কোনো ফাঁদে আমরা পা দিব না : ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা জানি তাঁরা আমাদেরকে অনেক উসকানি দেবে, ফাঁদ ফাঁদবে। কোনো ফাঁদে আমরা পা দিব না।’
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ থেকে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবো। একই সঙ্গে আমরা গণতন্ত্রকে মুক্ত করব।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে নিয়ে বিএনপিকে ভাঙ্গার ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে দল আরও ঐক্যবদ্ধ আছে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্যদিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা হবে।’
বিএনপির মহাসচিব আরো বলেন, ‘আজকে আমরা যে সংগ্রাম করছি এটা বিএনপির জন্য সংগ্রাম নয়,খালেদা জিয়ার জন্য সংগ্রাম নয় এই সংগ্রাম দেশকে রক্ষা করার সংগ্রাম, গণতন্ত্রকে রক্ষার জন্য সংগ্রাম। এদেশের স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্ব রক্ষার সংগ্রাম।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যিনি গণতন্ত্র মুক্ত করার জন্য আন্দোলন করেছেন তাঁকেই কারাগারে বন্দী থাকতে হচ্ছে। মিথ্যা সাজানো মামলায় তাঁকে কারাগারে পাঠিয়েছে সরকার।’
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আপনারা বলেছেন বিএনপি ভেঙে যাবে কিন্তু বিএনপি ভাঙেনি বরং আরও ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সমস্ত নেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধ হয়ে তারেক রহমানের নেতৃত্বে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে জাল নথি তৈরী করে মিথ্যা মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগার পাঠিয়েছে। এটি আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ফসল। বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপিকে বাইরে রেখে আগামী নির্বাচন করার জন্যই তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
খন্দকার মোশাররফ হোসেন আরো বলেন, ‘সরকার মনে করেছিল খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠালে বিএনপি দুর্বল হয়ে যাবে, ভেঙে যাবে। কিন্তু তাদের সে স্বপ্ন পূরণ হয়নি। উল্টো এর মাধ্যমে নেতৃত্বের মধ্যে আরও বেশি ঐক্য বৃদ্ধি পেয়েছে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেওয়ায় বিএনপির নেতাকর্মীরা আরও শক্তিশালী হয়েছে। সরকার চেয়েছিল খালেদা জিয়া ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মনোবল ভাঙতে কিন্তু তাঁদের সে ষড়যন্ত্র সফল হয়নি।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বিএনপি এখন আগের চেয়ে আরো বেশি একতাবদ্ধ। খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানোর পরও ক্ষমতাসীন দলের উসকানিতে কোন প্রকার সহিংস কর্মকান্ডে জড়ায়নি দলের নেতাকর্মীরা।’
স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘যারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে তাঁরা জনসভা করে নৌকা মার্কায় ভোট চাচ্ছে। কারণ তাঁরা আবারও একদলীয় নির্বাচন করে ক্ষমতায় থাকতে চায়। কিন্তু বিএনপিকে বাহিরে রেখে কোনো নির্বাচন হবে না দেশে।’
মওদুদ আহমদ বলেন, ‘বাংলাদেশের মাটিতে আর কোনো একদলীয় নির্বাচন করতে দেয়া হবে না। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে আমরা আইনি প্রক্রিয়া চালিয়ে যাব। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে সুষ্ঠ ও নিরপক্ষ নির্বাচন আদায় করব। বেগম খালেদা জিয়াকে একদিন জেলে রাখলে আ.লীগের ১০ লাখ ভোট কমবে।’
আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস-চেয়ারমান মেজর (অব:) হাফিজ উদ্দীন আহমেদ, এনাম আহমেদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবদীন ফারুক, হাবিবুর রহমান হাবিব, আতাউর রহমান ঢালী, গোলাম আকবর খন্দকার, মনিরুল হক চৌধুরী, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ।