মির্জা আব্বাসকে বুধবার পর্যন্ত গ্রেপ্তার না করার নির্দেশ
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদপ্রার্থী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে আগামী বুধবার পর্যন্ত গ্রেপ্তার বা হয়রানি না করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ওই দিন তাঁর বিরুদ্ধে করা দুটি মামলায় জামিন আবেদনের ওপর আদেশ দেবেন আদালত।
আজ সোমবার বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের হাইকোর্ট বেঞ্চ জামিন আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আগামী বুধবার আদেশের দিন ধার্য করেন। আদেশের আগ পর্যন্ত মির্জা আব্বাস নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না বলেও আদালত নির্দেশ দিয়েছেন।
২০১৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর বাসে অগ্নিসংযোগ ও বিস্ফোরণের অভিযোগে মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্টন থানায় একটি মামলা করা হয়। চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি মতিঝিল থানায় বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা করে পুলিশ। ওই দুটি মামলায় আগাম জামিন নিতে মির্জা আব্বাস আজ হাইকোর্টে আবেদন করেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য উল্লেখ করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে ৩৭টি মামলা আছে।
জামিনের শুনানিতে অংশ নিয়ে মির্জা আব্বাসের আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘এসব মামলায় মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগপত্র দেওয়া হয়নি। এবং মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। অল্প সময়ের জন্য সিটি করপোরেশনের নির্বাচন পর্যন্ত তাঁকে জামিন দেওয়া হোক। জামিন দিলে উনি পালিয়ে যাবেন না। উনি সাবেক সংসদ সদস্য। জামিন না দেওয়ায় তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ক্ষমতাসীন দলের কাছেও নিরাপদ নন। নির্বাচনে জিতলে আনন্দ উৎসবের জন্য এবং হারলে কান্নাকাটি করার জন্যসহ মোট ১৫ দিন ও অতিরিক্ত আর চার-পাঁচ দিন সময় দেওয়া হোক।’
খন্দকার মাহবুব আরো বলেন, ‘আমি আদালতের কাছে অনুরোধ করছি জামিনযোগ্য এ মামলায় তাঁকে জামিন দেওয়ার জন্য। আপনারা বিশাল মন নিয়ে বিচারক পদে আছেন। ভোটাররা মির্জা আব্বাসকে জিজ্ঞাসা করেন যে তিনি প্রার্থী হয়েছেন কিন্তু তাঁকে কেউ দেখতে পাচ্ছেন না। তাঁর স্ত্রী (আফরোজা আব্বাস) রাস্তায় রাস্তায় ভোট খুঁজছেন। তিনি ঘর থেকে বের হতে পারেন না। যদি তাঁকে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত জামিন দেওয়া হয় তাহলেই তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন।’
এদিকে জামিনের বিরোধিতা করে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুব আলম বলেন, ‘ওনার বিরুদ্ধে মানুষ হত্যাসহ বিস্ফোরক আইনে মামলা করা হয়েছে। শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন এবং শতাধিক মানুষ আহত অবস্থায় আছেন। কারাগারে থেকেও অনেকে নির্বাচন করেছেন এমন নজির রয়েছে। তাই জামিন দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।’
এ পর্যায়ে আদালত দুটি মামলায় মির্জা আব্বাসের জামিন আবেদনের আদেশের জন্য বুধবার দিন ধার্য করেন।
শুনানিতে মির্জা আব্বাসের পক্ষে আরো ছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, এ জে মোহাম্মদ আলী ও বদরুদ্দোজা বাদল।
মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে পল্টন ও মতিঝিল থানায় দুটি মামলায় জামিন পেতে গতকাল রোববার হাইকোর্টে আবেদন করেন তাঁর আরেক আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন।