আর্জেন্টিনা ভক্তরা ভাড়া না দিলেও চলবে!
‘আমার দলের সমর্থক মামাদের জন্য রিকশা ভাড়া চাওয়া-চাওয়ি নাই। আর্জেন্টিনার ভক্তরা ভাড়া দিলেও হবে না দিলেও চলবে। তবে অধিকাংশ মামাই আমাকে চা খেতে ভাড়া বেশি দেয়। আর ব্রাজিলের জার্সি পরা থাকলে তাঁকে আমি রিকশায় তুলি না।’
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পেট্রোবাংলার সামনে দাঁড়িয়ে এক আর্জেন্টিনার ভক্ত রিকশাচালক আমির হামজা (৩৫) কথাগুলো এভাবেই বলেছেন।
আমির হামজা একজন রিকশাচালক। তিনি আর্জেন্টিনার সমর্থক। ১০ বছর ধরে ঢাকায় রিকশা চালান। তেজগাঁওয়ের বেগুনবাড়ির একটি মেসে থাকেন। আমির হামজার সঙ্গে পেট্রোবাংলার সামনে কথা হয় এনটিভি অনলাইনের। তিনি বলেন, ‘ভাড়া ২০ টাকা হলে আমি আর্জেন্টিনার ভক্তদের কাছ থেকে ১০ টাকা চাই। অর্ধেকের বেশি ভাড়া আমি চাই না সেই খেলা শুরু হওয়ার দিন থেকে। তবে ভাড়া কম চাইলে তারা খুশি হয়ে আরো বেশি ভাড়া দেয়।’
আমির হামজা আরো বলেন, ‘আর্জেন্টিনার জার্সি পরে রিকশায় উঠলে তার জন্য আরো ছাড়। খানিক আগে একজন জার্সি পরে রিকশায় উঠল। নেমেছে হাতিরঝিলে। তাঁর সঙ্গে কথা বলে ভালো লাগায় আমি ভাড়া নেইনি। তখন সেই মামা রিকশা থেকে নেমে আমাকে চা, কলা, কেক খাওয়ালো। ভালোই লেগেছে। তবে ব্রাজিলের জার্সি পরা থাকলে আমি তাকে রিকশায় তুলি না।’
আর্জেন্টিনার সমর্থক রিকশাচালক আমির হামজা। তিনি আর্জেন্টিনার ভক্তদের কাছ থেকে অর্ধেকের বেশি ভাড়া নেন না। আজ শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পেট্রোবাংলার সামনে থেকে তোলা। ছবি : এনটিভি
গল্পের ছলে গতকাল বিকেলে আমির হামজার রিকশায় উঠা এক যুগলের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘ছেলেটি আর্জেন্টিনা আর মেয়েটি ব্রাজিলের জার্সি পরে এসেছে। ছেলেটা আমার রিকশায় উঠবে আর মেয়েটা উঠবে না। তখন আমি বললাম আপা অন্য রিকশায় যাক আর আপনি আমার রিকশায় চলেন। কিন্তু ছেলেটা বললেন, তাঁকে আমি বিয়ে করব সঙ্গে আর্জেন্টিনারও সমর্থক বানাতে চাই! কিছু সময় গণ্ডগোল করে পরে আমার রিকশায় উঠল দুজন। কারওয়ানবাজার থেকে হাতিরঝিলে যাবে। আমার রিকশার সাজ দেখে মামা আমাকে ১০০ টাকা দিল।’
আজকের আর্জেন্টিনা আর ফ্রান্সের খেলা নিয়ে আমির হামজা বেশ চিন্তায় আছেন। খেলা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে ফ্রান্সের বিপক্ষে আর্জেন্টিনাই জিতবে। আজ খেলা দেখব শাহবাগ মোড়ে। জিতে তারপর বাসায় ফিরব। আর যদি আর্জেন্টিনা হেরে যায় তাহলে খারাপ লাগবে। আমার রিকশায় সব সময় আর্জেন্টিনার পতাকা থাকে। কত ব্রাজিল সমর্থক রিকশাওয়ালা যে কত কিছুই বলে। আর্জেন্টিনা যেদিন হেরে গিয়েছিল সেদিন তাদের অত্যাচারে আমাকে পতাকা খুলে ফেলতে হয়েছিল।’