‘হাসিনা আপা আইব যে…’
কক্সবাজার থেকে উখিয়া উপজেলায় যাওয়ার পথটা খুব বেশি বড় নয়। সরু পথ। তবে পিচঢালা, খুব বেশি খানাখন্দ নেই।
তারপরও আজ সোমবার সাত-সকালেই দেখা গেল বেশ কয়েকজন রাস্তায় সংস্কারের কাজ করছে। সড়কের যে জায়গাগুলোতে পিচ উঠে গেছে সেখানে বালু ফেলে পিচ ঢালার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সড়কের পাশের ঝোপঝাড়ও পরিষ্কার করছে কয়েকজন।
‘কী করেন ভাই?’ জিজ্ঞেস করতেই আব্দুল মজিদ নামের এক শ্রমিক সাড়া দিলেন। বলেন, ‘ভাই, পথ পরিষ্কার করি। কাল হাসিনা আপা আইব যে…’। আবার নিজের কাজে মন দেন মজিদ।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের দেখতে এবং শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন করতে আগামীকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উখিয়া উপজেলায় আসছেন। তার অংশ হিসেবেই কক্সবাজার থেকে উখিয়া যাওয়ার সড়কে স্থানীয় প্রশাসন, স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সংস্কার কাজ করছে।
এলজিইডির কর্মচারী দয়াল সরকার জানালেন, রাস্তার পাশে ঝোপঝাড়সহ ছোটখাটো কাজ করানো হচ্ছে। তাঁর অধীনে কাজ করছেন দুঃস্থ নারীরা। একটি প্রকল্পের অধীনে কাজ করছেন তাঁরা। দিনভিত্তিক চুক্তিতে কাজ শেষে টাকা পাবেন শ্রমিকরা।
জাতিসংঘের দেওয়া তথ্য মতে, সহিংসতার কারণে গত ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৫ দিনে মিয়ানমার থেকে তিন লাখের মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। এ পরিসংখ্যান লাফিয়ে দিনে প্রায় ২০ হাজার করে বাড়ছে।
বাংলাদেশ সরকার মানবিক কারণে এসব শরণার্থীকে প্রাথমিক সাহায্য দিয়ে উখিয়ার বালুখালীতে বন বিভাগের জয়গায় তাদের থাকার জন্য অস্থায়ীভাবে আশ্রয়কেন্দ্র তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। সরকারের এই প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছে জাতিসংঘ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ।
যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বারবারই আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ও দেশের প্রতি সহযোগিতার জন্য আহ্বান জানিয়ে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মতো একটি ছোট জনবহুল দেশের জন্য এই বিশাল শরণার্থীর বোঝা বহন করা কঠিন।
সরকার মিয়ানমারের ঢাকাস্থ শার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সকে ডেকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি রাখাইনে হামলা-নির্যাতন বন্ধেরও দাবি জানানো হয়েছে।
এই অবস্থার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শনে যাচ্ছেন।