আল-আমিন ক্ষমার অযোগ্য : সুজন
শুরুর আগেই শেষ আল-আমিন হোসেনের বিশ্বকাপ-স্বপ্ন। ১৫ সদস্যের চূড়ান্ত দলে জায়গা করে নিলেও শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে একটি ম্যাচও না খেলে অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে ফিরতে হচ্ছে এই পেসারকে। আল-আমিন ঠিক কী অপরাধ করেছেন, কোনো ধরনের ‘দুর্নীতি’র সঙ্গে তাঁর জড়িয়ে পড়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে কি না, এসব প্রশ্নে দেশের ক্রিকেটাঙ্গন এখন তোলপাড়। বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন এসবের কোনো স্পষ্ট জবাব দেননি। তবে আল-আমিনের ‘অপরাধ’ যে ক্ষমার অযোগ্য, তা নিয়ে তাঁর মনে কোনো সন্দেহ নেই।
বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের রাত ১০টার পর হোটেলের বাইরে থাকার নিয়ম নেই। তবে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ব্রিসবেনে তারও অনেক পরে, রাত ১২টার দিকে হোটেলে ফিরেছিলেন আল-আমিন। টিম ম্যানেজমেন্টের অনুমতি ছাড়া এত রাত পর্যন্ত বাইরে থাকা শৃঙ্খলা ভঙ্গের শামিল জানিয়ে সুজনের মন্তব্য, ‘আমাদের দলের নিয়ম হলো বাইরে গেলে রাত ১০টার মধ্যে অবশ্যই হোটেলে ফিরতে হবে। দেরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে টিম ম্যানেজমেন্টকে আগেই তা জানাতে হবে। কিন্তু আল-আমিন আমাকে কিছু না জানিয়ে রাত পৌনে ১২টা-১২টার দিকে ফিরেছে।’
সুজন জানিয়েছেন, আল-আমিনের এত রাতে ফেরার কথা আইসিসির দুর্নীতি দমন ও নিরাপত্তাবিষয়ক ইউনিটের (আকসু) সদস্যদের কাছ থেকে প্রথম জানতে পেরেছেন তাঁরা। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়কের বক্তব্য, ‘এখানে অ্যান্টি করাপশনের অনেক লোক থাকে। ওরাই আসলে দেখেছে আর পরের দিন আমাকে জানিয়েছে।’ তবে আল-আমিন অত রাতে বাইরে কী করছিলেন বা এর মধ্যে অন্য কিছুর আশঙ্কা আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে কিছু বলতে রাজি হননি সুজন।
মাত্র একবার ভুল করার কারণে আল-আমিনকে দেশের ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত একটু বেশি কঠোর হয়ে গেল কি না এমন প্রশ্নের জবাবে সুজন বলেছেন, ‘শৃঙ্খলার ব্যাপারে আমরা খুব কঠোর। বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে এসব ভুল আমাদের পিছনে ঠেলে দিতে পারে। এসব চিন্তা থেকেই তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকেও যে শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য শাস্তি পেতে হয়েছিল, সে কথাও উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার।
আফগানিস্তানকে হারিয়ে শুভ সূচনার পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়ে যাওয়ায় এক পয়েন্ট পেয়েছে মাশরাফির দল। ৩ পয়েন্ট নিয়ে ‘এ’ গ্রুপে তৃতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের এখন ফুরফুরে মেজাজে থাকার কথা। কিন্তু ‘আল-আমিন কাণ্ড’ সাকিব-মুশফিকদের হতোদ্যম করে দেবে কি না, এমন আশঙ্কাও উঁকি দিচ্ছে অনেকের মনে।
সুজন অবশ্য আশাবাদী, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটা ভুলে পেশাদার মানসিকতা নিয়ে পরের ম্যাচের প্রস্তুতি নেবে খেলোয়াড়রা, ‘তারা জানে অন্যায়ের শাস্তি এ রকম হবেই। একজন সতীর্থর সঙ্গে এ রকম হলে কারোরই ভালো লাগার কথা নয়। তবে আমার মনে হয় সবাই এটাকে পেশাদার মনোভাব নিয়ে গ্রহণ করেছে।’
২৬ ফেব্রুয়ারি মেলবোর্নে বাংলাদেশের পরবর্তী প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা।