রায়ের খসড়া প্রস্তুত
মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের রিভিউ আবেদন খারিজে পূর্ণ রায় এখনো লেখা হয়নি। আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের বেঞ্চ রায়ের খসড়া তৈরি করেছেন। হাইকোর্টের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ ইসহাক এ কথা জানিয়েছেন।
রেজিস্ট্রারের কার্যালয় সূত্র জানায়, কামারুজ্জামানের রিভিউ আবেদন খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায় লেখার জন্য একজন বিচারপতিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি আজ বিকেল পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ রায়ের খসড়া তৈরি করেছেন। এই রায় চূড়ান্তভাবে লেখা হলে অন্য তিনজন বিচারপতিও এটি পড়বেন, তারপর সই করবেন। সই শেষে তাঁরা রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে তা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠাবেন। এরপর ট্রাইব্যুনাল থেকে রায়ের কপি পাঠানো হবে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। কপি হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে কারা কর্তৃপক্ষ।
সন্ধ্যা ৭টার দিকে রায়ের খসড়াটি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানো হয়েছে।
ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ ইসহাক বিকেলে এনটিভি অনলাইনকে বলেছিলেন, ‘আজ আর রায়ের কপি কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানোর সম্ভাবনা নেই।’
এদিকে রায় কার্যকরের জন্য ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ পূর্ণাঙ্গ রায়ের অপেক্ষায় রয়েছে। ফাঁসি কার্যকর করার সব প্রস্তুতি রয়েছে। রায়ের কপি হাতে না পাওয়ায় ফাঁসি কার্যকর করতে পারছেন না বলে কারা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
গতকাল সোমবার সকাল ৯টা ৫ মিনিটে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ কামারুজ্জামানের পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করে তাঁর মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখেন।
২০১৩ সালের ৯ মে কামারুজ্জামানকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ গত বছরের ৩ নভেম্বর তাঁর মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন। চলতি বছর গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়। এরপর ১৯ ফেব্রুয়ারি কামারুজ্জামানের মৃত্যু পরোয়ানা কারাগারে পৌঁছায়। ৫ মার্চ আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় কামারুজ্জামানের পক্ষে রিভিউ আবেদন করা হয়।
২০১০ সালের ২৯ জুলাই কামারুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়। ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ২ আগস্ট তাঁকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সেই থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটসহ মানবতাবিরোধী সাতটি অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ২০১২ সালের ৪ জুন কামারুজ্জামানের বিচার শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে পাঁচটি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দুটিতে মৃত্যুদণ্ড, দুটিতে যাবজ্জীবন ও একটিতে ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।