সাজা শুনেই ক্ষমা চেয়ে কান্না ধর্ষক ‘ধর্মগুরুর’
দুই নারীভক্তকে ধর্ষণের দায়ে দোষী ভারতের স্বঘোষিত আধ্যাত্মিক গুরু গুরমিত রাম রহিম সিংকে ২০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন হরিয়ানা রাজ্যের রোহতাক কারাগারের অস্থায়ী আদালত। সাজা শোনার পরই তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস।
স্থানীয় সময় আজ সোমবার দুপুরে এ রায় দেন ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআইর বিশেষ আদালতের বিচারপতি জগদীপ সিং।
আদালতে উপস্থিত কয়েকজনের বরাত দিয়ে হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, রায় পড়ে শোনানোর সময় আদালতে সবার সামনে দুই হাতজোড় করে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাম রহিম। পরে সাজা শোনানো হলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। এ সময় সবার কাছে ক্ষমা চান তিনি।
এদিকে রায়ের সময় আদালতের ভেতরে মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাখতে বলা হয়। আদালতের নির্দেশের আগে রায় প্রকাশ করতে নিষেধ করা হয় গণমাধ্যমগুলোকেও।
রায় প্রকাশের পর ডেরা সাচা সৌদার পক্ষ থেকে জানানো হয়, সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করা হবে।
আজ রায় ঘোষণার সময় রোহতা এলাকায় লক্ষাধিক রাম রহিম ভক্ত জড়ো হয়। রোহতাকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শনিবার রাত থেকেই শহরটিতে ১০ কোম্পানি আধা সেনাবাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়।
রায়ের আগেই রোহতাক জেলায় জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। পরিচয়পত্র ছাড়া কেউ রোহতাকে ঢুকলে আটক করা হবে বলে জানানো হয়। এ ছাড়া জেলার সব গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় রাতে কড়া নজরদারির নির্দেশ দেয় প্রশাসন।
২০০২ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ি এবং পাঞ্জাব ও হরিয়ানা রাজ্যের প্রধান বিচারপতিদ্বয়ের কাছে বেনামি চিঠিটি লেখেন হরিয়ানার সিরসা শহরের ‘গুরু’ রাম রহিমের ডেরার (আস্তানা) এক নারী। সেখানে আনা হয় রাম রহিমের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যার হুমকির অভিযোগ। তুলে ধরা হয় ডেরার ভেতরে বিভিন্ন অনাচারের কথা।
বিভিন্ন চড়াই-উৎরাই পার হওয়ার পর শুক্রবার দেওয়া রায়ে প্রমাণিত হয় সেই চিঠিতে লেখা অনেক অভিযোগ। ভারতের বিশেষ আদালত রাম রহিম সিংকে দোষী সাব্যস্ত করেন। ভারতীয় দণ্ডবিধির (আইপিসি) ৩৭৬ (ধর্ষণ) ও ৫০৬ (সন্ত্রাসী হুমকি) ধারায় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। এই ধারাবলে তাঁর সর্বনিম্ন সাত ও সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ হওয়ার কথা ছিল।
এদিকে শুক্রবার রাম রহিমকে দোষী সাব্যস্ত করার পর থেকে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। সহিংসতায় নিহত হয় কমপক্ষে ৩৮ জন। আহত হন ২০০ জনের বেশি মানুষ।