নতুন ‘ফাইনালিস্টে’র অপেক্ষায় বিশ্বকাপ
ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসরে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যঙ্গাত্মক নাম ‘চোকার্স’! নিউজিল্যান্ডও ‘নিষ্কলুষ’ নয় অবশ্য। কিউইদের গায়ে লেগেছে ‘দ্য সেমিফাইনালিস্ট’-এর তকমা। প্রোটিয়ারা এবারই প্রথম বিশ্বকাপের কোনো নক-আউট ম্যাচ জিতেছে। অন্যদিকে কিউইরা এর আগে ছয়বার সেমিফাইনালে খেললেও কখনো ফাইনালে উঠতে পারেনি। মঙ্গলবার অকল্যান্ডে তাই দুই দলের সামনেই ইতিহাস গড়ার হাতছানি। প্রথম সেমিফাইনালে যে দলই জিতুক না কেন, প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলার সুযোগ পাবে।
কোয়ার্টার ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে ৯ উইকেটে হারিয়ে ‘চোকার্স’ অপবাদ কিছুটা হলেও ঘোচাতে পেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সেমিফাইনালের আগে প্রোটিয়া অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্সের হুঙ্কার, ‘আমাদের কেউ ঠেকাতে পারবে না।’ অন্যদিকে ওপেনার মার্টিন গাপটিলের রেকর্ডগড়া ডাবল সেঞ্চুরিতে অনুপ্রাণিত কিউই শিবির। ইতিহাসের সন্ধিক্ষণের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা নিউজিল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকার লড়াই তাই জমজমাট হওয়ারই কথা।
টানা ৭ জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে শেষ চারের লড়াইয়ে নামতে যাওয়া কিউইরা একটা ধাক্কা খেয়েছে অবশ্য। গোড়ালির চোট বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে দিয়েছে ডানহাতি পেসার অ্যাডাম মিল্নকে। কোয়ার্টার ফাইনালে বিপজ্জনক হয়ে ওঠা ক্রিস গেইলকে বোল্ড করে নিউজিল্যান্ডকে জয়ের পথে এগিয়ে দেওয়া মিল্নের জায়গায় নেওয়া হয়েছে ম্যাট হেনরিকে। তবে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মাত্র আটটি ওয়ানডে খেলা হেনরির না খেলার সম্ভাবনাই বেশি। বরং অনেক বেশি অভিজ্ঞ পেসার কাইল মিলসকে দেখা যেতে পারে কিউইদের প্রথম একাদশে।
দক্ষিণ আফ্রিকা দলে কোনো চোটজনিত সমস্যা নেই। গলায় সংক্রমণের কারণে ডি ভিলিয়ার্স রোববার অনুশীলন করতে পারেননি। তবে সেমিফাইনালে প্রোটিয়া অধিনায়কের মাঠে নামা প্রায় নিশ্চিত। দক্ষিণ আফ্রিকানদের একটা ‘মধুর’ সমস্যা অবশ্য আছে। কাইল অ্যাবট আর ভার্নন ফিল্যান্ডারের মধ্যে একজনকে বেছে নিতে হবে তাদের। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে ভালো বোলিং করেছেন অ্যাবট। তবে ব্যাটিংটা মোটামুটি জানেন বলে শেষ চারের লড়াইয়ের জন্য ফিল্যান্ডারকে বেছে নিতে পারে প্রোটিয়ারা।
বিশ্বকাপে এর আগে ছয়বার দেখা হয়েছিল নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার। এর মধ্যে চারবারই জিতেছে নিউজিল্যান্ড। ১৯৯২ বিশ্বকাপে মঙ্গলবারের ভেন্যু অকল্যান্ডেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৭ উইকেটে হারিয়ে সেমিফাইনালের পথে এগিয়ে গিয়েছিল কিউইরা। ২০০৩, ২০০৭ ও ২০১১ বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের কাছে টানা তিন হারের প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ এখন ডি ভিলিয়ার্সের দলের সামনে।
তবে ফলাফল যা-ই হোক, একটা বিষয় নিশ্চিত। নতুন ‘ফাইনালিস্ট’ পাচ্ছে ক্রিকেট বিশ্বকাপ!