ডাক্তারের ওষুধে খালেদা জিয়ার যন্ত্রণা লাঘব হচ্ছে না : ফখরুল
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারান্তরীণ বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ‘আগের চেয়ে খারাপ হয়েছে এবং তা উদ্বেগজনক’ অবস্থায় পৌঁছেছে বলে দাবি করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ শনিবার বিকেলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর খালেদা জিয়ার সঙ্গে কারাগারে দেখা করে এসে এই দাবি করেন।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘খালেদা জিয়ার সঙ্গে স্বাস্থ্যের বিষয়েই আলোচনা হয়েছে। খালেদা জিয়া ঠিকমত খেতে পারছেন না। আর মূল বিষয় হচ্ছে, তাঁর জন্য যে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে, তাঁরা যে ওষুধ দিচ্ছে সেই ওষুধ তাঁর রোগ ও যন্ত্রণা লাঘবে কোনো কাজে আসছে না। সুতরাং, পরিবেশটা পরিবর্তন করা প্রয়োজন। এজন্য আমরা বার বার তাঁর পছন্দমত ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর দাবি জানাচ্ছি।’
এর আগে বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও নজরুল ইসলাম খান কারাগারে প্রবেশ করেন।
ফিরে এসে তিন নেতাই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন।
এ সময় কয়েক দফা খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করার অনুমতি না দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘অসুস্থতার কারণে তিনি দেখা করতে পারেননি। এই কতদিন খালেদা জিয়া অসুস্থ ছিলেন, এখনও তিনি অসুস্থ আছেন। আর আজকে আমরা তাঁকে যা দেখেছি, এতে আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছি। তাঁর শরীর আসলেই অত্যন্ত খারাপ। এবং তিনি যে হাসপাতালে (ইউনাইটেড হসপিটালে) চিকিৎসার কথা বলেছেন, সেখানে রেখে তাঁর আশু চিকিৎসা প্রয়োজন।’
‘আর তিনি (খালেদা জিয়া) যে বর্ণনা দিয়েছেন, তাঁর বা হাত আস্তে আস্তে শক্ত হয়ে যাচ্ছে এবং বা হাতের ওজনও বেড়ে গেছে। বাম পা থেকে শুরু করে পিছন পর্যন্ত ব্যথা বেড়ে গেছে। সুতরাং এখন সাধারণভাবে হাঁটাচলা করাও তাঁর জন্য মুশকিল হয়ে পড়েছে। আর এটা আস্তে আস্তে নিউরো সমস্যার সৃষ্টি হয় এবং ক্ষয় হয়ে যায়। আর এক সময় এটা প্যারালাইসিসের মত হয়ে যেতে পারে।’
বিএনপি চেয়ারপারসনের চোখের সমস্যা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘খালেদা জিয়ার ডান চোখটা লাল হয়ে গেছে। তাই আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি, সরকারের আর বিলম্ব না করে অবিলম্বে তিনি যে হাসপাতালে যেতে চেয়েছেন ইউনাইটেড হসপিটাল, সেখানে রেখে তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া বিশেষভাবে প্রয়োজন। এটা সরকারের দায়িত্ব। আর যদি এর কোনো ব্যত্যয় ঘটে বা শারীরিক কোনো ক্ষতি হয় তার দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে।’
প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা খালেদা জিয়ার সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়া দেশবাসীর কাছে তাঁর সুস্থ্যতার জন্য দোয়া চেয়েছেন। আজ জাতি ও দেশের জন্য যে দু:সময় চলছে, তার যেন অবসান ঘটে এবং মানুষের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের আন্দোলন করে যেতে বলেছেন গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য।