ববির অ্যাকশন দৃশ্যে আলমগীর
আগামী ২৭ মার্চ মুক্তি পেতে যাচ্ছে ববি অভিনীত ‘অ্যাকশন জেসমিন’ ছবিটি। ছবিটির শুটিং শুরু হয় ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর। ইফতেখার চৌধুরী পরিচালিত এই ছবিতে ববির বিপরীতে অভিনয় করেছেন চিত্রনায়ক সায়মন।
ছবির গল্পে দেখা যাবে দুঃসাহসী ববি অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার একজন পুলিশ অফিসার। ‘জেসমিন’-এর ভূমিকায় অভিনয় করতে গিয়ে বেশ কয়েকটি ঝুকিপূর্ণ অ্যাকশন দৃশ্য করতে হয়েছে ববিকে। আর এসব দৃশ্যে ববির বদলে তাঁর ডামি হিসেবে অভিনয় করেছেন ফাইটার আলমগীর।
ছবিটির একটি অ্যাকশন দৃশ্যের শুটিং হচ্ছিল ২৫ফেব্রুয়ারি। এফডিসির সুইমিং পুলের পাশে সেই শুটিংয়ে পাওয়া গেল নায়িকা ববি ও ফাইটার আলমগীরকে। ববির শট নেওয়ার পর একই রকমের পোশাক পড়ে শট দিচ্ছিল আলমগীর। পর্দায় দেখলে মনে হবে ববিই যেন সব শট দিয়েছেন।
প্রতিটি ছবিতেই অ্যাকশন দৃশ্য থাকে। যেসব দৃশ্যে ঝুঁকি বেশি থাকে সেগুলো করে থাকেন আলমগীরদের মতো ফাইটাররা। শুটিংয়ের বিরতিতে কথা হয় আলমগীরের সাথে।
প্রশ্ন : চলচ্চিত্রে কীভাবে এলেন?
আলমগীর : ছোট বেলা থেকে খুব ছবি দেখতাম। প্রায়ই এফডিসির গেটে এসে দাঁড়িয়ে থাকতাম। একদিন ফাইটার আব্দুর রউফ ভাই আমাকে ফাইট ডিরেক্টর আরমান ভাইয়ের কাছে নিয়ে যান। তিনি আমাকে কাজ দেন। আগে ছোট ছোট দৃশ্যে কাজ করতাম। এখন সব ধরনের ফাইট শিখে ফেলেছি তাই বড় কাজগুলোও করতে পারছি।
প্রশ্ন : ‘অ্যাকশন জেসমিন’ ছবিতে যুক্ত হলেন কীভাবে?
আলমগীর : ‘অ্যাকশন জেসমিন’ ছবির ফাইট ডিরেক্টর আরমান ভাই। আমি তাঁর গ্রুপেই কাজ করি। আমাদের গ্রুপে যাঁরা আছেন তাঁদের মধ্যে ববি আপুর ফিগারের সাথে আমার মিল আছে আর সে কারণেই আমাকে তাঁর ডামি হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে।
প্রশ্ন : এই ছবিতে কাজ করতে গিয়ে কোনো দুর্ঘটনায় পড়েছেন?
আলমগীর : না কোনো সমস্যা হয়নি। তবে একটি দৃশ্যে ছয় তলা থেকে লাফ দিতে গিয়ে একটুর জন্য পা ভাঙেনি। সে সময় খুব ভয় পেয়েছিলাম। এ ছাড়া পুরো ছবির কাজে আর কোনো সমস্যা হয়নি। ভালোভাবেই শেষ করতে পেরেছি।
প্রশ্ন : শুটিংয়ে আপনাদের পারিশ্রমিক কত দেওয়া হয়?
আলমগীর : আমরা প্রতিদিন শুটিংয়ের জন্য আগে শিফ্ট প্রতি ৮০০ টাকা পেতাম, এখন সেটা বাড়িয়ে এক হাজার টাকা করা হয়েছে। একদিনে দুই শিফটে শুটিং করলে দুই হাজার টাকা পাই।
প্রশ্ন : সংসার চলে এই টাকায়?
আলমগীর : আগে যখন কাজ বেশি ছিল তখন সমস্যা হতো না। এখন তো কাজ কম, মাসে ১৫-২০ দিন কাজ করতে পারলে সংসার ভালোভাবে চলে যায়।
প্রশ্ন : সংসারে কে কে আছে?
আলমগীর : আমরা চার ভাই, এক বোন। বাবা মারা গেছেন, মা আছেন। বড় দুই ভাই কাতারে থাকেন। ভাইবোন আর মাকে নিয়ে আমি তেজগাঁওয়ে থাকি।
প্রশ্ন : ছোট ভাইকে কি চলচ্চিত্রে নিয়ে আসবেন?
আলমগীর : আমার ছোট ভাইয়ের ইচ্ছা সে সিনেমায় কাজ করবে। কিন্তু অন্য ভাইদের তাতে মত নেই। তা ছাড়া এখন যে অবস্থা তাতে এখানে কাজ করে ভালোভাবে বেঁচে থাকাটা খুব কষ্টকর। অন্য ভাইদের মতো সামনের বছর সে কাতার চলে যাবে। চলচ্চিত্রের অবস্থা ভালো হলে তাকে দেশেই রেখে দিতাম।
প্রশ্ন : হলে গিয়ে যখন নিজের ছবি দেখেন তখন কেমন লাগে?
আলমগীর : হলে গিয়ে ছবি দেখার পর সব সময় মনে হয় আরেকটু ভালো কেন করলাম না, আরো ভালো করতে পারতাম। দর্শক যখন হাততালি দেয় তখন খুব ভালো লাগে। আবার বন্ধুদের যখন বলি যে এই শটটা আমি দিয়েছি। তখন তারা বলে তুই কিভাবে দিলি এইটাতো নায়িকা দিয়েছে । আমার কথা যখন ওরা কিছুতেই বুঝতে চায় না, তখন বলি আমাদের শুটিংয়ে এসে একদিন চা খেয়ে গেলে বুঝতে পারবি কীভাবে কী হয়।