‘কম প্রসাধনে অসুন্দর লাগবে এটা ঠিক না’
কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, ‘একটু কম প্রসাধনীতে খুব অসুন্দর লাগবে এটা ঠিক না।’ তিনি আজ শুক্রবার বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
আজ শুক্রবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ওই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বাজেটের বিভিন্ন দিক ও আকার নিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
নারীদের ব্যবহারের উপযোগী বিদেশি প্রসাধনীর (কসমেটিকসের) ওপর এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে কর বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, এতে আগামী জাতীয় নির্বাচনে নারী ভোটারদের মধ্যে সরকারের ব্যাপারে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে কিনা কিংবা নারী ভোটারদের ক্ষুব্ধ করবে কি না? তবে এমন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যান অর্থমন্ত্রী।
তখন সেখানে বসা সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহি চৌধুরী বলেন, ‘মডার্ন প্রসাধনের অনেক রকম ডেফিনেশন হচ্ছে। এখন ট্রেডিশনাল প্রসাধন হলে এক কথা আর মডার্ন হলে সুন্দর থাকা সেটাই বড় প্রসাধনী। কেমিকেল জিনিস ব্যবহার করাই খারাপ।’
এরপরই কৃষিমন্ত্রী হাতে মাইক নেন। তিনি বলেন, ‘আমি একটু কবির ভাষায়ই বলি, কবির ভাষা হচ্ছে- অলক কুসুমও না দিও/ শিথিলও করবী বাঁধিও/ কাজল বিহন সুজল নয়নে/ হৃদয় দুয়ারে ঘা দিও/’।
এ সময় মঞ্চে হাসির রোল ওঠে। কৃষিমন্ত্রী বলে যান, ‘কাজেই একটু কম প্রসাধনীতে খুব অসুন্দর লাগবে এটা ঠিক না আরকি।’ এরপর পুরো হল জুড়ে সবাই হেসে উঠেন।
সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী ছাড়া উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবরা। এছাড়াও মঞ্চের সামনে দর্শক গ্যালারিতে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পীকার ফজলে রাব্বী মিয়াসহ সরকারের পদস্ত কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য চার লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
প্রস্তাবিত বাজেটে মোট রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে তিন লাখ ৩৯ হাজার ২৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্রে আয় ধরা হয়েছে দুই লাখ ৯৬ হাজার ২০১ কোটি টাকা। এ ছাড়া এনবিআরবহির্ভূত সূত্র থেকে কর রাজস্ব ধরা হয়েছে নয় হাজার ৭২৭ কোটি টাকা। করবহির্ভূত খাত থেকে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৩৩ হাজার ৫৫২ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে সার্বিক বাজেট ঘাটতি এক লাখ ২৫ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা দেখানো হয়েছে। এ ঘাটতি অর্থায়নে বৈদেশিক সূত্র থেকে ৫৪ হাজার ৬৭ কোটি টাকা এবং অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৭১ হাজার ২২৬ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ৪২ হাজার ২৯ কোটি টাকা এবং সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য ব্যাংকবহির্ভূত উৎস থেকে ২৯ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা সংস্থানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।