প্রধানমন্ত্রী ভয় পেয়ে নির্বাচন থেকে দূরে সরতে চান : আবদুর রব
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভয় পেয়ে নির্বাচন থেকে দূরে সরে যেতে চাইছেন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ও জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব।
আজ শনিবার বিকেলে গাজীপুরের টঙ্গীতে বিএনপির প্রার্থী সালাহ উদ্দিন সরকারের বাসভবন প্রাঙ্গনে ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত নির্বাচনী সভায় এ মন্তব্য করেন আবদুর রব।
সভায় আবদুর রব বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভয় পেয়েছেন। উনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে চাচ্ছেন। সুযোগ খুঁজছেন কিভাবে নির্বাচন বন্ধ করা যায়। নির্বাচন থেকে কিভাবে পালিয়ে যাওয়া যায়। আমরা ঐক্যফ্রন্ট ১৮ কোটি জনগণের পক্ষ থেকে কথা দিতে পারি, আমরা ইনশাল্লাহ ভোটে জয়লাভ করব। তবে আপনি যদি চলে যেতে চান, তাও দেব। আপনাদের ওপর কোনো অত্যাচার করব না। ঐক্যফ্রন্ট বিজয়ী হলে কথা দিচ্ছি, যারা হেরে যাবে তাদের সঙ্গে নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করব।’
আ স ম আবদুর রব আরো বলেন, ৩০ তারিখে মানুষের গণজাগরণ হবে, ভোটের বিপ্লব হবে। ১৯৭০ সালে জনগণ জয়লাভ করেছে। এবার ২০১৮ সালে ধানের শীষের মাধ্যমে জনগণ আবার জয়লাভ করবে। এ সময় তিনি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা-হামলা তুলে নিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করেন।
রাস্তায় রাস্তায় সেনা কর্মকর্তাদের টহল দিতে দিন
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক সাংসদ হাসান উদ্দিন সরকারের সভাপতিত্বে নির্বাচনী সভায় আরো বক্তব্য দেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান প্রমুখ।
আজ শনিবার বিকেলে গাজীপুরের টঙ্গীতে বিএনপি প্রার্থী সালাহ উদ্দিন সরকারের বাসভবন প্রাঙ্গনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত নির্বাচনী সভায় বক্তব্য দেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। ছবি : এনটিভি
সভায় ঐক্যফ্রন্ট নেতা ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আপনার কথা যদি সত্য প্রমাণ করতে চান, আপনি যদি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিশ্বাস করেন তাহলে স্মরণ করিয়ে দেই। মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা ছিল তিনটা, গণতন্ত্র, বৈষম্যের অবসান ও ইনসাফ। আপনি বলেন, এই তিনটার কোনটা আপনাদের আছে? তবে এই শেষ অবস্থায় একটি কাজ আপনারা করেন, যেন আপনাদের সন্তুষ্টি হয়। কালকে থেকে প্রত্যেকটি রাস্তায় রাস্তায় সেনা কর্মকর্তাদের টহল দিতে দিন। তাদের আর কিছু করার দরকার নেই। তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার দরকার নেই, গ্রেপ্তারের ক্ষমতার দরকার নেই, কেবল তাদের টহল করতে দিন।’
এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা আপনাদের কাছে শুধু একটাই অনুরোধ জানাবো, নির্বাচনের দিন পর্যন্ত যত অত্যাচার হোক, মাটি কামড়ে পড়ে থাকতে হবে। দেশের স্বার্থে, দেশের জনগণের স্বার্থে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার স্বার্থে এ লড়াইয়ে আমাদের জিততে হবে।’
সভায় মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমাদের নেত্রী (খালেদা জিয়া) বিনা বিচারে জেলখানায় রয়েছেন। ১২০ কোটি টাকার লোন ডিফল্টার (ঋণখেলাপি), ব্যাংকের টাকা দেয় না, উনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন কিন্তু বেগম জিয়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন না। এ সব কিছুর শোধ নেবার জন্য মানুষকে বলবো, মুক্তি চান বেগম জিয়ার? দেশের প্রত্যেকটি ভোটারের কাছে যান। এই শ্রীপুর, এই গাজীপুর টঙ্গীর ভোটার যারা, প্রত্যেকের কাছেই যেতে হবে। তাদেরকে বলতে হবে, ভোট আপনার পবিত্র আমানত, আপনাকে ভোট দিতে হবে। ওরা ভয় দেখাবে, নির্যাতন করবে, গুজব ছড়াবে। কিন্তু ভয় পাবেন না, আমরা আছি। আপনারা প্রত্যেকে একটা করে ভোট দেবেন। এই ভোটে বেগম জিয়া মুক্তি পাবে ইনশাল্লাহ। আপনার ভোট মানেই বেগম জিয়ার মুক্তি। আপনি নিজেই এক একজন বেগম জিয়া মনে করে এই ভোট দিতে হবে।’
সভায় অন্যদের মধ্যে গাজীপুর-২ আসনের প্রার্থী সালাহ উদ্দিন সরকারসহ বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।