মিরপুরে আগুনে নিহত অন্তত ১৩
রাজধানীর মিরপুরে একটি কারখানায় আগুন লেগে তিন নারীসহ অন্তত ১৩ জন নিহত হয়েছেন। এতে দগ্ধ ও আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে কর্তব্যরত কর্মকর্তা (ডিউটি অফিসার) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল আরেফিন জানান, আজ শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মিরপুর-১ নম্বর সেকশনের সনি সিনেমা হলের পেছনে নাসিম প্লাজার নিচতলায় অ্যাপ্রো প্লাস্টিক অ্যান্ড কেমিকেল কারখানায় আগুন লাগে। আগুন লাগার পর ভবনে থাকা গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আগুনের তীব্রতা বেড়ে যায়। ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিটের চেষ্টায় সন্ধ্যা ৭টা ৫ মিনিটে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে।
আরেফিন জানান, ‘ভবন থেকে অন্তত ১৩টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ভেতর আরো মৃতদেহ থাকতে পারে। আগুন লাগার কারণ এখনো জানা যায়নি।’
মিরপুর শাহআলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিমুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে এনটিভিকে জানান, ১৩ জনের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে নিহতদের কারো পরিচয় জানা যায়নি।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোজাম্মেল হক জানান, এ ঘটনায় নিহত ১৩ জনের লাশ আনা হয়েছে। এ ছাড়া বার্ন ইউনিটে ভবনের নিরাপত্তাকর্মী কামাল হোসেন (৪০), রবিউল ইসলাম (২৪) ও তৌহিদুল ইসলামসহ (৪৫) চারজনকে ভর্তি করা হয়েছে। হতাহত অন্য ব্যক্তিদের পরিচয় এখনো জানা যায়নি।
ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডের পর তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আসলামুল হক, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খান। তাঁরা অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা তদারকির পাশাপাশি দুর্ঘটনায় আহতদের খোঁজ নেন।
অগ্নিকাণ্ডের পর ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারকে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আসলামুল হক। তিনি জানান, নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে দাফন-কাফনের জন্য প্রাথমিকভাবে ২০ হাজার টাকা এবং আহতদের প্রত্যেককে প্রাথমিকভাবে পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক বলেন, অগ্নিকাণ্ডের এই ঘটনা তদন্তে ফায়ার সার্ভিস তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে। এ কমিটি আগামী তিনদিনের মধ্যে তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দেবে।
রাত সোয়া ৯টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে যদি কর্তৃপক্ষের গাফিলতি থাকে তবে অবশ্যই পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এমন একটি আবাসিক এলাকায় এ ধরনের কারখানা থাকা উচিত নয় বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
শ্রম প্রতিমন্ত্রী আরো জানান, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তের জন্য কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপমহাপরিদর্শক মো. ইকবালের নেতৃত্বে চার সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত কমিটিকে তিনদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে।