যেকোনো সময়ের চেয়ে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন : প্রধানমন্ত্রী
দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া তিন সিটি নির্বাচন নিকট অতীতের যেকোনো নির্বাচনের তুলনায় সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ ছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বিএনপি-জামায়াতের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নিহতদের পরিবার, আহত ও ক্ষতিগ্রস্ত যানবাহন মালিকদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার সময় তিনি এ মন্তব্য করেন।
urgentPhoto
তিন সিটি করপোরেশনের মানুষ বিএনপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভবিষ্যতে পুরো দেশের মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করবে।’
সংসদ নেতা প্রশ্ন করেন, ‘এত কিছুর পরও কেন মানুষ বিএনপিকে সমর্থন করে বা ভোট দেয়?’ তিনি বলেন, ‘এবারের নির্বাচন সবচেয়ে শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে। দুই হাজার ৭০০ পোলিং সেন্টারের মধ্যে ঢাকা শহরের মাত্র দুটি পোলিং সেন্টার বন্ধ ছিল। আর কয়েকটি পোলিং বুথে কিছু কিছু ঘটনা ঘটেছে। কারণ, এখানে শুধু মেয়র ইলেকশন করেন না, কাউন্সিলররাও ইলেকশন করেন। শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর যেকোনো দেশের নির্বাচন এলে যে ঘটনা হয়, সে তুলনায় এবারে পার্সেন্টিজ হিসেবে অত্যন্ত নগণ্য একটু ঘটনা ঘটেছে।’
‘কিন্তু সেখানে কোনো কারচুপি, কারো ভোট কেড়ে নেওয়া বা কাউকে ভোটে বাধাদান করা বা কারো বিরুদ্ধে কোনোরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তিন ঘণ্টার নির্বাচনে তাদের প্রার্থী এই ঢাকায় দেখলাম তিন লাখের ওপর ভোট পেয়েছে। তাহলে আমার প্রশ্ন, তারা যে তিন লাখ ভোট পেল, যদি কারচুপিই হতো, কারচুপির কারণেই যদি ভোট বর্জন করবে—এই তিন লাখ ভোট পেল কীভাবে,’ যোগ করেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই নির্বাচনের শুরু থেকেই বিএনপির পরিকল্পনা ছিল, নাশকতা সৃষ্টি করে তাদের ভেস্তে যাওয়া আন্দোলন নতুন করে শুরু করা। কিন্তু সরকারের দৃঢ়তার কারণে তারা সফল হয়নি। দেশ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে বলে সহিংসতার বিচারকাজ যেন বন্ধ না হয়, সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া, আমি জানি না সে কি মানুষের ক্ষতি করে খুব আনন্দ পায়? কী তৃপ্তি পায় সে? এই যে মানুষগুলো কষ্ট পাচ্ছে। কোনোদিন ফিরেও তাকাল না। যারা এভাবে মানুষকে পুড়িয়ে-জ্বালিয়ে তাদের সর্বনাশ করে, তবে কীভাবে বিএনপি করে, খালেদা জিয়াকে ভোট দেয়। তারা যদি মনে করে থাকে যে অবস্থা ভালো হলেও এগুলো আমরা ভুলে যাব, তা না। এরই মধ্যে আমি নির্দেশ দিয়েছি, যারা এ সমস্ত নাশকতামূলক কাজ বা সন্ত্রাসী কাজ বা পেট্রলবোমা মেরেছে, মানুষের ক্ষতি করেছে তাদের খুঁজে খুঁজে বের করতে হবে। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ, এদের যদি শাস্তি আমরা না দিই তো ভবিষ্যতে আবার এ ধরনের ঘটনা ঘটাবে।’
চলতি বছর প্রথম তিন মাসে বিএনপির ডাকা রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যেসব মানুষ নিহত হয়েছিলেন, তাঁদের স্বজন এবং আহত ও ক্ষতিগ্রস্ত যানবাহনের মালিকদের আর্থিক অনুদানের চেক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। এবার ২৫৮ জনকে মোট ১০ কোটি ৪৭ লাখ ৪০ হাজার টাকার চেক তুলে দেন তিনি। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত ৭৭২ জনকে সর্বমোট ২৫ কোটি ১০ লাখ ১৩ হাজার টাকার অনুদান দেওয়া হলো।
গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা জয় পান। এদিনই ভোটগ্রহণে অনিয়ম, জালিয়াতি ও ভোট চুরির অভিযোগ এনে এ তিনটি সিটি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয় বিএনপি।