পুলিশের পোশাকে নাম বা ব্যাজ ছিল না
প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ঢাকার বাইরের লোক ছিল বলে অভিযোগ করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী তাবিথ আউয়াল। তিনি বলেন, ‘প্রশাসনের লোকেরা আমাকেও ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে দিচ্ছিল না। আর অনেক পুলিশ অফিসার ছিলেন, যাঁদের নাম বা ব্যাজ ছিল না।’
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভোট বর্জনের ঘোষণার পর এ কথা বলেন তাবিথ।urgentPhoto
সংবাদ সম্মেলনে দলের বক্তব্য তুলে ধরেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ। বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. এমাজউদ্দীন আহমদ, ঢাকা দক্ষিণের মেয়র পদপ্রার্থী মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস।
তাবিথ বলেন, ‘আমার সকল শারীরিক শক্তি দিয়ে আমি চেষ্টা করেছিলাম, নির্বাচনের শেষ পর্যন্ত অংশগ্রহণ করার জন্য। দুঃখজনক কথা যে এদিন আমি বলি, পরিবেশ আগেও ছিল না। আর এটাকে নির্বাচন বলাটাও সঠিক হবে না। গতকাল রাতের থেকে শুরু হয় আমরা যাঁরা বিভিন্ন জায়গায় ক্যাম্প তৈরি করি, প্রতিটি ক্যাম্প ভেঙে ফেলা হয়েছিল।...আজ সকালে আমি নিজেই শুরু করি মানারাত স্কুলে (মানারাত ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল স্কুল) আমার নিজের ভোটটা দিয়ে। ওইখানে আমি পোলিং বুথে যাই। ওইখানে গিয়ে দেখি যে আমার ব্যালট পেপারের পেছনে পোলিং অফিসার সাইন করেননি। অনেক গণমাধ্যমকর্মী ওইখানে ছিলেন, যাঁরা ভিডিও করতে পেরেছেন বা দেখতে পেরেছেন যে আমি পোলিং বুথ ছেড়ে আবার দ্বিতীয়বার পোলিং অফিসারের কাছে এলাম। তখন উনি আমার তিনটা ব্যালট কমিশনার, কাউন্সিল ও মেয়র পদপ্রার্থীর ব্যালটগুলো সই করে দিলেন। তার পর আমি আমার ভোটটা দিলাম।’
‘তাও যেটা বললাম, চেষ্টা করেছিলাম এগিয়ে যেতে; কিন্তু আজ সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নিয়মিত আমি যে যে কেন্দ্রে গিয়েছিলাম...আমি বাড্ডায় শুরু করেছিলাম...আমার সাথে যাঁরা গণমাধ্যমকর্মীরা ছিলেন, তাঁদেরকে পুলিশ বাধা দিয়েছিল কেন্দ্রে ঢুকতে।’
তাবিথ বলেন, ‘অনেক অনেক দলীয় ও ঢাকার বাইরের লোকজনের উপস্থিতি ছিল। যেখানে কোনো পরিবেশ ছিল না যে ভোটার নিরাপদভাবে কেন্দ্রে ঢুকবে। কেন্দ্রের গেটে কোনো পুলিশ ছিল না।’ তিনি বলেন, ‘পুলিশকে প্রশ্ন করলে তারা বলে, উনাদের দায়িত্ব হলো, ভিতরের গেট ও পোলিং সেন্টার পাহারা দেওয়া, কেন্দ্রের বাহিরের গেটে তাদের কোনো দায়িত্ব ছিল না। পুরো এলাকাটা ছিল সরকারি বা দলীয় কর্মীদের দখলে। কারা ঢুকবে নাকি ঢুকবে না, নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছিল।’
‘তেজগাঁওতে আমার সামনে আমার একজন পোলিং এজেন্টকে লাঞ্ছিত করা হয়। ধাক্কা মেরে বের করে দেওয়া হয়। আমি কেন্দ্রে প্রবেশ করতে চাইলে পুলিশ আমাকে বাধা দিয়েছিল। এসব বিষয়ে আমার লিখিত অভিযোগও দিয়েছি।’
‘প্রিসাইডিং অফিসারের রুমে ডেস্কে আমি একটা খোলা ব্যালট বাক্স পেয়েছিলাম। প্রশ্ন করেছিলাম, ব্যালট বাক্স আপনার কাছে থাকতেই পারে, আমাকে সিরিয়াল নম্বরটা দয়া করে দেন, যাতে আমি মারার কাছে রাখতে পারি।...উনি কোনোভাবেই আমাকে সিরিয়াল নম্বরটা দেন নাই। চেষ্টা করেছিলেন ধাক্কা মেরে উনার রুম থেকে বের করে দিতে। তবে চেষ্টা করে আমি ব্যালট বাক্সের নম্বরটা নিয়ে আসি।’
তাবিথ বলেন, ‘সরকারের সমর্থিত বিভিন্ন প্রার্থীর এজেন্ট ছাড়া কোনো কেন্দ্রে অন্য কোনো প্রার্থীর এজেন্ট আমি দেখি নাই।’
‘মিরপুর ৬ নম্বর ওয়ার্ডে অনেক পুলিশ অফিসার কেন্দ্রে ছিলেন, কিন্তু তাদের পোশাকে নাম বা ব্যাজ ছিল না,’ বলেন তাবিথ। তিনি বলেন, ‘ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে বর্জন করলাম।’