আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি কারা?
মিয়ানমার সরকার যখন দাবি করল, ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা রাখাইন রাজ্যে দুই ডজনের বেশি পুলিশ ও সেনাক্যাম্পে হামলা চালিয়েছে, তখন অনেকেই একে একটি গতানুগতিক ‘সরকারি ভাষ্য’ হিসেবেই দেখেছিলেন। এর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে যথেষ্টই সন্দেহ ছিল। কিন্তু একদিন পরেই যখন ‘আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি’ বা ‘আরসা’ নামের একটি সংগঠন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইউটিউবে ভিডিওবার্তার মাধ্যমে এই হামলা দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিল, ‘সরাসরি যুদ্ধের ডাক দিল’, তখন বিদ্রোহীদের তৎপরতা সম্পর্কে কারো সন্দেহ রইল না।
মিয়ানমারও আরসাকে একটি নিষিদ্ধ সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দেয়। এশিয়া টাইমস নামে একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে আরসার এক শীর্ষ নেতা দাবি করেন, ‘তাঁরা জেহাদি না, জাতীয়তাবাদী’। তখন আরসার পরিচয় আরো একটু প্রকাশ্যে আসে।
রাখাইন থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা শরণার্থীদের মধ্যে অর্ধেকের বেশিই শিশু। নারী-পুরুষরা আসলেও যুবকদের সংখ্যা সেখানে তুলনামূলকভাবে কম। অভিভাবকরা বলছেন, তাঁর পরিবারের অনেক যুবক মিয়ানমারে রয়ে গেছে ‘যুদ্ধ করার’ জন্য। সেই ‘যোদ্ধারা’ আশা করেন, আরাকান একদিন স্বাধীন হবে এবং স্বাধীন দেশে তাঁরা আবার তাদের পরিবারের সঙ্গে মিলিত হবে। বলার অপেক্ষা রাখে না, এই যোদ্ধারা আরসার হয়ে লড়ছে।
আর ২৫ আগস্ট পুলিশ ও সেনাক্যাম্পে হামলার মধ্য দিয়ে আরসা প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের দৃষ্টি কাড়তে সক্ষম হয়। ওয়াশিংটন ন্যাশনাল ওয়ার কলেজের অধ্যাপক জাকারি আবুজা এই হামলার ঘটনাটি মূল্যায়ন করে এক নিবন্ধে লিখেছেন, ‘৭৭ জন বিদ্রোহীর প্রাণের বিনিময়ে ১২ জন পুলিশের জীবন- একে কোনোভাবেই রণকৌশলের জায়গা থেকে জয় বলা যাবে না; কিন্তু কৌশলগত জায়গায় আরসার জয় হয়েছে।’
যুদ্ধের ১৫ দিনের মাথায় আরসা একতরফাভাবে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলেও মিয়ানমার তাতে সাড়া দেয়নি। এখনো প্রতিদিন রাখাইনে শত শত বাড়িঘর পুড়িয়ে দিচ্ছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।
কারা এই আরসা?
মধ্যপ্রাচ্যের কাতারভিত্তিক বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আরসার পূর্ব নাম হচ্ছে ‘হারকাহ্ আল ইয়াকিন’ বা ‘ন্যায়ের যুদ্ধ’। ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে রাখাইনের মডুর শহরতলির তিনটি পুলিশ ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে আরসা প্রথম আবির্ভূত হয়। সে সময় নয় পুলিশ সদস্য নিহত হন। মাত্র কয়েক ডজন লোক ছুরি আর লাঠি নিয়ে ক্যাম্পে অতর্কিতে হামলা চালায় এবং কর্মকর্তাদের হত্যার পর হালকা অস্ত্র নিয়ে পালিয়ে যায়।
অক্টোবরের শেষে আরসার প্রধান নেতা আতাউল্লাহ আবু আমার জুনুনি ১৮ মিনিটের এক ভিডিওবার্তায় এই হামলাকে সমর্থন জানিয়ে এর জন্য মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সহিংসতায় উসকানিকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, ‘৭৫ বছর ধরে সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন-অত্যাচার চালিয়েছে… এ কারণেই ৯ অক্টোবর আমরা তাদের ওপর আক্রমণ চালিয়েছি। আমরা তাদের এই বার্তাই দিতে চেষ্টা করেছি যে, হামলা যদি বন্ধ না হয় তাহলে আমাদের আত্মরক্ষার অধিকার অবশ্যই আছে।’
আরসা নেতা আতাউল্লাহ একজন রোহিঙ্গা। তাঁর পরিবার রাখাইন থেকে বিতাড়িত হয়ে পাকিস্তানে আশ্রয় পায়। করাচিতে তাঁর জন্ম। পরে তিনি সৌদি আরব চলে যান। আরসার এই নেতা নিজের সম্পর্কে এর বেশি কিছু জানাতে চাননি।
ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব এক্সস্ট্রিমিজম-এর গবেষক মং জার্নির মতে, আরসা হচ্ছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ‘ধারাবাহিক নির্যাতন আর গণহত্যার অনুপাতে’ জন্ম নেওয়া একটি সংগঠন। মং জার্নি রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলমানদের জীবনযাত্রাকে জার্মানির নাজিদের ক্যাম্পে থাকা নির্যাতিতদের মতোই দেখেন। তিনি বলেন, ‘একদল আশাহীন মানুষ, যারা নিজেদের ও সম্প্রদায়ের লোকজনের মুক্তির জন্য বা রক্ষার জন্য যেকোনো ধরনের আত্মরক্ষার জন্য একটি গ্রুপে সংগঠিত হয়েছে।’
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের মতে, মূলত রোহিঙ্গা যুবক-তরুণদের দিয়েই গঠিত হয়েছে আরসা। তাঁরা ‘আধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানের গেরিলা যুদ্ধের’ প্রশক্ষিণপ্রাপ্ত। ২০১২ সালের রাখাইনে নারকীয় হত্যাকাণ্ড শুরুর পর অনেক রোহিঙ্গা যুবক বাঁচার তাগিদে এলাকা ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তাদের অনেকেই তখন বিপদসঙ্কুল দীর্ঘ সমুদ্রপথ ছোট ছোট যানে করে পাড়ি দিয়ে মালয়েশিয়ার উপকূলে পৌঁছে। এভাবে তিন বছর চলার পর ২০১৫ সালের দিকে মালয়েশিয়ার কোস্টগার্ড সেই পথটি বন্ধ করে দেয়। নির্যাতিত যে অংশটি রাখাইন ছেড়ে কোথাও যেতে পারেনি তাদের একটি অংশই মূলত আরসার সঙ্গে ধীরে ধীরে সম্পৃক্ত হয়। ‘চরম দারিদ্র্য, নিজ দেশে স্বীকৃতি না পাওয়া ও চলাচলের ক্ষেত্রে কঠোর নিয়ন্ত্রণের’ ভেতর থেকেই রোহিঙ্গারা এ পথ বেছে নিয়েছে বলে মনে করে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ।
কী চায় আরসা
আরসার দাবি, তারা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বসবাসকারী ১০ লাখ রোহিঙ্গার নাগরিকত্বসহ মৌলিক অধিকারের জন্য লড়ছে। তাদের মূলনীতি ‘রক্ষা করা, উদ্ধার করা ও প্রতিরোধ গড়া’। আরসা নিজেকে কোনো ধরনের ‘সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর তকমা’ থেকে দূরে রাখার দাবি করে।
চলতি বছরের ১৫ আগস্ট এক বার্তায় আতাউল্লাহ বলেন, ‘মানুষের মতো বেঁচে থাকার জন্যই আত্মরক্ষার্থে বৈধভাবে লড়াই করার অধিকার আমাদের রয়েছে। আরসা তিন বছর ধরে রয়েছে, কিন্তু রাখাইনের কোনো মানুষ বা রোহিঙ্গাদের সম্পদের কোনো ধরনের ক্ষতি আমরা করিনি।’
তবে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের এশিয়ার পরিচালক আনহা নীলাকান্তন মনে করেন, আরসা তাদের আদর্শ পরিষ্কারভাবে তৃণমূলে তুলে ধরতে পারেনি। আমরা কীভাবে বুঝব যে, তাঁরা রোহিঙ্গাদের অধিকার আদায়ের জন্য লড়ছে, এর পেছনে অন্য কিছু নেই।
আরসায় কতজন রোহিঙ্গা আছে এটা বোঝা যাচ্ছে না উল্লেখ করে নীলাকান্তন আরো বলেন, তাদের সঙ্গে যে স্থানীয় বা আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠীর সম্পর্ক নেই এরও প্রমাণ নেই।
আরসার অস্ত্র কী ধরনের
২৫ আগস্ট সেনা ও পুলিশ ক্যাম্পে হামলার পর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী একটি বিজ্ঞপ্তি প্রচার করে। তাতে বলা হয়, বিদ্রোহীরা ছোট অস্ত্র, লাঠি, ছুরি, রামদা ও বল্লম নিয়ে রাখাইনের মিতাইক গ্রামে হামলা চালায়।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের বরাত দিয়ে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরসার অস্ত্র মূলত ঘরে তৈরি দেশীয় মানের। তবে এটা একেবারে শৌখিন কোনো ব্যাপার নয়। আফগানিস্তানের মতো জয়গায় বড় বড় যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের সহায়তা নেওয়ার কিছু প্রমাণও আছে।
আরসার আইএস সম্পৃক্ততা?
আরসা কি মধ্যপ্রাচ্যের তথাকথিত জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গির গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত? এমন প্রশ্নের মধ্যেই গত ১৩ সেপ্টেম্বর আল-কায়েদা একটি বিবৃতি দিয়ে রোহিঙ্গা মুসলিমদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য মুসলিম উম্মাহর প্রতি আহ্বান জানায়। তার একদিন বাদেই আরসার নেতা আতাউল্লাহ ‘আল-কায়েদা, ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড দ্য লেভান্ত (আইএসআইএস), লস্কর-ই তৈয়্যেবা বা অন্য কোনো আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে নিজেদের সম্পর্ক নেই’ বলে দাবি করেন।
তবে ওয়াশিংটন ন্যাশনাল ওয়ার কলেজের শিক্ষক অধ্যাপক জাকারি আবুজার প্রশ্ন, আরসা কি এই অবস্থায় এসে তার অবস্থার পরিবর্তন করতে পারে? তিনি আরো বলেছেন, আরসা কী এই অবস্থায় এসে বাইরের উগ্রপন্থী গোষ্ঠীগুলোর সমর্থন চাচ্ছে, নাকি এরই মধ্যে তারা সেটি পেয়ে গেছে? কারণ, এই রোহিঙ্গা ইস্যুটি এখন মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় ঘটনা। ফলে এই ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে ‘রাজনীতিবিদ, মুসলিম মধ্যবিত্ত এবং উগ্রপন্থীদের’- এই তিন পক্ষের কে চ্যাম্পিয়ন হবে সেটিও দেখার ব্যাপার।
এ প্রসঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার একটি ঘটনার উল্লেখ করেছেন জাকারি আবুজার। তিনি লিখেছেন, ইন্দোনেশিয়ার সরকার জাকার্তার মিয়ানমার দূতাবাসে হামলার দুটি ছক নস্যাৎ করে দিয়েছে। এই ছকগুলো কষেছিল আইএস-সমর্থকরা। তখন অনেকেই আটক হয়েছিলেন। সে সময় এর মধ্যে একজন বাংলাদেশির আটকের খবর গণমাধ্যমে বেশ সাড়া ফেলেছিল।
ভিন্ন কোনো উপায় ছিল?
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমরা দীর্ঘদিন ধরেই নির্যাতিত। ১৯৪৮ সালে স্বাধীন বার্মা রাষ্ট্রের সৃষ্টির পর থেকে অসংখ্যবার রোহিঙ্গা মুসলমানদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার অস্বীকার করা হয়েছে। এই নির্যাতিত মানুষরা নিজ দেশের নাগরিকত্ব হারিয়ে আজ বিশ্বের সবচেয়ে বড় দেশহীন জনগোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছে। এখনো ১০ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিকত্বহীন অবস্থায় মিয়ানমারে অবস্থান করছে।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বেসামরিক সশস্ত্র গোষ্ঠী ও বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদীদের ধারাবাহিক নির্যাতনের মুখে রোহিঙ্গারা বিভিন্ন সময়ে বিপদসঙ্কুল পথ পাড়ি দিয়ে বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছে। মূলত ১৯৭০ দশক থেকে রোহিঙ্গারা মিয়ানমার ছাড়তে শুরু করে। গত সাড়ে চার দশকে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত হয়েছে। এসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রভৃতি দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে।
ক্রমে ক্রমে রোহিঙ্গাদের সংকুচিত করা হয়েছে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায়। যার প্রতিফলন ঘটেছে তাদের জীবনযাত্রায়, চলাফেরায় এমনকি অন্যান্য মৌলিক চাহিদার ক্ষেত্রেও। রোহিঙ্গা মুসলিমদের পড়াশোনার কোনো অধিকার নেই। পড়ার জন্য সর্বোচ্চ মাধ্যমিক স্কুল বা মাদ্রাসা। চলাফেরা নিজ শহর মংডু পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। সন্তান নেওয়ার ক্ষেত্রেও রয়েছে বাধ্যবাধকতা। মিয়ানমারের মূল জনগোষ্ঠীর মধ্যেও রোহিঙ্গাদের সম্পর্কে রয়েছে ঘৃণার মনোভাব।
এই ভীতিকর অবস্থায় রোহিঙ্গাদের বিদ্রোহী হওয়া ছাড়া আর কোনো পথ কি খোলা ছিল? কেন ‘হাতে তৈরি অস্ত্র নিয়ে ছোট্ট গ্রুপে যুক্ত হয়ে বিশ্বের ক্ষমতাশালী ও আধুনিক সেনাবাহিনীর একটির বিরুদ্ধে দাঁড়াল রোহিঙ্গারা’?
এর একটি উত্তর দিয়েছেন রোহিঙ্গা অধ্যুষিত গ্রামের একজন নেতা। তাঁর ভাষায়, ‘ভেড়ার মতো মরার চেয়ে তাঁদের কাছে যুদ্ধ করে মরে যাওয়া অনেক ভালো।’
আরসা ও বাংলাদেশ
ব্যাপক সংখ্যক রোহিঙ্গা দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করছে। সেই সংখ্যা বাংলাদেশের জন্য বোঝা। আরসার প্রধান আতাউল্লাহ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বিশ্বের অনেক দেশ বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, ‘বাংলাদেশের স্বার্থের ক্ষতি করে’ এমন কোনো কর্মকাণ্ড আরসা কখনোই করবে না।
আরসাপ্রধানের এই বক্তব্য ছিল ১৮ আগস্টের। কিন্তু ২৫ আগস্ট হামলার পর পরিস্থিতি অনেকটাই ভিন্ন। মিয়ানমারের পুলিশ ও সেনা ক্যাম্পে হামলার পর পরই বিদ্রোহীদের দমন করার জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যৌথ সামরিক অভিযানের প্রস্তাব দেওয়া হয় মিয়ানমারকে। এটা নিশ্চয়ই আরসার জন্য বিব্রতকর! আরসা একে কীভাবে নেবে?
ফলে এখন আরসা চাইবে, বাংলাদেশের বাইরে এই অঞ্চলের আরো কোনো রাষ্ট্রের সহযোগিতায় তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে।