বাজেট
পরিচয়পত্র পাচ্ছেন প্রতিবন্ধীরা, বাড়ছে উপবৃত্তির হার
দেশে ১৪ লাখ ৫৫ হাজার প্রতিবন্ধীকে জরিপের মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়েছে। এ বছরের মার্চ পর্যন্ত ১৮ লাখ তিন হাজার ৪৫৬ জন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে জরিপের আওতায় আনা হয়েছে। এসব তথ্য ব্যবহার করে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে পরিচয়পত্র দেবে সরকার। আর এ পরিচয়পত্রের বিপরীতে থাকবে সামাজিক সুবিধা এবং আরো বেশি সংখ্যক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী উপবৃত্তির আওতায় আসছে।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় এ কথা বলেন। দলিত, হরিজন, বেদে এবং তৃতীয় লিঙ্গের মতো পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে মূলধারায় আনার গুরুত্বের কথা জানিয়েছেন তিনি। অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, এসব জনগোষ্ঠীর জন্য বাজেটে দ্বিগুণ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর প্রতিবন্ধিতার ধরন চিহ্নিতকরণ এবং মাত্রা নিরূপণপূর্বক লক্ষ্যভিত্তিক কার্যক্রম গ্রহণের জন্য আমরা দেশব্যাপী প্রতিবন্ধিতা শনাক্তকরণ জরিপ শুরু করেছিলাম।’ তিনি আরো বলেন, ‘প্রতিবন্ধীদের জাতীয় তথ্যভাণ্ডার ব্যবহার করে সব প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে পরিচয়পত্র প্রদান এবং প্রতিবন্ধিতার ধরন অনুযায়ী তাদের জন্য বিদ্যমান উন্নয়ন কার্যক্রম পুনর্বিন্যাস এবং নতুন কার্যক্রম গ্রহণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।’
প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী উপবৃত্তির সংখ্যা ৫০ হাজার হতে বৃদ্ধি করে ৬০ হাজার জনে করার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী উপবৃত্তির হারও বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন আবুল মাল আবদুল মুহিত।
পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘দারিদ্র্য নিরসন ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমরা সামাজিক সুরক্ষাভুক্ত বিভিন্ন ভাতার হার ও পরিধি সম্প্রসারণ করেছি। একই সাথে দ্বৈততা পরিহারে নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন কার্যক্রম। বৈষম্যের শিকার দলিত, হরিজন, বেদে এবং হিজড়া সম্প্রদায়কে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে সমাজের মূলধারার সাথে। পল্লী এলাকার দারিদ্র্য হ্রাসে পরিচালনা করা হচ্ছে সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম।’
অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, ‘সামাজিক সুরক্ষার আওতা বাড়াতে আগামী অর্থবছরে বয়স্ক ভাতাভোগীর সংখ্যা ২৭ লাখ ২৩ হাজার হতে বৃদ্ধি করে ৩০ লাখ জনে, বিধবা ও স্বামী নিগৃহিতা মহিলা ভাতাভোগীর সংখ্যা ১০ লাখ ১২ হাজার হতে বৃদ্ধি করে ১১ লাখ ১৩ হাজার জনে, অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীর সংখ্যা চার লাখ হতে ছয় লাখ জনে, দরিদ্র মায়ের জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতাভোগীর সংখ্যা এবং কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মাদারদের সংখ্যা শতকরা ২০ ভাগ বৃদ্ধি করা হবে।
অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, ‘হিজড়া, দলিত, হরিজন ও বেদে জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কার্যক্রম সম্প্রসারণ, চা শ্রমিকদের আপৎকালীন খাদ্য সহায়তা এবং ক্যান্সার, কিডনি ও লিভার সিরোসিস আক্রান্ত গরিব রোগীদের আর্থিক সহায়তার বিষয়ে আমি আগেই মন্তব্য করেছি। দেখা যাচ্ছে যে, এদের জন্য এবারের বাজেটে দ্বিগুণ বরাদ্দ থাকবে।’