দেশে এখন মার্শাল ডেমোক্রেসি : বিএনপি
সরকার গণতন্ত্রের কবর রচনা করে দেশে মার্শাল ডেমোক্রেসি প্রবর্তন করেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই অভিযোগ করা হয়েছে।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় পাঠানো ওই বিবৃতিতে বলা হয়, “সমগ্র দেশবাসী অত্যন্ত পরিতাপের সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে ক্ষমতালিপ্সু অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা গদি রক্ষার জন্য এবং অবৈধ ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার মানসে গণতন্ত্রের কবর রচনা করেছেন। দেশে গণতন্ত্রের নামে ‘মার্শাল ডেমোক্রেসি’ প্রবর্তন করেছেন।”
চলমান আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোট, দেশের সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল ও জোট, বরেণ্য নাগরিকবৃন্দ, সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী, সাংবাদিক বন্ধুরাসহ সব গণতন্ত্রকামী সংগ্রামী জনগণের প্রতি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে আহ্বান জানাই, অবরুদ্ধ ও বিলুপ্তপ্রায় গণতন্ত্রের মুক্তির দাবিতে মৌলিক, মানবাধিকার ও আইনের শাসন এবং ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে আপনারা ঐক্যবদ্ধভাবে অবিরাম সংগ্রাম চালিয়ে যান।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বর্তমানে দেশে একদলীয় সরকার ব্যবস্থা কায়েমের পর একদলীয় রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রবর্তন করার মানসে এক ব্যক্তির ইচ্ছাকেই আইনের উৎসে পরিণত করা হচ্ছে। জনগণের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক সব অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। সভা-সমাবেশ ও কথা বলার অধিকার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। দেশের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল-বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অবরুদ্ধ করা হয়েছে দেশের তিন বারের প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন ও ২০ দলীয় জোট নেতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে। বস্তুত সারা দেশের জনগণই আজ অবরুদ্ধ এবং বাংলাদেশ নামের এই জনপদ বিশাল কারাগারে পরিণত হয়েছে।’
বিবৃতিতে সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, গতকাল গভীর রাতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়কে জনসভায় ঘোষণা দিয়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। ইন্টারনেট, ব্রডব্যান্ড ও কেব্ল লাইনসহ সব বৈদ্যুতিক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। সরকারি দল ঘোষণা দিয়েছে পানি, গ্যাস ও খাবার সরবরাহ বন্ধ করে দেবে। সভ্য দুনিয়ার ইতিহাসে এ রকম ঘৃণিত ও জঘন্য নজির কোথাও পাওয়া যাবে না। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। অবিলম্বে বিছিন্ন বিদ্যুৎসহ সব যোগাযোগ মাধ্যম পুনঃস্থাপনের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরকে আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় উদ্ভূত যেকোনো পরিস্থিতির জন্য সরকার দায়ী থাকবে এবং এর পরিণতি কখনোই শুভ হবে না।’
বিবৃবিতে বিএনপি বলে, ‘আমরা দেশের এবং বিশ্বের সব মানবাধিকার সংস্থা, সংগঠন ও মানবাধিকারকর্মীদের কাছে আহ্বান জানাই, আপনারা আসুন, দেখুন বাংলাদেশে গণতন্ত্রের নামে কত ঘৃণ্য জংলীতন্ত্র কার্যকর হয়েছে ভোটারবিহীন এই সরকারের বদৌলতে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কাছে আবেদন জানাই আপনারা বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি অনুধাবন করে যথাযথ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।’
বিবৃতিতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। সেই সঙ্গে রিজভীসহ বিএনপি ও জোটের সব নেতা-কর্মীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানানো হয়।