ওটি রুম থেকে বাথরুম, বের হলো ১২ সোনার বার
ভারতগামী এক যাত্রী তাঁর পায়ুপথ থেকে ১২টি সোনার বার বের করে দিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে যশোরের বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমস তল্লাশি কেন্দ্র থেকে মহিউদ্দিন ভূইয়া (২৮) নামের ওই যাত্রীকে আটক করেন শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।
মহিউদ্দিন ভূইয়ার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার তিতাস উপজেলার বিরামকান্দি গ্রামে। বিকম পাস এবং বেকার পরিচয় দেওয়া ওই যাত্রী গত এক বছরে ২০ বার ভারতে যাওয়া-আসা করেছেন বলে জানিয়েছেন শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।
বেনাপোল শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাইফুর রহমান বলেন, মহিউদ্দিন ভূইয়া আজ সকাল ৮টায় ভারতে যাওয়ার জন্য বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্টে আসেন। শুল্ক গোয়েন্দা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই যাত্রীকে শনাক্ত করে নজরদারিতে রাখেন। কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে চলে যাওয়ার সময় তাঁকে চ্যালেঞ্জ করা হয়। তাঁর হাটাচলায় অস্বাভাবিকতা থাকায় শুল্ক গোয়েন্দার সন্দেহ আরো ঘণীভূত হয়।
প্রাথমিকভাবে, মহিউদ্দিন কোনোভাবেই তাঁর কাছে স্বর্ণ থাকার কথা স্বীকার করছিলেন না। চেকপোস্টে শুল্ক গোয়েন্দার অফিসে এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদেও তাঁর কাছে সোনার বার থাকার কথা অস্বীকার করতে থাকেন। এরপর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় নাভারনের রজনী ক্লিনিকে। করানো হয় এক্স-রে। এক্স-রে প্রতিবেদনে সোনার বারের অস্তিত্ব ধরা পড়ে। কিন্তু যাত্রী এই এক্স-রে প্রতিবেদন সঠিক নয় বলে চ্যালেঞ্জ করেন।
এরপর শুল্ক গোয়েন্দাদের উদ্যোগে চিকিৎসক দিয়ে তলপেট কেটে স্বর্ণ বের করার জন্য হাসপাতালের অস্ত্রোপচার কক্ষে (ওটি রুম) নেওয়া হয়। এরপর তিনি নমনীয় হন। অস্ত্রোপচার ছাড়াই স্বর্ণ বের করে দেবেন বলে শুল্ক গোয়েন্দাদের জানান।
এরপর চলে স্বর্ণ বের করার পালা। মহিউদ্দিন ভূইয়াকে শুল্ক গোয়েন্দা অফিসে পানি, কলা ও কেক খেতে দেওয়া হয়। পরানো হয় লুঙ্গি। বিভিন্ন সংস্থা ও সাংবাদিকের উপস্থিতিতে বাথরুমের ভেতরে বিশেষ কায়দায় পায়ুপথ দিয়ে কালো স্কচটেপ মোড়ানো ১২টি সোনার বার বের করে আনেন ২৮ বছরের যাত্রী মহিউদ্দিন। ১২টি সোনার বারের ওজন এক কেজি ৩০০ গ্রাম। এর বাজার মূল্য প্রায় ৬৫ লাখ টাকা।
শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, বেনাপোলে এসে বাস কাউন্টারে বাথরুমে গিয়ে মহিউদ্দিন সোনার বারগুলো পায়ুপথে ঢোকান। তিনি ঢাকার তাঁতীবাজার থেকে বারগুলো কেনেন এবং কলকাতায় সুভাস নামের এক ভারতীয় নাগরিক তাঁর কাছ থেকে এই ১২টি বার বুঝে নিতেন। এই চালানে তাঁর কয়েক লাখ টাকা লাভ হতো বলে জানিয়েছেন। মামুন নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে অংশীদারে এই চোরাচালান করেন বলে তিনি স্বীকার করেন।
শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আটক সোনার বারগুলো আইনি প্রক্রিয়া শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেওয়া হবে। ফৌজদারি মামলা দায়ের করে মহিউদ্দিনকে বেনাপোল পোর্ট থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।