পেট্রলবোমা বন্ধ করে তবেই সংলাপ : স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, ‘আমরা সংলাপে বিশ্বাস করি। তবে একদিকে পেট্রলবোমায় মানুষ মারব, অন্যদিকে সংলাপ দাবি করব, সেটা হবে না।’
আজ রোববার বিকেলে জেলার সিদ্ধিরগঞ্জে র্যাব ১১-এর সদর দফতরে জব্দ করা মাদকদ্রব্য ধ্বংস অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন সাংসদ শামীম ওসমান, পুলিশ প্রধান এ কে এম শহীদুল হক ও র্যাবের প্রধান বেনজীর আহমেদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমেরিকান রাষ্ট্রদূত আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘তোমরা দেশে পেট্রলবোমা হামলা বন্ধে সংলাপে বসতে পারো না। আমি তাঁকে বলেছি, কার সঙ্গে বসব? সংলাপ হতে পারে তবে এর আগে তাঁদের জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ছেড়ে আসতে হবে।’
মাদক সম্পর্কে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় ২৬০ বর্গকিলোমিটার অরক্ষিত। আমরা চেষ্টা করছি সেগুলোকে সংরক্ষিত করতে। তাহলেই মাদকের প্রবেশ রোধ করা যাবে।’
মাদকের বিস্তার রোধ সম্পর্কে আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘সামাজিক শাসন থেকে সরে আসায় দেশে অবক্ষয় দেখা দিয়েছে। কমিউনিটি পুলিশিং গঠনের উদ্দেশ্য হলো সেই সামাজিক শাসন ফিরিয়ে আনা।’
মাদকদ্রব্য ধ্বংস অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের মাদক বিক্রেতা ধ্বংসের কর্মসূচিকে সমর্থন জানিয়ে তাঁকে নারায়ণগঞ্জের জীবন্ত কিংবদন্তি বলে আখ্যায়িত করেন। বক্তৃতায় তিনি র্যাব সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে বলেও মন্তব্য করেছেন।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় পুলিশের আইজি শহীদুল হক বলেন, ‘শুধু আইন করে ও পুলিশ দিয়ে, র্যাব দিয়ে মাদক নির্মূল করা সম্ভব নয়। যার কারণেই জনগণকে নিয়ে বসা। এ জন্য সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।’
অনুষ্ঠান শেষে আদমজীর র্যাব ১১-এর প্রধান কার্যালয়ে বিভিন্ন সময়ে জব্দ করা ফেনসিডিল, গাঁজা, ইয়াবা, বিয়ার, দেশি-বিদেশি মদসহ সাত কোটি টাকা মূল্যের মাদকদ্রব্য বুলডোজার ও আগুন দিয়ে ধংস করা হয়।
মাদকের ছোবল কতটা ভয়াবহ তা উপস্থাপন করেন ছাত্র, শিক্ষক এবং মাদকাসক্তি থেকে সেরে ওঠা ব্যক্তিরা। উপস্থিত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে মাদক সেবনে ক্ষতিকর বিষয়গুলোর প্রতি জোর দিয়ে বক্তব্য রাখেন বক্তারা।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক বজলুর রহমান, র্যাব ১১-এর সিও লে. কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, চিত্রনায়ক অমিত হাসান, মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র দীপ্তির পরিচালক মাকসুদুল আলম প্রমুখ। এ ছাড়া মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র থেকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হওয়া কয়েকজন ও তাঁদের অভিভাবকরা মাদকের কুফল নিয়ে কথা বলেন।
উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী, নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁও) আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট হোসনে আরা বাবলী, জেলা প্রশাসক আনিছুর রহমান মিঞা, পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন প্রমুখ।