ধর্ষক বাবার চরম ‘যৌন আসক্তি’, নারীসঙ্গের অভাবে অস্থির
ভারতের স্বঘোষিত আধ্যাত্মিক গুরু গুরমিত রাম রহিম সিং এখন দেশটিতে ধর্ষক বাবা বলেই পরিচিত। আর এই ধর্ষক বাবা কারাগারে নারীসঙ্গের অভাবে অস্থির হয়ে উঠেছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাঁরা রাম রহিমের এই সমস্যাকে ‘উইথড্রয়াল সিম্পটম’ বলে উল্লেখ করেছেন।
স্থানীয় সময় শনিবার রাম রহিমকে পরীক্ষা করে এমনটাই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন একজন মনোবিদও। এ ছাড়া কারাগারে যাওয়ার পরে রাম রহিমের ডায়াবেটিস ধরা পড়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক জানান, বাবার যৌন আসক্তি রয়েছে। জেলের মধ্যে নারীসঙ্গ পাচ্ছেন না বলে তিনি দিনদিন অস্থির ও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠছেন। তবে এই যৌন আসক্তি কমানোর চিকিৎসা সম্ভব বলে দাবি করেছেন তিনি। দেরি হলে এই সমস্যা আরো বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
রাম রহিম মাদক সেবন করতেন কি না তা জানা যায়নি। তবে কথিত আছে, ১৯৮৮ সালের পর থেকে তিনি নাকি কখনো মদ ছুঁয়ে দেখেননি।
রাম রহিমের ডেরা সাচ্চা সৌদার প্রাক্তন সদস্য গুরদাস সিং টুর জানিয়েছেন, বাবা মদ পান করতেন না ঠিকই, তবে এনার্জি ড্রিংক ও যৌনক্ষমতা বাড়ানোর টনিক খেতেন নিয়মিত। অস্ট্রেলিয়া ও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হতো সেই সমস্ত এনার্জি ড্রিংক ও যৌন ক্ষমতা বাড়ানোর টনিক।
ডেরার দুই সাধ্বীকে ধর্ষণের ঘটনায় দোষী প্রমাণিত হওয়ায় বাবা রাম রহিমকে ২০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত। তবে মামলার শুনানির সময় আদালতে দাঁড়িয়ে তিনি নিজেকে নপুংসক বলে ঘোষণা দেন। রাম রহিম দাবি করেন, ১৯৯০ সালে ডেরা-প্রধান হওয়ার পর পরিবারের সংসর্গ ত্যাগ করেন তিনি। তাঁর কোনো কামনা বাসনা ছিল না।
রাম রহিমের ওই দাবি নাকচ করে ডেরা সাচ্চা সৌদার সাবেক সদস্য গুরদাস সিং টুর জানিয়েছেন, রাম রহিম মিথ্যা বলেছেন। তিনি কখনোই নপুংসক ছিলেন না। ১৯৯০ সালে ডেরার দায়িত্বে আসেন রাম রহিম। তাঁর বিরুদ্ধে ১০ বছর ধরে ভক্তদের ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। ডাক্তারি পরীক্ষার কথা উঠলেই তিনি বারবার নিজেকে অক্ষম বলে দাবি করতেন। বলতেন, নিজের স্ত্রী ছাড়া অন্য কারো সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হননি।
গুরদাস আরো বলেন, অনেক আগেই রাম রহিমের ডাক্তারি পরীক্ষা করানো উচিত ছিল। ২০ বছর সাজা ঘোষণার পর কথিত মেয়ে হানিপ্রীতের সঙ্গে কারাগারে থাকার অনুমতি চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু রাজি না হওয়ায় কারা কর্তৃপক্ষকে হুমকিও দেন তিনি।
এ ছাড়া হানিপ্রীতির সঙ্গে ফোনে যোগাযোগও রাখতে চেয়েছিলেন রাম রহিম। কিন্তু তাঁর সেই দাবিও কারা কর্তৃপক্ষ নাকচ করে দেয় বলে জানান গুরুদাস।