শোভনের স্বাধীনতার গল্প
একাত্তরের ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ সময়ে এক উঠতি বয়সী অকুতোভয় কিশোরের আত্মত্যাগের আখ্যান নিয়ে গড়ে উঠেছে ‘শোভনের স্বাধীনতা’ ছবির গল্প। এ কিশোর শোভনের বোধে আর মননের জগতে দেশমাতৃকার মতো শ্রেষ্ঠ আর কিছু নেই। সেই অনুভূতিকে সে ধারণ করে রাখে আমৃত্যু।
শোভনের স্বাধীনতার গল্প শুরু হয়েছে ২৫ মার্চের কালরাত্রির দুর্যোগ থেকে। মৃতের নগরী ঢাকা। প্রাণ নিয়ে যে যেদিকে পারছে পালিয়ে যাচ্ছে। শোভনের বড় ভাই সুমন মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিতে ভারত চলে যায়। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে মা-বাবা শোভনকে গ্রামে ওর মেজ মামার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।
মামার বাড়িতে শোভন আবিষ্কার করে তার মামা একজন স্বাধীনতাবিরোধী। পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে হাত মিলিয়ে গ্রামের নিরীহ মুক্তিকামী মানুষের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালাচ্ছে সে। বিদ্রোহ করে শোভন। মামার সাথে ঝগড়া করে গ্রাম ছাড়ে।
কিন্তু শহরে এসেও স্বস্তি পায় না শোভন। কারণ তাকে নিয়ে মা-বাবার উৎকণ্ঠা। সে ধীরে ধীরে একা হয়ে পড়ে। অন্যদিকে ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ এই সময়ে দেশের জন্য কিছু করতে না পারার অসহায়ত্বও তাকে ভাবিয়ে তোলে। সহপাঠী জহির, জুয়েল, বুলবুলদের চিন্তা ভাবনাও কেমন বিক্ষিপ্ত বোধ হয় তার কাছে। আরেক সহপাঠী বাদল তো কট্টর পাকিস্তানপন্থী। তার সাথে অনেক বিষয়ে মতোবিরোধ দেখা দেয় শোভনের। সময় ও পরিস্থিতি বিবেচনা করে বাদলের আস্ফালন হজম করতে বাধ্য হয় শোভন।
কিন্তু শোভন শামিল হতে চায় এ যুদ্ধে তবে বাধা হয়ে দাঁড়ায় বয়স। সুযোগ খুঁজতে থাকে সে। এভাবেই চূড়ান্ত একটি পরিণতির দিকে এগোতে থাকে চলচ্চিত্রটি।
রশীদ হায়দারের উপন্যাস থেকে ছবিটির সংলাপ, চিত্রনাট্য লিখেছেন মানিক মানবিক। পরিচালনাও করেছেন তিনি। ছবিতে অভিনয় করেছেন ফেরদৌস, নিপুন, আতাউর রহমান, খায়রুল আলম সবুজ, চিত্রলেখা গুহ, ওয়াহিদা মল্লিক জলি, স্বাধীন খসরু, চৈতি, মাহমুদুল ইসলাম মিঠু, স্বদেশ সুমন, রুদ্র রাইয়ান প্রমুখ। ছবিটি এ বছরের মার্চ মাসের মাঝামাঝি মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে।