যুক্তরাষ্ট্রে প্রাণঘাতী যত বন্দুক হামলা
যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাস উপত্যকার মান্দালয় বে রিসোর্ট ও ক্যাসিনো এলাকায় রোববার সন্ধ্যায় বন্দুকধারীর হামলায় কমপক্ষে ৫৯ জন নিহত হয়েছেন। একটি সংগীতানুষ্ঠান চলার সময় এ হামলা চালান ৬৪ বছর বয়সী স্টিফেন প্যাডক। তাঁকে গুলি করে হত্যার দাবি করেছে পুলিশ।
যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৪৯ সালের পর লাস ভেগাসের হামলাটিই ছিল সবচেয়ে প্রাণঘাতী। এর আগে ২০১৬ সালে দেশটির অরল্যান্ডোতে একটি নৈশক্লাবে হামলায় ৪৯ নিহত হয়েছিলেন। বিভিন্ন নথি ঘেঁটে দেশটিতে গত দুই দশকে ঘটে যাওয়া এমন উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হামলার বিবরণ দিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
মান্দালয় বে, লাস ভেগাস (২০১৭) : মান্দালয় বে রিসোর্ট ও ক্যাসিনোতে একটি সংগীত উৎসবে যোগদানরত লোকজনের ওপর প্রকাশ্যে গুলি চালান স্টিফেন প্যাডক। এতে ৫৯ জন নিহত ও কমপক্ষে ৫০০ জন আহত হয়েছেন।
পালস নাইটক্লাব (২০১৬) : ২০১৬ সালের ১২ জুন যুক্তরাষ্ট্রের অরল্যান্ডো শহরে সমকামীদের একটি নৈশক্লাবের ভেতর বন্দুকধারীর হামলায় ৪৯ জন নিহত হন। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ওমর মতিন নামের ওই হামলাকারী পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) এ হামলার দায় স্বীকার করে।
ভার্জিনিয়া টেক (২০০৭) : দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক ২৩ বছর বয়সী শিক্ষার্থী সিউং-হুই চো ২০০৭ সালের এপ্রিলে ভার্জিনিয়া টেক ইউনিভার্সিটিতে নৃশংসতা চালান। আত্মহত্যার আগে তিনি ২৭ শিক্ষার্থী ও পাঁচ শিক্ষককে হত্যা করেন।
স্যান্ডি হুক (২০১২) : ওই বছরের ডিসেম্বরে ২০ বছর বয়সী যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক অ্যাডাম ল্যাঞ্জা নিজের মাসহ প্রাপ্তবয়স্ক ছয়জনকে হত্যা করেন। এর আগে তিনি কানেক্টিকাটের নিউটাউনে স্যান্ডি হুক এলিমেন্টারি স্কুলে ২০ শিশুকে হত্যা করেন। হামলার পর তিনি আত্মহত্যা করেন।
টেক্সাস রেস্তোরাঁ (১৯৯১) : ১৯৯১ সালের অক্টোবরে ৩৫ বছর বয়সী যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক জর্জ হেনার্ড টেক্সাসের কিলিন শহরের একটি রেস্তোরাঁয় গুলি করে ২২ জনকে হত্যা করেন। এর পর তিনি নিজের গুলিতে নিহত হন।
সান বার্নারডিনো (২০১৫) : যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সান বার্নারডিনোতে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে এ হামলা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক রিজওয়ান ফারুক ও তাঁর পাকিস্তানি স্ত্রী তাসফিন মালিক সান বার্নারডিনোর একটি সামাজিক সেবাকেন্দ্রে অফিস পার্টিতে হামলা চালান। এতে ১৪ জন নিহত ও ২২ জন আহত হন। পরে পুলিশের গুলিতে ওই দম্পতি নিহত হন।
ফোর্ট হুড সেনাঘাঁটি (২০০৯) : ২০০৯ সালের নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীতে কর্মরত মনোবিদ নিদাল হাসান কিলিন শহরে নিজের ঘাঁটিতে প্রকাশ্যে গুলি চালান। এতে ১৩ জন নিহত ও ৪২ জন আহত হয়।
নিউইয়র্ক অভিবাসী কেন্দ্র (২০০৯) : ওই বছরের এপ্রিলে বিংহ্যামটন শহরে ভিয়েতনামের অভিবাসী জিভারলি আন্তারেজ ওংয়ের গুলিতে ১৩ জন নিহত হন। পরে হামলাকারী আত্মহত্যা করেন।
নেভি ইয়ার্ডের প্রধান কার্যালয় (২০১৩) : ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে ওয়াশিংটনে এক নেভি ইয়ার্ডের প্রধান কার্যালয়ে গুলি চালান সাবেক কর্মী, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক অ্যারন অ্যালেক্সিজ। পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার আগে ওই হামলাকারী ১২ জনকে হত্যা করেন।
অরোরা, কলোরাডো (২০১২) : ২০১২ সালের জুলাইয়ে কলোরাডোর অরোরায় একটি সিনেমা হলে ব্যাটম্যান সিরিজের একটি ছবি চলাকালে রাতে এ হামলা হয়। ক্যালিফোর্নিয়ায় জন্ম নেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক জেমস হোমস বুলেটপ্রুফ পোশাক পরে প্রকাশ্য গুলি চালিয়ে ও টিয়ার গ্যাস ছুড়ে ১২ জনকে হত্যা ও ৭০ জনকে আহত করেন। তিনি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছেন।
কলম্বাইন হাই স্কুল (১৯৯৯) : ওই বছরের এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের দুই কিশোর এরিক হ্যারিস ও ডিলান ক্লেবোল্ড গুলি করে ১২ সহপাঠী ও এক শিক্ষককে হত্যা করে। কলোরাডোর লিটলটনে অবস্থিত কলম্বাইন হাই স্কুলের ওই হামলাকারী দুজন নিজেদের গুলিতে নিহত হন।