মোদির সফরে চমক থাকবে
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগামীকাল শনিবার দুদিনের সফরে বাংলাদেশে আসছেন। তাঁর এ সফর নিয়ে নানা আলোচনা চলছে সব মহলে। বিশ্লেষকরা বলছেন, মোদির এ সফর সাধারণ নয়; সফরে চমক থাকবে। তবে কেমন চমক, তা ধারণা করা কঠিন।
urgentPhoto
মোদি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের এক বছরের মধ্যে ভুটান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা সফর করেছেন। এমনকি তিনি বাংলাদেশ কাটিয়ে মিয়ানমারও সফর করেছেন। কিন্তু ঢাকায় আসেননি। বিশ্লেষকরা বলছেন, এক বছর সময় নেওয়ার মধ্যেই মোদির বাংলাদেশ সফরের বিশেষ কোনো চমক লুকিয়ে আছে। তিনি এখানে আসতে প্রস্তুতি নিয়েছেন।
মোদির সফর প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘প্রথম দুই-তিন মাসের মধ্যে যদি এই সফর হতো, তাহলে এটাকে শিক্ষাসফর হিসেবে অনেকেই বলত। সে হিসেবে গতানুগতিক হলে কেউ কিছু বলত না। কিন্তু যেহেতু এক বছর পরে আসছেন, স্বাভাবিকভাবে বোঝা যাচ্ছে যে অনেক হোমওয়ার্ক করার পরেই তিনি আসছেন। তাতে আমি মনে করি, এক ধরনের চমক থাকবে। সেটা কী হবে, কোন ক্ষেত্রে হবে, সেটা তিস্তা হবে কি না, আমি এখনো আশা ছাড়ছি না। আর অন্য কোনো বিষয় হবে কি না, বড় ধরনের বিনিয়োগ হবে কি না, সেটা বলা মুশকিল। তবে হয়তো চেষ্টা থাকবে একটা নতুনত্ব আনার। সে জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই।’
দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্র বিস্তৃত যে, এখানে সুযোগ কাজে লাগানোটাই মুখ্য উদ্দেশ্য হওয়া উচিত বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে ভারতের নতুন সহযোগিতার দ্বার উন্মোচন করতে হবে। ভারত একটি অত্যন্ত বড় এবং অত্যন্ত দ্রুত বেড়ে ওঠা অর্থনীতি। আপনি দেখেছেন, স্বাভাবিকভাবে দেশটির প্রবৃদ্ধির হার ৮-১০ শতাংশের মধ্যে ছিল। সম্প্রতি নরেন্দ্র মোদি চীন থেকে ২২ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের আশ্বাস নিয়ে এসেছেন। কাজেই আমাদের পক্ষে, এই যে বৈশ্বিক উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তি (ভারত), তাদের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক কীভাবে বাড়ানো যায়, সে ব্যাপারে প্রচেষ্টা নিতে হবে।’
বিশ্লেষক ও কূটনীতিকরা মনে করেন, নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশই চাইবে, নিজের স্বার্থ রক্ষা করে সহযোগিতার পথ প্রশস্ত করতে। আর সেটা করতে গেলে দুদেশের মানুষের মনোভাবের প্রতি যথেষ্ট নজর রেখেই করতে হবে।
মোয়াজ্জেম আলী বলেন, ‘আমাদের যে রাস্তাঘাট আছে, তা দিয়ে কোনো ছোট সাইজের ট্রাক দিয়ে পণ্য পরিবহন করা সম্ভব। ভারতের ২০ টনের ট্রাক আমাদের এই রাস্তা দিয়ে যেতেও পারবে না। কাজেই এখানে যে পরিমাণ বিনিয়োগ এবং যে পরিমাণ সময় লাগবে, তার চেয়ে অনেক কম খরচে রেল যোগাযোগটা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। কানেক্টিভিটি যেটা, সেটা ওয়ান ওয়ে স্ট্রিট না, এটা টু ওয়ে স্ট্রিট। আমাদের অবকাঠামো উন্নয়ন করতে হবে। বাংলাদেশের সঙ্গে ভুটান, নেপাল, উত্তর-পূর্ব ভারত ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে আমাদেরও যোগাযোগব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করতে হবে।’