রোহিঙ্গাদের নিবন্ধন ৩ লাখ ছাড়িয়েছে
মিয়ানমার থেকে নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা নাগরিকদের বায়োমেট্রিক নিবন্ধন তিন লাখ ছাড়িয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত গত দেড় মাসে তিন লাখ তিন হাজার ৩১৬ জন রোহিঙ্গা নিবন্ধিত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার একদিনেই নিবন্ধিত হয়েছে ১১ হাজার ৭৩৬ জন। উখিয়া উপজেলার কুতুপালং-১, কুতুপালং-২, নোয়াপাড়া, থাইংখালী-১, থাইংখালী-২, বালুখালী ও টেকনাফ উপজেলার লেদা—এই সাতটি ক্যাম্পে নিবন্ধনের কাজ চলছে।
পাসপোর্ট অ্যান্ড ইমিগ্রেশনের তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয় গত ১১ সেপ্টেম্বর থেকে। সেনাবাহিনীর সদস্যরা এ কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগিতা করছেন।
পাসপোর্ট অ্যান্ড ইমিগ্রেশনের উপপরিচালক আবু নোমান মোহাম্মদ জাগির বলেন, ‘এখন প্রতিদিন গড়ে ১১ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা নিবন্ধিত হচ্ছে। নিবন্ধন কেন্দ্রে ভিড় অনেক বেড়েছে। নিবন্ধন কর্মীদের দিনভর ছবি তুলে ও তাদের নাম-ঠিকানা লিপিবদ্ধ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’
বালুখালী ক্যাম্পে নিবন্ধন কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় দীর্ঘ লাইন। সেনাবাহিনীর সদস্যরা রোহিঙ্গাদের ছবি তুলছেন, তাদের নাম-ঠিকানা লিপিবদ্ধ করছেন এবং একই সঙ্গে তাদের একটি করে ছবিসংবলিত নিবন্ধন কার্ড ধরিয়ে দিচ্ছেন। অনেকটা ওয়ান স্টপ সার্ভিসের মতো।
দীর্ঘক্ষণ স্ত্রী ও চার সন্তানকে নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন হালিম উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘ছবি না তুললে নাকি ত্রাণ পাব না। আমাদের ক্যাম্পের অনেকেই নিবন্ধন করেছেন। তাই ছেলেমেয়েদের নিয়ে এসেছি। বাংলাদেশ সরকার আমাদের জন্য অনেক করেছে। খাদ্য, ওষুধ, থাকার ব্যবস্থা সব করছে।’
নিবন্ধন কার্ড হাতে নিয়ে কেন্দ্র থেকে বের হচ্ছিলেন বালুখালী ক্যাম্পের তানজিয়া খাতুন। ছবিসংবলিত কার্ড দেখিয়ে বলেন, ‘সকালেই এসেছি। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে নিবন্ধন করলাম। কার্ডও দিল। এখন আর সাহায্য পেতে কোনো সমস্যা হবে না।’
কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের (আরআরআরসি) রিপোর্ট অনুযায়ী ২৫ আগস্টের পর থেকে গত বুধবার পর্যন্ত বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী মিয়ানমার নাগরিকের সংখ্যা ছয় লাখ তিন হাজার। সেই হিসেবে আরো প্রায় তিন লাখ রোহিঙ্গা এখনো নিবন্ধনের বাইরে রয়েছে।