ভারত-বাংলাদেশের মানচিত্র পাল্টানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে বাংলাদেশ-ভারত স্থলসীমান্ত চুক্তি অনুমোদনের জন্য ভারতীয় সংবিধান সংশোধন বিল লোকসভায় সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে লোকসভায় বিলটি তোলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। সংসদ সদস্যরা প্রায় দেড় ঘণ্টা আলোচনার পর সন্ধ্যা ৬টায় বিলটি পাসে সম্মতি দেন বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি। এর আগে গতকাল বুধবার ভারতের রাজ্যসভায়ও বিলটি সর্বসম্মতিতে পাস হয়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি ও হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, এর মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত সমাধান হতে যাচ্ছে দুই প্রতিবেশী দেশের দীর্ঘ চার দশকের অমীমাংসিত সীমান্ত সমস্যা। পাল্টে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও ভারতের মানচিত্র। শিগগিরই চূড়ান্ত ছিটমহলবিনিময় কার্যক্রম বাস্তবায়ন শুরু করবে দুই দেশ।urgentPhoto
এর আগে গতকাল বুধবার দেশটির উচ্চকক্ষ পার্লামেন্ট রাজ্যসভায় সীমান্ত বিলটি পেশ করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। উত্থাপনের পর রাজ্যসভার কার্য-উপদেষ্টা কমিটি বিলটি নিয়ে আলোচনার জন্য তিন ঘণ্টা সময় নেয়। পরে ১৮১ জন সদস্যের সবাই বিলটির পক্ষে ভোট দিয়ে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির অনুমতির জন্য পাঠান।
আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, স্থলসীমান্ত চুক্তিতে শেষ অবধি আসামকে অন্তর্ভুক্ত করায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। রাজ্য বিজেপির চাপে প্রাথমিকভাবে বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব স্থলসীমান্ত চুক্তি থেকে আসামকে বাদ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাও সেই সিদ্ধান্তে সায় দেয়। কিন্তু তরুণ গগৈ বলেন, ‘রাজনৈতিক স্বার্থে বিজেপি এই সিদ্ধান্ত নিলে আসামেরই ক্ষতি। কারণ স্থলসীমান্ত চুক্তির পরে র্যাডক্লিফ লাইন নতুন করে টানা হলে করিমগঞ্জ জেলার লাঠিটিলা-দুমাবড়ি সেক্টরের লাঠিটিলা এলাকায় বাংলাদেশের দখলে থাকা ৭১৪ একর জমি আসাম পাবে। বড়ইবাড়ি কালাবাড়ি এলাকায় ১৯৩ দশমিক ৮৫ একর জমি ও পাল্লাঠাল এলাকার ৭৪ দশমিক ৫৫ একর জমি বাংলাদেশ পাবে।’
চুক্তিটি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ পাবে ১১১টি ছিটমহলের ১৭ হাজার ২৫৮ একর জমি এবং ভারত পাবে ৫১টি ছিট মহলের সাত হাজার ১১০ একর জমি।
দ্য হিন্দুর প্রতিবেদন অনুযায়ী সুষমা স্বরাজ রাজ্যসভায় জানান, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের চাহিদা অনুযায়ী ছিটমহলবাসীর পুনর্বাসনের জন্য তিন হাজার কোটি রুপি দেবে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।
প্রায় ৩৫ হাজার মানুষের পুনর্বাসনের এই অর্থ ব্যয় করা হবে। তিনি জানান, সরকারি হিসাব অনুযায়ী সাড়ে তিন হাজার মানুষ ভারতের আসার আগ্রহ প্রকাশ করলেও ভারত সরকার ৩৫ হাজার মানুষের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিচ্ছে।