এস কে সিনহাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে : আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, দুর্নীতির অভিযোগে মামলা দায়েরের পর সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহাকে আদালতের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার সফটওয়্যার ও অ্যাপস উদ্বোধনের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘উনার (এস কে সিনহা) ইচ্ছাগুলো, উনার ব্রোকেন ড্রিমস উনি চরিতার্থ করতে পারেননি বলেই উনি আহাজারি করছেন। সেসব বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। উনার যে এই দেশের প্রতি কোনো আনুগত্যবোধ নেই, সেটাই বোঝা যাচ্ছে। তার কারণ হচ্ছে, যেসব কথা উনি বলছেন, সেসব কথা উনি আগেও দেশে থেকেও বলতে পারতেন। কিন্তু সেগুলো যেহেতু সর্বৈব মিথ্যা, সে জন্য তিনি সেসব কথা দেশের বাইরে গিয়ে বলছেন। এতে এটা পরিষ্কার হলো, তিনি এসব কথা বলছেন বিদেশে রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার জন্য।’
এস কে সিনহা প্রসঙ্গে আশঙ্কা প্রকাশ করে আনিসুল হক আরো বলেন, হয়তো তাঁর মাঝে এই ভয় আছে যে দেশে ফিরলে মামলাগুলোর সম্মুখীন হতে হবে। আইনের মোকাবিলা করতে হবে এমন আশঙ্কা থেকে এস কে সিনহা দেশে না এসে বিদেশে বসে মিথ্যাচার করছেন।
আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, তাঁকে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া আদালতের মাধ্যমে হবে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সম্পাদক পরিষদের বৈঠকে যেসব বক্তব্য এসেছে, তা আগামী সোমবার অথবা পরবর্তী মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে তুলে ধরা হবে বলে জানান আইনমন্ত্রী।
গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ (আরপিও) সংশোধনীর বিষয়ে আনিসুল হক বলেন, ‘আরপিও সংশোধনীর জন্য নির্বাচন কমিশন থেকে যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, তা আমরা পেয়েছি। এগুলো দেখা হচ্ছে।’
রাষ্ট্রপতি ১২টি বিলে স্বাক্ষর করেছেন, কিন্তু সেখানে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট ছিল না। তাহলে আইনটি কি সংশোধন করা হচ্ছে—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর তথ্যবিষয়ক উপদেষ্টার উপস্থিতিতে আমরা যে বৈঠক করেছি, সেখানে বলেছি এবং আজও বলছি, আগামী মন্ত্রিপরিষদ সভায় এডিটর্স কাউন্সিল থেকে যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, তা উপস্থাপন করা হবে।’
এর আগে দরিদ্র ও নির্যাতিত অসহায় মানুষদের বিনামূল্যে আইনি সহায়তা প্রদানে সফটওয়্যার ও অ্যাপসের উদ্বোধন করেন আইনমন্ত্রী।
জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে আনিসুল হক বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি ও টোল ফ্রি কলসেন্টার সার্ভিসের মাধ্যমে আইনি সহায়তা প্রদানের পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ঘরে বসে আইন সহায়তা পাওয়ার বিষয়টি এক সময় স্বপ্ন ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে স্বপ্নের দ্বার উন্মুক্ত করেছেন। এর ফলে ঘরে বসেই মানুষ বিনামূল্যে আইনি পরামর্শ লাভ করছেন।
জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার উপপরিচালক আবিদা সুলতানার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক, জাতীয় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক সাবেক বিচারপতি খোন্দকার মুসা খালেদ, জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার পরিচালক মো. জাফরোল হাছান, সাবেক প্রধান বিচারপতি ও আইন কমিশনের চেয়ারম্যান এ বি এম খায়রুল হক প্রমুখ।