প্রিসাইডিং অফিসারের কক্ষে ব্যালট বাক্স, আড়ালের চেষ্টা
৬ নম্বর ওয়ার্ডে মিরপুরের বঙ্গবন্ধু বিদ্যানিকেতনে খোদ প্রিসাইডিং অফিসারের কক্ষে একটি ব্যালট বাক্স পাওয়া গেছে। এ সময় ব্যালট বাক্সটি প্রয়োজনে ব্যবহার করার জন্য নির্বাচন কমিশন থেকে দেওয়া হয়েছে জানালেও বাক্সটির ঢাকনা ভাঙা এবং এর ভেতরে নানা রঙের কাগজ দেখা যায়। সেই সঙ্গে তা বারবার আড়াল করারও চেষ্টা দেখা যায় ওই কর্মকর্তার। আজ মঙ্গলবার দুপুরে কেন্দ্রটিতে এ দৃশ্য দেখা যায়।
কেন্দ্রটি পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, একটি কক্ষে এক পোলিং এজেন্টের কাছে বেশ কয়েকটি ভোটার স্লিপ। কার পোলিং এজেন্ট জানতে চাইলে তিনি ‘মেয়র’ পক্ষের পোলিং এজেন্ট বলে জানান। কিন্তু নির্দিষ্ট করে মেয়রের নাম জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, গতকাল স্লিপ বিতরণের পর এগুলো প্যান্টের পকেটেই থেকে যায়। এগুলো রেখে আসতে ভুলে গেছি।
এরপর বিএনপি সমর্থিত ঢাকা উত্তরের মেয়রপ্রার্থী তাবিথ আউয়ালসহ সাংবাদিকরা ভোট গ্রহণের সর্বোচ্চ দায়িত্বে থাকা প্রিসাইডিং অফিসারের কক্ষে গিয়ে একটি ব্যালট বাক্স দেখতে পান।
এ সময় তাবিথ আউয়াল ওই প্রিসাইডিং অফিসারের কাছে বাইরে থাকা পুলিশ সদস্যদের অনেকের পোশাকেই কোনো ব্যাচ নেই এ বিষয়ে অভিযোগ করেন। বিষয়টি তাঁর দেখার কথা নয় বলে জানান ওই প্রিসাইডিং অফিসার। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে জানান তিনি।
এরপর তাবিথ ঘড়ি মার্কা ছাড়া আর কোনো পোলিং এজেন্ট নেই অভিযোগ করলে ওই প্রিসাইডিং অফিসার বলেন, ‘আমরা সকাল থেকেই প্রত্যেকের পোলিং এজেন্ট দেওয়ার জন্য বলেছি। আমি চারবার গিয়েছি, আমরা সবার কাছ থেকে কালেকশন করেছি, কিন্তু আপনারা যদি পোলিং এজেন্ট না দেন তাহলে তো আমরা আপনাদের কাছ থেকে কালেকশন করতে পারব না।’
এ ছাড়া কেন্দ্রের বাইরে কোনো দায়িত্ব তাদের নয় বলেও জানান ওই প্রিসাইডিং অফিসার। এ সময় সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।
এ সময় কক্ষের ভেতরে একটি ব্যালট বাক্স দেখতে পেয়ে এ বাক্স তার টেবিলে কেন জানতে চাইলে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন ওই প্রিসাইডিং অফিসার। সেই সঙ্গে তিনি বারবার পেছনে ফিরে বাক্সটি আড়াল করার চেষ্টা করেন এবং তাঁর কক্ষে কাউকে না ঢোকার অনুরোধ করেন। এ সময় তিনি এটা ‘এক্সট্রা ব্যালট বাক্স’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। তিনি বলেন, এটা একটা এক্সট্রা ব্যালট বাক্স। সবাইকে নির্বাচন কমিশন থেকে একটা এক্সট্রা ব্যালট বাক্স দেওয়া হয়। যখন আমার প্রয়োজন হবে তখন আমি এটা ভোটারদের কাছে রাখব।’
তাবিথ আউয়াল ও সাংবাদিকরা এ সময় ব্যালট বাক্সের সিরিয়াল নম্বর চাইলে তিনি টালবাহানা করেন। পরে সাংবাদিকরা জানালা দিয়ে ব্যালট বাক্সটির নম্বর সংগ্রহ করেন। ব্যালট বাক্সটির নম্বর-BEC 026358।
ওই প্রিসাইডিং অফিসারের নাম জানতে চাইলে তিনি নামও জানাতেও অস্বীকৃতি জানান। এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে অনুরোধ করলে সাংবাদিক ও প্রার্থীদের সঙ্গে তাঁর ধস্তাধস্তি শুরু হয়। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে রুমের দরজা বন্ধ করে দেন তিনি।