস্থ, সুন্দর মনের মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। সরাসরি রাজনীতির মাঠে ময়দানের খবর রাখতেন। সুস্থ রাজনীতি করেন, এমন মানুষকে উৎসাহ দিতেন। সে কারণেই বোধহয় আমার রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়া সহজ হয়ে পড়ে। এ ছাড়া স্থানীয় কিংবা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যে নির্বাচন মনিটরিং কমিটি ছিল, সেখানে তিনি স্থানীয়ভাবে দায়িত্ব পালন করতেন, সভাপতির দায়িত্ব পালন করতেন। সরকারি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের জন্য যতটুকু কাজ করা যায় ততটুকু কাজ তিনি করেছেন।
এনটিভি অনলাইন : কলেজ জীবন পেরিয়ে রাজনীতিতে আপনার অংশগ্রহণের বিষয়ে জানতে চাই…
আফজাল হোসেন : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন আমি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের উত্তাল সময়ে সূর্য সেন হলের মাধ্যমে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করি। শুরুতেই হলের সাধারণ সম্পাদক হই। পরবর্তীকালে এই হলের ভিপি নির্বাচিত হই। এরপর ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হই। ছাত্ররাজনীতি থেকে বিদায় নেওয়ার পর আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে সম্পৃক্ত হই। সেখানে থাকা অবস্থাতেই কেন্দ্রীয় আওয়ামী উপকমিটির সদস্য নির্বাচত হই। তখনকার সময়ে আজকালের মতো সহ-সম্পাদকের কোনো পদ ছিল না।
এনটিভি অনলাইন : এটা কত সালের ঘটনা?
আফজাল হোসেন : এটি ১৯৯৫ সালের ঘটনা। আমি সাংস্কৃতিক উপকমিটির সদস্য হই। এই উপকমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন ভাষা-সংগ্রামী প্রয়াত গাজীউল হক। এরপর ২০০১ সালে আওয়ামী লীগের সহসম্পাদক হই এবং আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা কমিটির সঙ্গে কাজ করি। এরপর ২০০৯, ২০১২ এবং বর্তমান কমিটিতে তথ্য গবেষণা সম্পাদক হিসেবে কাজ করছি। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের নিয়মিত প্রকাশনা সম্পাদক, সহযোগী সম্পাদক হিসেবে কাজ করি। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের ৬৫ বছরে যে প্রকাশনা হয়েছে তাতে সম্পৃক্ত থেকেছি। দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে নিয়ে যে প্রকাশনা হয়েছে তাতে আমি সম্পৃক্ত আছি।
এনটিভি অনলাইন : নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে আপনি কি প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিয়েছিলেন?
আফজাল হোসেন : জি।
এনটিভি অনলাইন : ছাত্রলীগের হয়ে?
আফজাল হোসেন : জি। শেখ হাসিনার দেশে আগমনের পর থেকে তাঁর নির্দেশে আমরা কাজ করি। নব্বইয়ে তাঁরই নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা আন্দোলন করি।
এনটিভি অনলাইন : আমরা যতটুকু জেনেছি, আপনি সাংবাদিকতা করেছেন।
আফজাল হোসেন : জি। আমি বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সিনিয়র রিপোর্টার ছিলাম।
এনটিভি অনলাইন : আপনি রাজনীতি করতেন, তো হঠাৎ করে আপনি সাংবাদিকতায় এলেন, তাও আবার বাসসের সিনিয়র রিপোর্টার?
আফজাল হোসেন : আসলে আমি হঠাৎ করে বাসসের সিনিয়র রিপোর্টার হয়ে যায়নি। আমি লেখালেখি করতাম ছোটবেলা থেকেই। এর আগে আমি বিভিন্ন পত্রিকায় প্রদায়ক (কন্ট্রিবিউটর) হিসেবে কাজ করেছি।
এনটিভি অনলাইন : সাংবাদিকতা ছেড়ে দিলেন কেন?
আফজাল হোসেন : ছেড়ে দেয়নি, বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এসে আমিসহ আরো কয়েকজনকে চাকরিচ্যুত করে। পরবর্তী সময়ে উচ্চ আদালতের রায়ে চাকরি ফেরত পেয়েছিলাম কিন্তু আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পেয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করাকে ন্যায়সঙ্গত নয় ভেবে রিজাইন দিই। যদিও অনেকে রাজনীতির পাশাপাশি সাংবাদিকতা করেন। কিন্তু আমি স্বচ্ছতার খাতিরেই চাকরি ছেড়ে দিই।
এনটিভি অনলাইন : রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত...
আফজাল হোসেন : একজন মানুষের পরিপূর্ণ বিকাশের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড সহায়ক ভূমিকা পালন করে। আমি এদেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী প্রতিষ্ঠান সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছি। এখনো সম্পৃক্ত আছি। আমার নিজেরও একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন আছে। সব মিলিয়ে আমি মনে করি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড তো থাকবেই, সেই সঙ্গে নিজেকে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়ালে সমৃদ্ধ হওয়ার সুযোগ থাকে। যেমন আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইবার সিনেট সদস্য ছিলাম। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য। আমার সাবজেক্ট সমাজবিজ্ঞান, সেই সমাজবিজ্ঞান বিভাগের যে অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন আছে সেটারও সদস্য। আমার হল সূর্য সেনের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আছি। সব মিলে মানুষের নৈকট্য আমাকে সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক চর্চা করতে সহায়তা করছে।
এনটিভি অনলাইন : আবার রাজনীতির প্রশ্নে আসি। আপনি এবার পটুয়াখালী-১ থেকে মনোনয়ন চাইবেন।
আফজাল হোসেন : জি।
এনটিভি অনলাইন : আপনি তো প্রথমবারের মতো মনোনয়ন চাইছেন...
আফজাল হোসেন : না। আমি ২০০৮ সালে চেয়েছি। সাক্ষাৎকারে অংশ নিয়েছি, পাইনি। কিন্তু তখন থেকেই আমি নিজেকে পরবর্তী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত করতে শুরু করি। তখন থেকে আমি আমার এলাকার মানুষের সঙ্গে থেকে কাজ করতে শুরু করি। সেখানকার মানুষের সুখে-দুঃখে মিশে থাকার চেষ্টা করি। তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখি। সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সুস্থ রাজনৈতিক চর্চার মধ্য দিয়ে আগামী প্রজন্মকে এগোবার পথকে মসৃণ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ যে এগিয়ে যাচ্ছে, বিশেষ করে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জন্য তিনি যে উন্নয়ন করেছেন তা প্রকাশনার মাধ্যমে সমাবেশ করে এমনকি উঠান বৈঠক করে প্রচার করছি। প্রতি মাসে একাধিকবার এলাকায় যাচ্ছি। দলের জন্য কাজ করছি। মানুষের জন্য কাজ করছি। এত সব বিবেচনায় হয়তো আমি সে এলাকার মানুষের ভালোবাসা পাচ্ছি। সেখানকার মানুষ আমাকে ভালোবেসে গ্রহণ করেছে। যদি মনোনয়ন পাই তাহলে জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে এ প্রত্যাশা আমার আছে। সে আস্থা আমি অর্জন করেছি বলে আমার বিশ্বাস।
এনটিভি অনলাইন : পটুয়াখালী-১ আসনে আওয়ামী লীগের মধ্যে কোন্দল আছে বলে অভিযোগ ওঠে...
আফজাল হোসেন : আসলে বর্তমান আমরা নৌকার জন্য কাজ করছি। দল যাকে মনোনীত করবে তার জন্যই কাজ করব। মনোনয়ন পাওয়ার অধিকার সবার আছে। এটাকে ভিন্ন চোখে দেখার কোনো অবকাশ নেই। সব মিলে দলের চিন্তার বাইরে গিয়ে কাজ করার সুযোগ নেই। আমি ব্যক্তিগতভাবে আমার এলাকার মানুষ যেখানে আমি বেড়ে উঠেছি তাদের এবং আমার এলাকার মানুষের আবেগের সঙ্গে সম্পৃক্ত দল আওয়ামী লীগ ক্ষতিগ্রস্ত হবে, প্রশ্নের সম্মুখীন হবে এমন কাজ করতে পারি না। ফলে, কোনো কোন্দল আমাকে স্পর্শ করবে না।
এনটিভি অনলাইন : আপনি মনোনয়ন পেলে আপনার এলাকার প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা যিনি আছেন তিনি স্বাভাবিকভাবে নেবেন কি না…
আফজাল হোসেন : আমি আগেই বলেছি দল যাকে মনোনীত করবে তার জন্যই আমরা কাজ করব। তবে তিনি বয়সে প্রবীণ। প্রায় ৮০ ঊর্ধ্বে তাঁর বয়স। এর আগে তিনি সে এলাকা থেকে সংসদ সদস্য মনোনীত হয়েছেন। তাঁর কর্মদক্ষতা সম্পর্কে এলাকার মানুষ অবগত। দল এসব জেনে যাকেই মনোনীত করুক আমি মেনে নেব। ওনার বিষয়ে তো আর আমি বলতে পারি না। আমি বলব এলাকার মানুষের জন্য শ্রম, মেধা, মনন দিয়ে কাজ করার সক্ষমতা অর্জন করেছি। যদি দল থেকে মনোনয়ন পাই এবং জনগণ যদি আামাকে নির্বাচিত করে তাহলে আমি আমার সার্বিক শক্তি দিয়ে মানুষের জন্য কাজ করতে পারব। মানুষের জন্য কাজ করার এটাই আমার উপযুক্ত সময়।
এনটিভি অনলাইন : আপনি শুরুতে বলেছিলেন আপনার এলাকার মানুষ ঐতিহ্যগতভাবে আওয়ামী চিন্তা-চেতনায় বিশ্বাসী। কিন্তু সেখানের যে বর্তমান সংসদ সদস্য তিনি তো জাতীয় পার্টি থেকে মনোনীত। এতে করে কি এলাকার মানুষের চাওয়া-পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হচ্ছে বলে আপনি মনে করেন?
আফজাল হোসেন : আমার এলাকার যিনি এমপি তিনি জাতীয় পার্টি থেকে মনোনীত। ওনার নাম রুহুল আমীন হাওলাদার। তিনি বাকেরগঞ্জ এলাকার মানুষ। সেই আসন তাঁর স্ত্রীকে দিয়ে তিনি আমাদের এই আসনের সংসদ সদস্য হন। কিন্তু এই জায়গাটির চিত্র সম্পর্কে আমি আগে বলেছি। ১৯৭৯ সালে যখন সারা দেশের আওয়ামী লীগ ৩৯টি আসন পায় তখন পটুয়াখালী-১ ছিল। এ ছাড়া ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ পাস করে, কিন্তু ২০১৪ সালে জাতীয় পার্টির প্রার্থী থাকায় আওয়ামী লীগের সমর্থকরা নৌকায় ভোট দিতে পারেনি। ফলে আসনটি জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে চলে যায়। ফলে সরকার ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও আমাদের মানুষের যে প্রত্যাশা তা পূরণ হচ্ছে না। আমি এলাকায় যাই। মানুষদের চোখেমুখের ভাষা দেখি তারা আসলে এই আসনটি অন্য দলের মানুষ নেতৃত্ব দিক, এটি তারা চায় না। সে কারণে, এই এলাকার মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা বিবেচনা করে ঐতিহ্যগতভাবে এটি যে আওয়ামী লীগের চিন্তাচেতনা বহন করে সে বিবেচনায় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা নৌকার আসন হিসেবে ফিরিয়ে দেবেন।
এনটিভি অনলাইন : আপনারা যখন ছাত্ররাজনীতি করেছেন, সেই স্বাধীন বাংলাদেশে ছিল রাজনীতির উত্থান-পতনের সময়। বলা যায়, ক্রান্তিকালের মধ্য দিয়ে ছাত্ররাজনীতি করেছেন এবং তা অতিক্রম করেছেন। আজকের অবস্থা সে বিবেচনায় সে রকম না। আপনি কি মনে করেন আজকের ছাত্রনেতারা এ রকম সময় অতিক্রম করে মানুষের জন্য কাজ করার মনোভাব আছে?
আফজাল হোসেন : আসলে একেকটা সময় একেকটা বিষয়কে দাবি করে। আমি হতাশায় বিশ্বাসী নই। আজকের প্রজন্ম অন্যভাবে অন্য স্বপ্ন নিয়ে বেড়ে উঠছে। সংকট আসলে তারা তাদের যোগ্যতা দিয়ে মোকাবিলা করবে এবং সফল হবে। এরাই প্রবীণদের সঙ্গে সেতুবন্ধ তৈরি করে স্বাধীনতার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে এগোবে। কোনো কিছুই এদের রুখতে পারবে না। যারা হীনমন্যতায় আছে, ভ্রান্তির মধ্যে আছে, তারা দেশের স্বপ্নযাত্রায় শামিল হবে।
এনটিভি অনলাইন : বর্তমান সময়ে বিভিন্ন জায়গায় আলোচনার বিষয় হচ্ছে রাজাকারের সন্তানরা রাজনীতিতে আসতে পারবে কি না। আপনি কি মনে করেন?
আফজাল হোসেন : রাজাকারের সন্তানরা আওয়ামী রাজনীতিতে আছে বা আসবে কি না এ প্রশ্নে উত্তরের আগে বলব রাজাকার বা মানবতাবিরোধী অপরাধীদের সন্তানরা দেশপ্রেমের ক্ষেত্রে হীনমন্যতায় ভোগে। দেশের প্রতি তারা প্রতিশ্রুতিশীল হয় না। সে কারণেই তারা আওয়ামী লীগের চিন্তার সঙ্গে একমত হবে না। যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবাহী দল আওয়ামী লীগের চিন্তার সঙ্গে দ্বিমত, তারা আওয়ামী রাজনীতি করতে পারবে না।
এনটিভি অনলাইন : ইতোমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় তো রাজাকারের সন্তানরা পদপদবি করে নিয়েছে...
আফজাল হোসেন : এ জন্য আমাদের দলের পক্ষ থেকে শুদ্ধি অভিযান চলছে। আমার চিন্তার সঙ্গে দ্বিমত থাকলে তাদের ছাঁটাই করা হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সারা দেশে সে অভিযান চলছে।
এনটিভি অনলাইন : দেশের রাজনীতিতে অনিশ্চয়তা বেড়েছে। হয়তো অতীতেও ছিল। সে কারণে অনেক রাজনীতিকের সন্তানরা রাজনীতিতে আসেন না বা অনেক রাজনীতিক বাবা তাঁদের রাজনীতিতে আসতে দেন না। আপনি একজন রাজনীতিক হিসেবে আপনার সন্তানকে কি রাজনীতিতে দেখতে চান?
আফজাল হোসেন : আমার সন্তান কী হবে তা একান্তই তার ব্যাপার। পিতা হিসেবে আমি তার মৌলিক অধিকার সরবরাহ করে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবাহী বাংলাদেশের আদর্শের পথ দেখিয়ে, দেশের মানুষের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে সহায়তা করতে পারি। এত সব বিবেচনায় আমার সন্তান যে সিদ্ধান্ত নেবে পিতা হিসেবে আমি মেনে নেব।
এনটিভি অনলাইন : এনটিভি অনলাইনকে সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
আফজাল হোসেন : ধন্যবাদ আপনাকে।