রায় ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘিরে আদালত এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার খুব সকাল থেকেই পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা রোডের বিশেষ আদালতের চারদিকের সব রাস্তা প্রায় বন্ধ করে দেওয়া হয়।
নাজিমুদ্দিন রোডের মাঝখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যারিকেড দিয়েছে। সেখানে গণমাধ্যমের ক্যামেরাপারসনদের আটকে দেওয়া হচ্ছে। তবে রিপোর্টাররা কার্ড দেখিয়ে আদালতের সামনে পর্যন্ত যেতে পারছেন। সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কাউকে আদালতে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
নাজিমুদ্দিন রোডে পুলিশ সুপারের পদমর্যাদার কর্মকর্তা নাসির আহমেদ খান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এখনো আসামিদের আদালতে আনা হয়নি। তাঁরা পথে রয়েছেন। এখানে বিভিন্ন বাহিনী সমন্বয় করে দায়িত্ব পালন করছে।’
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা রায় ঘিরে কঠোর সতর্কতার মধ্যে রয়েছেন বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায় হবে আজ রাজধানীর নাজিমুদ্দিন রোডে পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালতে।
২১ আগস্টের ঘটনায় পৃথক মামলায় মোট আসামির সংখ্যা ৫২ জন। এর মধ্যে তিনজন আসামির অন্য মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় তাঁদের মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তিন আসামি হলেন জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নান ও তাঁর সহযোগী শরীফ সাহেদুল আলম বিপুল। এখন ৪৯ আসামির বিচার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, জঙ্গি তাজউদ্দিনসহ এখনো ১৮ জন পলাতক। বিএনপি নেতা সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ২৩ জন কারাগারে রয়েছেন।
এর মধ্যে ওই ঘটনায় হত্যা, হত্যাচেষ্টা, ষড়যন্ত্র, ঘটনায় সহায়তাসহ বিভিন্ন অভিযোগে একটি মামলা যাতে বর্তমানে আসামি সংখ্যা মোট ৪৯ জন। একই ঘটনায় ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক দ্রব্যাদি আইনে (সংশোধনী-২০০২) অপর একটি মামলায় আসামি সংখ্যা ৩৮ জন।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের এক সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। ওই নৃশংস হামলায় ২৪ জন নিহত ও নেতাকর্মী-আইনজীবী-সাংবাদিকসহ পাঁচ শতাধিক লোক আহত হন। নিহতদের মধ্যে ছিলেন তৎকালীন মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমান।
তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের প্রথম সারির অন্যান্য নেতা এই গ্রেনেড হামলা থেকে বেঁচে যান। এতে অল্পের জন্য শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও গ্রেনেডের প্রচণ্ড শব্দে তাঁর শ্রবণশক্তিতে আঘাতপ্রাপ্ত হয়।