অবাস্তব বাজেট বাস্তবায়ন দুঃসাধ্য : বিএনপি
২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটকে ‘অবাস্তব’ উল্লেখ করে এর বাস্তবায়ন ‘দুঃসাধ্য’ হবে বলে মনে করছে বিএনপি। দলটির আশঙ্কা, এ বাজেট বাস্তবায়নে বছর শেষে দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে।
urgentPhoto
আজ শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন এসব কথা বলেন।
বিএনপির মুখপাত্র বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে এই বাজেট এতটা অবাস্তব যে তা বাস্তবায়ন দুঃসাধ্য। অর্থমন্ত্রী প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জনে যে কথা বলেছেন, বাস্তবতা তা নয়। রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা বহাল থাকলেও, অবকাঠামোর দুর্গতি, গ্যাস-বিদ্যুতের অপর্যাপ্ততা-বিদেশি বিনিয়োগ কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছার কোনো কারণ নেই। জিডিপির মাত্র এক শতাংশ বৈদেশিক বিনিয়োগে প্রবৃদ্ধি অর্জন অলীক কল্পনা ছাড়া আর কিছুই নয়। এ ছাড়া সর্বগ্রাসী দুর্নীতি ও সুশাসনের অনুপস্থিতিতে প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি তো দূরে থাক, বর্তমান অবস্থাও ধরে রাখা কঠিন।’
‘বিএনপি শাসনামলে প্রবৃদ্ধি প্রায় ৭ শতাংশ থাকলেও এর পর থেকে সেটা ক্রমেই নিম্নগামী হয়েছে’ উল্লেখ করে বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক বলেন, বিশাল বাজেট কীভাবে বাস্তবায়ন করবেন তার কোনো সুস্পষ্ট ঘোষণা পাওয়া যায়নি। এই কথামালার বাজেটে সাধারণ মানুষ কী পেল বা পাবে সেটার বহিঃপ্রকাশ খুবই কমই ঘটেছে।’
বেসরকারি খাতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ নেই বললেই চলে। বিনিয়োগের জন্য দরকার দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, গণতান্ত্রিক পরিবেশ, সুশাসন, দুর্নীতি ও লুটপাটমুক্ত সরকারি প্রতিষ্ঠান-যার সবকিছুই দেশে আজ অনুপস্থিত বলে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়।
আসাদুজ্জামান বলেন, ‘দেশে বিনিয়োগ-শিল্পায়নের এই খরায় নেই কর্মসংস্থান, নিজের দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হাজার হাজার লোক অবৈধভাবে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে, সাগরে ভাসছে। বিদেশের মাটিতে বনে-জঙ্গলের গণকবরে এই দুর্ভাগা মানুষদের লাশ-কঙ্কাল আবিষ্কারের প্রতিদিনের খবরে জাতি হিসেবে আমাদের লজ্জা লুকানোর জায়গা নেই।’
ঘোষিত বাজেটে কৃষি খাতের কথা উল্লেখ করে বিএনপির সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দেশের জনগোষ্ঠীর পঞ্চাশ ভাগ এখনো কৃষিনির্ভর, অথচ সাম্প্রতিক সময়ে কৃষিতে ভর্তুকি কমছে যার সুদূরপ্রসারী প্রতিক্রিয়ায় খাদ্যনিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হতে পারে। তাই ঘোষিত বাজেটকে কোনোমতেই কৃষিবান্ধব বলা যাবে না।’
এ ছাড়া আজকের সংবাদ সম্মেলনে জ্বালানি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা খাত, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি, সামাজিক সুরক্ষা খাতে বাজেটের বরাদ্দ ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়।