সাউদি-ম্যাককালামে পিষ্ট ইংল্যান্ড
ইংল্যান্ডকে নিয়ে যেন ছেলেখেলা করল নিউজিল্যান্ড। ওয়েলিংটনে প্রথমে টিম সাউদির তোপের আগুনে পুড়ে ১২৩ রানে অলআউট হয়ে গেছে ইংল্যান্ড। তার পর ব্রেন্ডন ম্যাককালামের ব্যাটের ঝড়ে মাত্র ১২ ওভার ২ বলে ৮ উইকেটের জয় নিশ্চিত করে ফেলেছে নিউজিল্যান্ড। টানা তৃতীয় জয় দিয়ে বিশ্বকাপের সহ-আয়োজকরা কোয়ার্টার ফাইনালের পথে অনেকখানি এগিয়েও গেছে। অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়ার পর নিউজিল্যান্ডের কাছেও বিধ্বস্ত ইংল্যান্ডের সামনে শেষ আটে যাওয়ার কঠিন চ্যালেঞ্জ।
বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের আগে ব্রিসবেনে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় ‘মার্সিয়া’। ওয়েস্টপ্যাক স্টেডিয়ামে শুক্রবার উঠেছে আরেকটি ‘ঝড়’। ২৫ বলে ৭৭ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে ইংলিশ বোলারদের রীতিমতো পিষে ফেলেছেন ম্যাককালাম। বিশ্বকাপে সবচেয়ে কম বল খেলে ফিফটির রেকর্ডও গড়েছেন কিউই অধিনায়ক। শুক্রবার পঞ্চাশে পৌঁছাতে তাঁকে খেলতে হয়েছে মাত্র ১৮ বল। ওয়ানডের সেরা টুর্নামেন্টে দ্রুততম ফিফটির আগের রেকর্ডও ছিল ম্যাককালামের। ২০০৭ বিশ্বকাপে কানাডার বিপক্ষে ২০ বলে অর্ধশতক করে কীর্তিটা গড়েছিলেন তিনি।
২৫ বলে আটটি চার ও সাতটি ছক্কায় ৭৭ রান করে ম্যাককালাম যখন আউট হলেন, কিউইদের জয় তখন ১৯ রান দূরে। বিস্ময়করভাবে তখন খেলা হয়েছে মাত্র ৭.১ ওভার! মার্টিন গাপটিলের সঙ্গে ১০৫ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়ে বিদায় নেন ম্যাককালাম। নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক থাকলে মধ্যাহ্নবিরতির আগেই হয়তো খেলা শেষ হয়ে যেত।
শুরুতে অবশ্য সব আলো কেড়ে নিয়েছিলেন সাউদি। বিশ্বকাপে চতুর্থ বোলার হিসেবে এক ম্যাচে সাত উইকেট নেওয়ার বিরল কীর্তি গড়ে ইংল্যান্ডকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দিয়েছেন এই ডানহাতি পেসার। এর আগে সাত উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব ছিল অস্ট্রেলিয়ার গ্লেন ম্যাকগ্রা ও অ্যান্ডি বিকেল এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের উইনস্টন ডেভিসের।
ইনিংসের পঞ্চম ও নিজের তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে ইয়ান বেলকে বোল্ড করে সাউদির তোপ দাগার সূচনা। সাউদির পরের ওভারে অন্য ওপেনার মইন আলিও বোল্ড! শুরুর জোড়া ধাক্কা ইংল্যান্ড সামলে উঠতে পারেনি।
১৪তম ওভারে নিউজিল্যান্ডকে তৃতীয় সাফল্য এনে দেন ট্রেন্ট বোল্ট, গ্যারি ব্যালান্সকে কেইন উইলিয়ামসনের ক্যাচ বানিয়ে। তখন স্কোর ৫৭/৩। চতুর্থ উইকেটে ৪৭ রানের জুটি গড়ে দলকে ভালো জায়গায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন জো রুট ও অধিনায়ক ওয়েন মরগান। ২৬তম ওভারে এই জুটি ভেঙে দেন ড্যানিয়েল ভেট্টরি।
এর পর সাউদির দুর্দান্ত বোলিংয়ের সামনে আর দাঁড়াতে পারেনি ইংল্যান্ড। ২৭ থেকে ৩৩তম ওভারের মধ্যে জেমস টেলর, জস বাটলার, ক্রিস ওকস, স্টুয়ার্ট ব্রড ও স্টিভেন ফিনকে আউট করে প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন সাউদি। তাঁর বোলিং ফিগারটা এককথায় অসাধারণ, ৯-০-৩৩-৭। ওয়ানডেতে সেরা বোলিংয়ের তালিকায় এটার অবস্থান ষষ্ঠ। ম্যাককালাম ব্যাট হাতে ঝড় তুললেও এমন দুর্দান্ত বোলিং ম্যাচসেরার পুরস্কার এনে দিয়েছে সাউদিকে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ইংল্যান্ড : ৩৩.২ ওভারে ১২৩ (বেল ৮, মইন ২০, ব্যালান্স ১০, রুট ৪৬, মরগান ১৭, টেলর ০, বাটলার ৩, ওকস ১, ব্রড ৪, ফিন ০, অ্যান্ডারসন ১; সাউদি ৭/৩৩, ভেট্টরি ১/১৯, মিল্ন ১/২৫, বোল্ট ১/৩২)
নিউজিল্যান্ড : ১২.২ ওভারে ১২৫/২ (গাপটিল ২২, ম্যাককালাম ৭৭, উইলিয়ামসন ৯*, টেলর ৫*; ওকস ২/৮)
ফল : নিউজিল্যান্ড ৮ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা : টিম সাউদি।